জয় চন্দ্র নাগঃ শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকের অনলাইনকে কাজে লাগিয়ে সফল নারী উদ্যোক্তা বনে গেছেন চাঁদপুরের মেয়ে ইয়াসমিন সুলতানা। পেয়েছেন স্মার্ট নারী উদ্যোক্তা হিসেবে ২০২৩ সালে ইউএনডিপি ও আনন্দমেলায় আইসিটি গ্র্যান্ডের ৫০ হাজার টাকার পুরষ্কারও। এক মেয়ে ও দুই ছেলেসহ স্বামীর সংসার সামলিয়ে মাত্র ৩৫শ’ টাকার পুঁজি থেকে এখন তার পুঁজি লাখ টাকা।
১০ এপ্রিল বুধবার সন্ধ্যায় কালবেলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানিয়েছেন ইয়াসমিন সুলতানা।
পারিবারিক তথ্যানুযায়ী, ইয়াসমিন সুলতানার পৈত্রিক নিবাস হচ্ছে চাঁদপুর সদরের রামপুর ইউনিয়নের সকদী পাঁচ গাঁও গ্রামে। তার পিতা হচ্ছেন মো: আব্দুল কুদ্দুস মিয়া ও মাতা আয়েশা বেগম। আর তার স্বামী মো: মাসুমুর রহমান বিপুল হচ্ছেন শহরের পুরানবাজারের পূর্ব শ্রীরামদীর দোলন মাঝি বাড়ির বাসিন্দা। যিনি ঢাকাতে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কাজ করছেন।
ইয়াসমিন সুলতানা পরিবারের ৬ ভাই-বোনের মধ্যে পঞ্চম সন্তান। ২০০৯ সালে তিনি চাঁদপুর সদরের মৈশাদীর শাহতলী জিলানী চিশতি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। বিয়ের কারনে পড়াশুনা স্নাতক পর্যায়ে এসে থামলেও উদ্যোক্তা হবার পথ স্বামীর সহায়তায় সেখান হতেই শুরু।
ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, আমি স্বামীর দেয়া হাত খরছের টাকা জমিয়ে অনলাইনে দেশীয় পণ্যের ব্যবসা শুরু করি। প্রথমে কুমিল্লার বিখ্যাত মোমবাটিক পোশাক নিয়ে ২০১৯ সাল হতে কাজ শুরু করি। পরে ২০২০ সাল হতে ‘সঞ্চয়িতা’ নামে একটি ফেসবুক পেইজ খুলে ই-কমার্স ব্যবসায় সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখি। যার জন্য আমি নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন হতে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল কর্তৃক আয়োজিত অনলাইন ও অফলাইনের প্রশিক্ষণ নেই। আর এরপরই ধীরে ধীরে এই অনলাইনকে কাজে লাগিয়ে সফলতার ছোঁয়া পাই।
তিনি বলেন, বাটিক নিয়ে ব্যবসায় নেমে দীর্ঘ ৪ বছরে ক্রেতাদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। আমার প্রতিষ্ঠান সঞ্চয়িতার ট্যাগ লাইন হচ্ছে কোয়ালিটি ফার্স্ট। বর্তমানে বাহারি ডিজাইনের মেয়েদের থ্রি-পিস, ওয়ান পিস, ওড়না, হাতের কাজ করা শাড়ি, ব্লাউজ, বেডশিট আমার সঞ্চয়িতা পেজ থেকে লাইভে এসে প্রদর্শনী শুরু করছি। ক্রেতারা লাইভ দেখে নিজের পছন্দমতো পোশাকটি অর্ডার করে। প্রতি লাইভে অর্ডার করা পণ্য কুরিয়ারের মাধ্যমে পরবর্তীতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছাচ্ছি।
ইয়াসমিন সুলতানা আরও বলেন, স্বামীর সহযোগিতায় মাত্র ৩৫শ’ টাকায় শুরু করা ব্যবসা থেকে আমার এখন প্রায় ৫ লাখ টাকার পুঁজি হয়েছে তাও মাত্র ৪ বছরে। সঞ্চয়িতা ফেসবুক পেইজের পণ্য এখন দেশের ৬৪ জেলা ছাড়িয়ে এশিয়ার বিভিন্ন দেশসহ ইউরোপ আমেরিকার ১৬ টি দেশে এ পর্যন্ত পৌঁছেছে। সঞ্চয়িতার মোমবাটিক থেকে রেমিট্যান্স আসায় একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে আমার মনে সত্যিই আনন্দের জন্ম দেয়। আমি আমার এই ব্যবসার সফলতা ধরে রাখতে সবার দোয়া চাইছি।