অমরেশ দত্ত জয়ঃ দুই দফা ইঞ্জিন বন্ধের পর অবশেষে ভোর ৫ টার চাঁদপুর চট্টগ্রাম রেলপথের আন্তনগর মেঘনা এক্সপ্রেসটি সকাল সোয়া ৭টায় চাঁদপুর রেলওয়ে কোর্ট ষ্টেশন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দ্যেশ্যে ছেড়েছে। তবে নড়বড়ে ইঞ্জিন মাঝপথে আবারো কোন সমস্যায় পড়বে কিনা এমন সমীকরণে নিরাপদ যাত্রা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন যাত্রীরা।
১১ জুলাই মঙ্গলবার ভোরে এই দূর্ভোগের স্বীকার হয়েছে এই রেলগাড়ীর কয়েক’শ যাত্রী।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ট্রেন ছাড়ার প্রাক্কালে এর সহকারী লোকমটিভ মাষ্টার সাইদ মোঃ তাহের দেখলেন ২৯২৪ ইঞ্জিনটি অত্যাধিক গরম হয়ে গেছে। তিনি ওই ইঞ্জিন ঠান্ডা করতে পানির পাইপের নজেল খুলে দেন পানি উপরে উঠার জন্য। দুর্ভাগ্যবশত সেই পানি ইঞ্জিনের সাথে গরম হয়ে তার মুখ, বুক ও শরীরে পড়লে তার শরীর গরম পানিতে ঝলসে যায়। পরে তাকে ধরাধরি করে সদর হাসপতালে নেয়া হলে অবস্থা আশঙ্কা জনক দেখে চিকিৎসক তাকে দ্রুত কুমিল্লা পাঠিয়ে দেন।
আহত ট্রেন চালকের বড় বোন নিলুফা আক্তার ও ভগ্নিপতি মোঃ রুহুল আমিন বলেন, আমাদের ভাইয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাই তাকে বাঁচাতে সকলের দোয়া চাই।
মেঘনা ট্রেনের কুকার শাহজাহান বলেন, এই গরম পানি ছিটকে পড়ার জন্য ট্রেন চালক নিজেরই গাফিলতি রয়েছে। ওনার ভুলের জন্য সবাইকে এখন বিপদ সামলাতে হচ্ছে।
চাঁদপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম সুমন বলেন, রোগীর আগে থেকেই হার্ট ও শ্বাসকষ্টে সমস্যা ছিলো। এরমধ্যে তার শরীর ঝলসে যাওয়ায় আমরা তাকে কুমিল্লা রেফার করেছি।
এদিকে ভোগান্তিতে পড়া যাত্রীরা বলছেন, আমরা অনেকেই লাকসাম গিয়ে অন্য রুটের ট্রেনে ঢাকা যাবো।সেই জন্য অগ্রীম টিকেটও কিনেছিলাম। এখন এদের গাফিলতিতে আমাদের টাকা ও সময় দু’টোই জলে গেলো। এখন নিরাপদভাবে এই ট্রেনে করে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবো কিনা শঙ্কায় আছি।
চাঁদপুর রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত ষ্টেশন মাষ্টার সোয়াইবুল সিকদার বলেন, ট্রেন চালক নিজ উদ্যোগে পানি ঢালতে গিয়ে ক্ষতির সম্মুখিন হলেন। ইঞ্জিন ত্রুটি হওয়ায় আমরা নতুন ইঞ্জিন আনতে চেয়েছিলাম। পরে সেটি হাজীগঞ্জে আসলে সোয়া ৬টায় আগের ইঞ্জিন চালু হওয়ায় তা দিয়েই ট্রেনটি রওনা হয়। পরে চাঁদপুর কোর্ট ষ্টেশনে গেলে সেটি পুনরায় বন্ধ হয়ে গেলে আবারো নতুন করে ২৯১৬ ইঞ্জিনটি আনতে হয়েছে। যার কারনে ৫টার ট্রেন সোয়া ৭টায় প্রায় সোয়া দুই ঘন্টা বিলম্বে ছাড়তে হলো। আশা করি এখন কোনরূপ শঙ্কা ছাড়াই যাত্রীরা চট্টগ্রাম পৌঁছাতে পারবেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর রেলওয়ে থানার ওসি মুরাদুল্ল্যাহ বাহার বলেন, খবর পেয়েই আমি সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। যাত্রীদের মালামালসহ নিরাপত্তা দিতে আমরা তৎপর রয়েছি।