অমরেশ দত্ত জয়ঃ চাঁদপুরে সড়কপথ, রেলপথ ও নৌপথে যোগাযোগের সু-ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে গ্রামীণ পরিবেশ ও ঘণবসতি এলাকাতে রমরমা মাদক ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে। এসব মাদক কুমিল্লা সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সড়ক পথে, চট্টগ্রাম থেকে রেলপথে এবং রাজধানী ঢাকা, বরিশাল, শরিয়তপুর থেকে নৌপথে চাঁদপুরে ঢুকানো হচ্ছে। আর এসব মাদকের মধ্যে ইয়াবা, গাঁজা, ফেন্সিডিলের রমরমা বাণিজ্য জেলায় প্রকাশ্যে এলেও নীরবভাবে অবস্থান নিচ্ছে ভয়াবহ মাদক আইস।
৮ মার্চ মঙ্গলবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ এমদাদুল ইসলাম মিঠুনের সাথে এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য উঠে আসে।
তবে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, কোষ্টগার্ড, র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরের পাশাপাশি জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পদে মোঃ এমদাদুল ইসলাম মিঠুন যোগ দিয়ে অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী কাদির কে ২২০ পিস ইয়াবা, মোঃ ওমর ফারুক কে ২০০ পিস ইয়াবা, সাজেদা বেগমকে গাঁজা ও নগদ অর্থ, মোঃ রাকিব হাসানকে ২১ পিস ইয়াবা, মোঃ সেলিম শিকদারকে গাঁজা, মোঃ কাইয়ুবকে ২০ পিস ইয়াবা, মাসুুুদ খলিফাকে ১২ বোতল ফেন্সিডিলসহ আরো অনেক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই গ্রামীণ ও ঘণবসতি এলাকার মাদক ব্যবসায়ী। তারা দিনের আলোতে নানাকাজে ব্যস্ত থাকলেও রাত হতেই নিরব পরিবেশে মাদক সেবন ও বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করেন।
এছাড়াও তিনি বাগাদী গণি উচ্চ বিদ্যালয়ে মাদক বিরোধী সমাবেশ, বিভিন্ন জাতীয় দিবসে অংশ নেয়া ও করোনাকালীন সময়ে করোনা সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ কাজের মধ্য দিয়ে অর্পিত দায়িত্ব পালন করছেন।
সূত্র মতে, গেলো ২০২১ সালে জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই দপ্তরটি মোট ১ হাজার ৮টি অভিযান, ১শ’ ৬২টি মামলা,১শ’ ৭৮ জন আসামী গ্রেফতার, ২১ হাজার ৬’শ ৯৬ পিস ইয়াবা, ২৭ কেজি ৪শ’ ৩৪ গ্রাম গাঁজা, ১৮ বোতল ফেন্সিডিল, ৪ ক্যান বিয়ার, ৪০ লিটার চোলাই মদ, ৬৫ হাজার ৪০ টাকা নগদ অর্থ, ১টি মোবাইল জব্দ করেছে। জব্দকৃত এই সব মাদক পণ্যের দাম আনুমানিক ১ কোটি ২০ লক্ষ ৩ হাজার ৩শ’ ৬০ টাকা। এছাড়াও তারা ৮৮টি গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, পুরাতন মাদক ব্যবসায়ীরাই সাজা খেটে বের হয়ে নতুন করে মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেট গড়ে তুলছে। তারা মাদক ব্যবসার নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নিচ্ছে গ্রামীণ পরিবেশ ও ঘণবসতি এলাকা। আর তাদের এই ব্যবসায় প্রশাসনকে নজরদারিতে রাখতে ব্যবহার হচ্ছে অসহায় পরিবারের ছোট ছোট কিশোর বয়সী ছেলে এবং বয়স্ক নারীরা।
অনুসন্ধানের তথ্য সঠিক মন্তব্য করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ এমদাদুল ইসলাম মিঠুন বলেন, আমরা নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও মাদক নিমূলে কাজ করে যাচ্ছি। গণসচেতনতা মূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে মাদকের কুফল সমাজকে জানানোর চেষ্টা করছি। মাদক ব্যবসায়ীর পুরো নেটওয়ার্ক আমাদের নজরদারিতে এনে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।