আবদুল কাদিরঃ চাঁদপুর-৪ ফরিদগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ শফিকুর রহমান টেলিভিশন লাইভ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকার, সরকারে উন্নয়ন, নির্বাচন ব্যবস্থা, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, প্রশাসন এবং চাঁদপুর ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপনের প্রতিবাদে উপজেলা আওয়ামীলীগ প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ওই বক্তব্যকে প্রত্যাখান করেছেন।
শনিবার(২০মে) বেলা ১১টায় এই বিষয়ে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছিল দলটি। কিন্তু উব্ধুদ্ধ পরিস্থিতি ও প্রশাসনের অনুরাধে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি এড়াতে তারা সংবাদ সম্মেলনের পরিবর্তে একই দিন বিকালে প্রেসবিজ্ঞপ্তি প্রদান করেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী ও সাধারন সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার সাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন, নির্বাচনের পর তিনি সাংগঠনিক কাঠামোকে বাইরে রেখে নিজেই প্রতিটি ইউনিয়নে একাধিক প্রতিনিধি সৃষ্টিকরে নিজের কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেনন।
ওনার এসকল প্রতিনিধিরা টি আর, কাবিখা, কাবিটা, গভীর নলকূপ স্থাপনে ২৫/৩০ হাজার টাকা,বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতা, ভিজিডি কার্ড, টিসিবি কার্ড এবং রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ হতে শতকরা ৩০ ভাগ ব্যাক্তিগত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে নিয়ে অর্থের বিনিময়ে প্রদান করেন।
প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স দেখাবেন এমন স্বপ্ন দেখিয়ে,নির্বাচিত হওয়ার পর মাদকাসক্ত, মাদক ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি বানিয়ে উনার(তার) রাজনীতি পরিচালনা করেছেন।
এখন মাদকাসক্ত ব্যাক্তিদের জনপ্রিয় বলে তিনি তৃপ্তির ঢেঁকুর তুললেও জনগনের কাছে তা হাস্যকর বলে প্রতিয়মান।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার জানান, টিভির লাইভ অনুষ্ঠানে এমপি মহোদয় সরকার, নির্বাচন ব্যবস্থা এবং দল নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। আমাদের কাছে মনে হয়েছে তিনি বিএনপির সুরে কথা বলে সরকার, নির্বাচন ব্যবস্থা এবং আওয়ামীলীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। তাই আমাদের প্রতিবাদ কর্মসূচী হিসেবে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করলেও তারা পাল্টা কর্মসূচী দেয়। পরে আমরা শান্তির লক্ষ্যে প্রেসবিজ্ঞপ্তি দিয়ে আমাদের কথা জানিয়েছি।
আশা করছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন। অন্যদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবীতে সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান সমর্থিত আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
দুপুরে তৃণমুল আওয়ামীলীগের ব্যানারে এমপি মনোনীত প্রতিনিধিরা, ইউপি চেয়ারম্যান, আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ এই মিছিল সমাবেশে অংশ নেয়।
এসময় বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগ নেতা জি এম হাচান তাবাচ্চুম, জাহাঙ্গীর আলম, রফিকুল ইসলাম, ইসমাইল পাটওয়ারী, ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ থান, আলাউদ্দিন ভূঁইয়া, নজরুল ইসলাম সুমন, পতুল সরকার, যুবলীগের যুগ্মআহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন ও আল-আমিন পাটওয়ারী।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সংবাদ সম্মেলন এবং পাশেই তৃণমূল আওয়ামীলীগের ব্যানারে এমপি সমর্থিত লোকজনের বিক্ষোভ মিছিলের কারণে উপজেলা সদরে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রেসক্লাব এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন এবং নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৬টা) পুলিশী উপস্থিতি ছিল। অন্যদিকে আওয়ামীলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীদের যুবলীগের অফিসে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
এব্যাপারে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক হেলাল উদ্দিন বলেন, বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি মেয়াদ উত্তীর্ণ। তাই আমরা অনতিবিলম্বে কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবীতে আমাদের এই আন্দোলন। আমরা আমাদের দাবী পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে। আমি দাবীর বিষয়ে এমপি মুহম্মদ শফিকুর রহমান অবগত রয়েছেন।