স্টাফ রিপোর্টারঃ জমি খারিজের নামে বাগাদী ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে দুর্ণীতির আঁতুরঘর বানিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর আলমের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, নিজেকে জাহির করতে প্রায়ই তিনি গণমাধ্যমকর্মীসহ সেবাপ্রার্থীদের সাথে অসদাচরণ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, টাকা ছাড়া কোন ফাইলে সই করতে চান না এই আলমগীর আলম। সাম্প্রতি সময়েও সেবাপ্রার্থীদের থেকে কৌশলে প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা হাতিয়ে নিলে তার দুর্ণীতির খবর সবার দৃষ্টিগোচর হয়।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, বাগাদী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুর রব গাজী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে জমি খারিজের জন্য গেলে তিনি তার অফিস সহকারী সেলিমকে ওই সেবাপ্রার্থীর থেকে ২০ হাজার টাকা দাবী করান। পরে নিরুপায় হয়ে ওই ভুক্তভোগী সেবাপ্রার্থী রব গাজী সেলিমের চাপে ১২ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হয়। একই ভাবে এই ইউনিয়নের আরেক বাসিন্দা ইসমাইল মজুমদারের কাছ থেকেও জমি খারিজ বাবদ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর আলম। যেখানে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ১১৭০ টাকা করে ২ জনের কাছ থেকে মাত্র ২ হাজার ৩শ’ ৪০ টাকা তিনি ফি বাবদ নিতে পারতেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণমাধ্যমকর্মীরা বলেন, এই আলমগীর আলম অত্যন্ত চতুর। তিনি প্রায়ই গণমাধ্যমকর্মীদের উচ্চবাচ্য করে বলেন, জার্নালিজম পাশ ছাড়া কেউ সাংবাদিক পরিচয়ে আসলে আমি তাকে ঘার ধরে বের করে দেই। সাংবাদিকতা করতে হলে আগে জার্নালিজম পাশ করতে হবে। আর দুর্ণীতি করে থাকলে তা দেখার অথরিটি আমার উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা রয়েছে। আমি জমি জমা খারিজের কোন তথ্য সাংবাদিকদের দিতে বাধ্য নই।
এসব তথ্য গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়ে আব্দুর রব গাজী বলেন, আমি প্রায় ৫ মাস আগে জমি খারিজের জন্য বাগাদী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যাই। সেখানে অফিস সহকারী সেলিম আমার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবী করে। তখন আমি বিষয়টি ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর সাহেবকে জানাই। কিন্তু তিনিসহ পরে আমাকে বাধ্য করে ১২ হাজার টাকা নেওয়ার মধ্য দিয়ে দুর্ণীতি সচল রাখেন।
অথচ বাগাদী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঢুকতেই অফিসের প্রবেশ মুখে বড় করে লেখা- এই অফিস দূর্নীতি মুক্ত। পাশাপাশি জমি খারিজসহ অন্যান্য কাজে সরকারি যে ফিস রয়েছে তার তালিকাও সাঁটানো রয়েছে।
দুর্ণীতি প্রসঙ্গে বাগাদী ইউনিয়ন ভূমি অফিস সহকারী সেলিম বলেন, আমি রব গাজীর কাছ থেকে ১০ টাকা নিয়েছি এটি সত্য। এখন উনি যদি চায় তাহলে আমি টাকাটা আমার কাছ থেকে হলেও দিয়ে দিবো। তবে ওই টাকা আমি আমার জন্য নেই না। সাথে সাথে এই টাকা ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর সাহেবকে বুঝিয়ে দিতে হয়। আমাদের অফিসের মেয়েটার সামনে উনাকে টাকাটা দিয়ে দিছি। ইসমাইল মজুমদারের কাছ থেকে যে টাকা নিছি সেটাও আমি ওনাকে বুঝিয়ে দিয়েছি। সব অফিসের খাতায় লেখা আছে।
এদিকে দূর্ণীতিসহ এমন বিস্তর অভিযোগ প্রসঙ্গে বাগাদী ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর আলম বলেন, আমি এই বিষয়ে কিছুই জানিনা। এই বিষয়টি আমার স্টাফ সেলিম ডিল করে। এরপর তিনি এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।
এমন অভিযোগ চাঁদপুর সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন চৌধুরী কে অবহিত করলে তিনি বলেন, যাদের কাছ থেকে টাকা নিছে তারা অভিযোগ করলে আমরা এটি আমলে নিবো। আমি এখন এর বেশি কিছুই বলতে পারবো না।