মনির হোসেন খানঃ এই দেশে যানজটের শহরের কোনো কমতি নেই। বড় বড় মেট্রো পলিটন শহর মানেই তো যানজটের শহর। তেমনিভাবে অধিকাংশ মফস্বল শহরও যানজটের শহর হিসেবে সুপরিচিত।
তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের এই দৈর্ঘ্যে তিন কিলো মিটার আর প্রস্হে এক কিলোমিটারের মুল শহর চাঁদপুরও যানজটের শহর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে বহু আগেই।
এই ছোট্র মফস্বল শহরটা দেখতে দেখতে কেনো, কিভাবে, কেমন করে যান জটের শহরে পরিনত হলো, তা বিজ্ঞ সমাজ বিজ্ঞানী, রাজনৈতিক বোদ্ধা, সুশীল সমাজ তথা সংশ্লীষ্ট কর্তৃপক্ষরা অবশ্যই অবগত আছেন। এ শহরের সকল গুরুত্বপুর্ন পয়েন্টেই এখন এ যানজট চোঁখে পড়ে।
এ শহরের বাসিন্দাদের অনেকেই এখন ঢাকার যানজটের সাথে এ শহরের যানজটের তুলনা করেন। অফিস পাড়ার অনেকেই আছেন যারা এখন দশ বিশ মিনিট আগেই গন্তব্যে রওয়ানা করেন। ছোট খাঁটো যানবাহনে করে যাতায়াত করা অনেক যাত্রীকেই কালি বাড়ির,কলেজ রোডের জ্যামে পড়ে বলতে শোনা যায় যে, এতো দেখছি ঢাকার জ্যামের মতোই আটকা পড়ে গেলাম।
চাঁদপুর নতুন বাজার পুরান বাজার ব্রীজের উত্তর পুর্ব অংশটি একটি অতিব গুরুত্বপুর্ন পয়েন্ট। এইখানে একই জায়গায় দু দুটো যানবাহনের ষ্ট্যান্ড অবস্হিত। একটি সি,এন,জির অপরটি অটোরিক্সার। এই ষ্ট্যান্ড থেকেই যাত্রীরা সি,এন,জিতে করে হরিনা ফেরিঘাট, চান্দ্রা চৌরাস্তা, আলগি, হাইমচর যাতায়াত করেন। আর অটো রিক্সাতে করে যাত্রীরা পুরান বাজার, রঘুনাথপুর, মেইল গেট,দোকানঘর, বহরিয়া বাজার যাতায়াত করেন।
ঢাকা থেকে বাড়ীতে ফেরা আলগি হাইমচরের যাত্রীরাও এ পথেই যাতায়াত করেন। এই ষ্ট্যান্ডে যাত্রী হয়রানির অনেক অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব যাত্রীদের অনেকেই অভিযোগ করে বলেন যে, এখানে অনেক চালক আছেন যারা যাত্রীদের সাথে থাকা ব্যাগ বা জিনিষপত্র নিয়ে টানা হেচড়া করে এক প্রকার জোড় করে তাদের গাড়ীতে উঠতে বাধ্য করেন।
এমনকি অধিক ভাড়াও আদায় করেন তারা। এই ব্রীজের উত্তরাংশে চাঁদপুরের সর্ব বৃহৎ মাছ, মুদি, ও কাঁচা মালের আড়ৎ অবস্হিত। দক্ষিনাংশে সদর পোষ্ট অফিস, সদর থানা, সদর হাসপাতাল, সিভিল সার্জন কার্যালয় সহ অনেক গুরুত্বপুর্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান অবস্হিত। এতোগুলো গুরুত্বপুর্ন সরকারি স্হাপনা যেখানে, সেখানে নেই কোনো পর্যাপ্ত ট্রাফিক ব্যবস্হা।
যার কারনে এ চৌরাস্তায় সব সব সময়ই যানজট লেগেই থাকে। সব চেয়ে অবাক করা বিষয় হলো যে, পাল বাজারের সন্মুখে যে আরেকটি সড়ক আছে, যার উপর দিয়ে ষ্ট্র্যান্ড রোড, দশ নাম্বার ঘাট, পাঁচ নাম্বার ঘাটের মানুষ বা যানবাহন যাতায়াত করে, তা এসব অটো রিক্সা চালকরা বেমালুম ভুলে বসে আছেন।
আর তাইতো তারা সব সময় সে সড়কের মাঝ বরাবর অটো নিয়ে বসে থাকেন। ফলে সে সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারি সকল মানুষ এবং যানবাহনকে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। এই সড়কটি যেনো ট্রাফিক আইনের মধ্যেই পড়েনা। এতো বড় একটা গুরুত্বপুর্ন সড়ক মোড়ে নেই কোনো পর্যাপ্ত ট্রাফিক ব্যবস্হা।
কখনো কখনো এ মোড়ে একজন ট্রাফিক পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। আর এতো বড় ট্রাফিক সামলাতে নিঃসন্দেহে তাঁকে অত্যন্ত হিমশিম খেতে হয়। স্হানীয় সরকার তথা সংশ্লীষ্ট কর্তৃপক্ষের ভেবে দেখা উচিৎ যে, শহরের এমন যানজট নিরসনে কোনো সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে উপনিত হওয়া যায় কিনা? আর ভুক্তভোগী শহর বাসির অভিমত যে, তাদেরকে বর্তমান পৌর পরিষদই পারে এ অসহনীয় যানজটের কবল থেকে মুক্তি দিতে। তাদের এ দাবি নেহাত অযৌক্তিক নয়।
কারন একজন সুযোগ্য, জ্ঞানি ও বিচক্ষন পৌর পিতার হাতেই তারা তাদের পৌর নাগরিক অধিকারের ভার ন্যাস্ত করেছেন। তাছাড়া এক ঝাঁক সুযোগ্য ও মেধাবি মুখের সমন্বয়ে গঠিত বর্তমান পৌর পরিষদ। সুতরাং তাদের কাছে পৌর নাগরিকদের যানজট মুক্ত শহর চাওয়ার এমন দাবি মোটেও অমুলক নয়।