কচুয়া প্রতিনিধিঃ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আহত কৃষ্ণা পাটিকরের অভাব অনটনের খোঁজ নেয়নি কেউ। যদিও তার শরীরের স্প্লিন্টার বিদ্ধ হওয়ার দাগ এখনও মুছেনি। বিগত ১৮ বছর ধরে এ যন্ত্রণা সঙ্গে নিয়ে এখনো তার ঘুমের ঘরে ভেসে বেড়ায় ২১ আগস্টের ভয়াবহ ঘটনার চিত্র।
সোমবার এক সাক্ষাৎকারে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এসব কথা এই প্রতিবেদককে বলেন কৃষ্ণা পাটিকর।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, গ্রেনেড হামলায় আহত এই কৃষ্ণা পাটিকর কচুয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের গ্রামের পাটিকর বাড়ির সন্তান। তিনি এখন কচুয়া বিশ্বরোড এলাকায় তার একমাত্র পুত্র অসীম পাটিকরের জয়গুরু ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপে বসে সময় কাটান। ওখান থেকে ছেলের যা আয় হয় তা দিয়েই সংসার চালিয়ে তাঁর উন্নত চিকিৎসা সেবা করতে হচ্ছে।
কৃষ্ণা পাটিকর বলেন, বোমার বিকট শব্দ শুনার পর দেখি আমাদের নেতা ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ঘোরপাক করতেছে। মনে হচ্ছে তিনি কোন দিক দিয়ে বের হবেন সেই পথ খুঁজে পাচ্ছেন না। তখন আমার শরীর দিয়ে রক্ত ঝড়ছে। নিজের চিন্তা না করে স্যারকে বাঁচানোর জন্য পরক্ষণেই দেখলাম একটি ভ্যান গাড়ি পাশ দিয়ে যাচ্ছে। সাথে সাথেই আমি ভ্যান গাড়িটি থাবা দিয়ে ধরে ভ্যান ড্রাইভারকে বললাম, আমার নেতাকে বাঁচাও। তখন ভ্যান ড্রাইভার সহ আমার নেতাকে ভ্যান গাড়িতে তুলে দিয়ে পান্থপথের দিকে পাঠিয়ে দেই।
তিনি আরও বলেন, ঐ সময়ে মুমুর্ষ অবস্থায় কচুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আহসান হাবীব প্রানজল ডাক্তারদের ডেকে এনে আমার পায়ের এবং মাঝার থেকে স্প্লিন্টার বের করে। প্রানজল যদি ওই সময় আমার চিকিৎসার দায়িত্ব না নিত তাহলে আমি মনে হয় বেঁচে ফিরতে পারতাম না। তার দায় আমি কখনো দিতে পারবো না।
কৃষ্ণা পাটিকরের পুত্র অসীম পাটিকর বলেন, ২১ আগস্টে ঐ বর্বরোচিত হামলায় যারা নিহত এবং আহত হয়েছেন তাদের পাশে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দলীয় নেতাকর্মীর নিকট আমি আকুল আবেদন জানাচ্ছি। ২১শে আগস্টের পর এক এক করে আমার বাবা কৃষ্ণা পাটিকরের জীবন থেকে ১৮ টি বছর কেটে যাচ্ছে। অথচ আজও রাষ্ট্রের পক্ষে কিংবা দলীয় ভাবে তার খোঁজ-খবর নেওয়া বা কোন প্রকার সহায়তা প্রদান করা হয়নি।
এ বিষয়ে কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইয়ুব আলী পাটওয়ারী বলেন, কৃষ্ণা পাটিকর একজন ত্যাগী তৃনমূল কর্মী। আওয়ামী লীগের যেখানে সভা সমাবেশ হয় সেখানে তিনি ছুটে যান। ২১শে আগস্টে হামলায় আহত কৃষ্ণা পাটিকর বর্তমানে কষ্টে দিন কাটছে শুনেছি। দলীয় ভাবে তাঁকে কিভাবে সার্বিক সহযোগিতা করা যায় তা ভেবে দেখবো।