... বিস্তারিত
কচুয়ায় নলুয়া গ্রামের সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ
রাজীব চন্দ্র শীলঃ
কচুয়া উপজেলার ৯নং ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামের সংখ্যালঘু কন্যা রানী সরকার ও তার পরিবারের উপর হামলা চালিয়েছে আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৩৫ জনের একটি দল।
আহত কন্যা রানী সরকার বলেন,আমার স্বামী প্রতিবেশী আবু তাহেরের নিকট প্রায় ৯মাস আগে ৬টাকা ফুটে ১১,৫০০ ফুট মাটি বিক্রয় করেন ৬৯হাজার টাকায়।এর ভিতর ১৮হাজার টাকা নগদ পরিশোধ করেন বাকী ৫১ হাজার টাকা ধীরে ধীরে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
গত ৩১ই ডিসেম্বর আবু তাহের মারা গেলে সেই দিন আমার স্বামী তাদের বাড়িতে গিয়ে পাওনা টাকার বিষয়ে অবহিত করেন।তখন আবু তাহেরের ছেলে টিপু মিয়াজী বলেন এতো টাকা পাওয়ার কথা না।এখনতো আব্বার লাশ দাফন করবো ঋণ থাকলে লাশ দাফন করা যাবে না।আপনি একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করে যান,যে লাশ দাফনে আপনার কোন আপত্তি নেই পরে এই বিষয়ে আমরা কথা বলবো।
টিপু মিয়াজীর কথামতো নিরাপদ সরকার সাদা কাগজে স্বাক্ষর করে চলে আসেন।লাশ দাফনের পরের দিনই টিপু মিয়াজী লোক মারফতে বলাবলি করছে,নিরাপদ সরকার শুধু ৭হাজার টাকা পাবে।এই নিয়ে টিপু মিয়াজী নিরাপদ সরকারের নামে গত ২ই জানুয়ারি তার নিজ বাড়িতে সালিশ ডাকেন।
সালিশ ডাকার ২ঘন্টা আগে নিরাপদ সরকারকে মোবাইলে কল করে সালিশে আসতে বলেন।তখন নিরাপদ সরকার বলেন, আপনি বলছেন আমি ৭হাজার টাকা পাবো কিন্তু আমিতো ৫১হাজার টাকা পাবো।এর জন্য আমার কিছু স্বাক্ষী রয়েছে তাদের সাথে নিয়ে আপনার বাড়িতে যাবো আপনি হঠাৎ সালিশ ডাকলেন এখন স্বাক্ষীরাতো আসবে না।
অন্য আরেকদিন সালিশ ডাকুন আমি স্বাক্ষীদের নিয়ে আপনার বাড়িতে যাবো এই কথা বলে নিরাপদ সরকার লাইন কেটে দেন।ঐ দিনই রাত ৮টার দিকে টিপু মিয়াজীর নেতৃত্বে আনোয়ার হোসেন,জসিম ও বিল্লাল হোসেন সহ চারজনের একটি দল নিরাপদ সরকারের ঘরে ঢুকে তাকে খোঁজতে থাকেন।তখন নিরাপদ সরকারের স্ত্রী বলেন উনি বাড়িতে নেই।আপনারা রাতে কেন বাড়িতে আসছেন?তখন টিপু মিয়াজী বলেন মালাউনের বাচ্চার কত বড় সাহস আমি সালিশে ডেকেছি সে আসেনি, কুত্তার বাচ্চাকে আজকে পেলে হাত পা ভেঙ্গে দেবো বলে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তখন ঘরে থাকা নিরাপদ সরকারের ছেলে জীবন সরকার বলেন আপনারা এইভাবে কথা বলছেন কেনো?আমাদের ঘরে এসে আমাদেরকে গালিগালাজ করছেন।এই কথা বলার সাথে সাথে টিপু মিয়াজী জীবনের গালে থাপ্পড় মারেন।টিপু মিয়াজীর সাথে থাকা আনোয়ার হোসেন ও জসিম জীবনের উপর হামলা চালান সাথে থাকা বিল্লাল হোসেন তাদেরকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।এক পর্যায়ে সেখানে ধস্তাধস্তি শুরু হলে জীবনের মা জীবনকে বাচানোর জন্য এগিয়ে আসেন এবং ডাক চিৎকার শুরু করেন।তখন টিপু মিয়াজীর আগে থেকে ঠিক করা ৩০-৩৫জনের একটি দল লাঠি সোটা নিয়ে নিরাপদ সরকারের বাড়িতে আসেন।জীবন সরকার কোনমতে সেখান থেকে পালিয়ে যান।জীবন সরকারের মাকে টিপু মিয়াজী ও তার দলবল বাড়ির উঠানে নিয়ে লাথি থাপ্পড় চর ঘুষি মারতে থাকেন এক পর্যায়ে মাটিতে আচার মেরে পা দিয়ে লাথি মারতে থাকেন।বাড়িতে থাকা অন্যান্য হিন্দুরা ছুটে আসলে তাদেরকেও চর থাপ্পড় মারতে থাকেন।এতে বিউটি রানী,মিলনী রানী,রাজীব সরকার,সবিতা রানী ও বীরেন্দ্র সরকারসহ অনেকে আহত হোন।এই দিক দিয়ে বাড়ির কেউ একজন ৯৯৯ এ কল করলে পুলিশ আসার উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত কচুয়া থানার সাব ইন্সপেক্টর হাবীব আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন,হামলাকারীরা কন্যা রানীকে প্রচুর মারধর করেছে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়েছি এবং ভিকটিমদেরকে বলেছি থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিতে।লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।