স্টাফ রিপোর্টারঃ গ্রামীণ রাস্তাঘাটের উন্নয়নে সরকার বছর বছর তৎপরতা চালালেও কতিপয় সরকারি কর্তাব্যাক্তির হীনমন্যতা ও অনিয়মকে আশ্রয় পশ্রয় দেয়ার ঘটনা অহরহ ঘটছে। আর এবার এমন অনিয়ম ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে চাঁদপুর সদরের এক ঠিকাদার ও এলজিইডির কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
১৩ জুন মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর সদরের বালিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে গেলে স্থানীয় এলাকাবাসী গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে এমন অভিযোগ তুলেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে স্থানীয়রা জানায়, বালিয়া ঈদ গা ময়দান থেকে ব্রাহ্মণ সাখুয়া পর্যন্ত রাস্তাসহ গাইড ওয়াল নির্মাণ কাজ চলছে। আর একাজে রাস্তার পাশে গাইড ওয়াল নির্মাণে পুকুর চুরিময় দুর্ণীতি করা হচ্ছে। যা দেখেও কেউ দেখছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাদের ধারণা একাজে স্বয়ং এলজিইডির প্রকৌশলীই জড়িত! যেজন্য বরং বার ঠিকাদারদের গাফিলতির সঠিক তদন্ত ছাড়াই তারা বিল উত্তোলন করতে পারছেন।
এলাকার বৃদ্ধ মুক্তার হোসেন বলেন, আমাদের চোখের সামনে নিম্নমানের ইট দিয়ে গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। আবার এই গাইড ওয়াল নির্মাণে ছোট ছোট যে পিলার গুলা বসানো হয়েছে সেখানেও দেয়া হয়নি পর্যাপ্ত রড। এতে করে এই কাজ শুধু লোক দেখিয়ে আই ওয়াশের মাধ্যমে বিল উঠানো ছাড়া স্থানীয় এলাকাবাসীদের উন্নয়নে কোন কাজে আসবে না। এমনকি তারা এখানের পুকুরের পানি সেঁচে আমাদের পুকুরের অনেক টাকার মাছও মেরে ফেলেছে।
একই ক্ষোভ ঝাড়লেন স্থানীয় আরেক বৃদ্ধা মনু মিয়া। তিনি আক্ষেপ করেই বললেন, চৌদ্দ নাম্বার ইট দিয়া গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। যা ধরার আগেই ভেঙ্গে যাচ্ছে। আর এই অপকর্ম করে জনগণকে ধোঁকা দিয়ে সরকারি লক্ষ লক্ষ টাকা লুটপাটে মেতেছে ঠিকাদার আফজাল। যাকে এই কাজের ধারে কাছেও দেখা না গেলেও সহযোগী দেলোয়ার নামের আরেকজনকে দিয়ে তিনি এ কাজ করাচ্ছেন। আমরা বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকেও জানিয়েছি।
এই অভিযোগ প্রসঙ্গে দেলোয়ার নামের ওই ব্যাক্তি বলেছেন, প্রশাসন হতে শুরু করে সবাইকে পার্সেন্টিজ দিয়েই কাজ করছি। বহু সাংবাদিক পকেটে রাখি। মূল কথা হচ্ছে কাজ দেখানো এবং বিল উঠানো। আফজাল ভাই কাজের কাছে থাকবে কি না থাকবে এটা বিষয়না। উপর মহলে সব জানে।
যদিও ঠিকাদার আফজালকে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগের জন্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল্লা মাষ্টার বলেন, আমরা এই অপকর্মের সাথে জড়িত নই। ঠিকাদার স্থানীয় এলজিইডি প্রকৌশলীর আশ্রয় পশ্রয়ে এগুলো করছে কিনা জানিনা। আমরা এই ব্যপারে কিছুই জানিনা।
অভিযোগ প্রসঙ্গে চাঁদপুর সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী স্নেহাল রায় বলেন, কাজে ঠিকাদার যদি নিম্ন মানের ইট ব্যবহার করেন তাহলে ওই ইট সরিয়ে ফেলা হবে। এসময় তিনি এসব কাজের বরাদ্দ এবং তদারকি বিষয়গত তথ্যাদি দিতে অপরাগতাময় টালবাহানা দেখিয়ে তিনি মুঠোফোনে গণমাধ্যমকর্মীদের এড়িয়ে যান।
এদিকে স্থানীয়রা রাস্তার গাইড ওয়াল নির্মাণে আনা রাস্তার ওপর রাখা ইট উপর থেকে ফেললে ভেঙ্গে গুড়াগুড়া হচ্ছে দেখিয়ে তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ জানায় এবং ওই ঠিকাদার আফজালের লাইসেন্স বাতিলের আবেদন জানিয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে দুদকসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।