অমরেশ দত্ত জয়ঃ চাঁদপুরের ৫২ হাজার জেলেরা উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে হাইমচর হতে মতলব উত্তরের ষাটনলের ৭০ কি. মি. নৌ পথ এলাকায় জাল ফেলে কাঙ্খিত বড় ইলিশ না পেয়ে হতাশ হয়েই নদী কিনারায় ফিরছেন। গেলো দুই মাস নিষেধাজ্ঞা শেষে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা শুরু হলেও তাই জেলেদের মুখেও হাসি নেই।
৬ মে শুক্রবার দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ইলিশের মাছঘাট চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছ ঘাটের প্রধান ইলিশের আড়তগুলোতে তেমন কোন ইলিশের দেখা মিলেনি।
কাদির নামের জেলে জানায়, নদীতে গিয়ে যে টাকার তেল বোটে ব্যবহার করতে হয়। সে টাকার ইলিশ মাছ পাচ্ছি না। আর যা পাই তার সাইজও অনেক ছোট।

সরজমিনে দেখা যায়, ইলিশসহ অন্যান্য মাছের আমদানি কম থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন মৎস বনিক সমিতির মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তবে স্বল্পসংখ্যক ইলিশ আমদানি হলেও দাম অনেক বেশি। অতছ বিগত বছরে এই সময়ে অনেকটাই সরগরম ছিলো মাছঘাট। তবে এবার ইলিশের আড়তগুলোতে এখন চলছে অনেকটা সুনসান নীরবতা।
সরজমিনে আরও দেখা যায়, বড় স্টেশন মাছঘাটের পন্টুনে কোনো মাছের ট্রলার নেই। শ্রমিকদের সংখ্যাও খুব কম। মাত্র কয়েকটি আড়তে বসে আছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী ও কর্মচারী। আবার কয়েকটি আড়তের সামনে সামান্য সংখ্যক ইলিশ বরফ দিয়ে বিক্রির জন্য বসে আছেন ব্যবসায়ীরা। তবে দাম অস্বাভাবিক। অন্যান্য প্রজাতির মাছের আমদানি না থাকায় ঘাটে তেমন কোনো খুচরা ব্যবসায়ীর খুব একটা দেখা মেলেনি।
এ বিষয়ে মেসার্স তাজু ভূঁইয়া আড়তের ব্যবসায়ী দিদার হোসাইন বলেন, ইলিশের আমদানি কম থাকায় ঘাটে বড় সাইজের ইলিশ বলতে এখন ওজনে দুই থেকে আড়াই কেজি। যেগুলোর প্রতি কেজির মূল্য ২৫০০ টাকা। তবে পরিমাণে তেমন একটা বেশি বড় ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে বিভিন্ন আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইলিশের আমদানি খুবই কম। গত তিন দিন নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও শরিয়তপুর থেকে ট্রাকে করে আনা এবং চাঁদপুরের লোকালসহ সবগুলো আড়ত মিলিয়ে ১৫-২০ মণ করে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। দাম অনেক বেশি। ১ কেজি ২শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০ হাজার টাকা মণ। ৮শ’ থেকে ৯শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ মণ প্রতি ৭০ হাজার টাকা, ৫শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ৪০ হাজার টাকা এবং আড়াই’শ থেকে ৪শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ২৪ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সভাপতি রোটারিয়ান আবদুল বারী জমাদার মানিক বলেন, এখন ইলিশের মৌসুম না। যার কারণে খুব একটা ইলিশ নেই আর বড় ইলিশ ত মোটেও নেই। সামনের মৌসুমে আশা করছি জেলেরা ইলিশ পাবেন। তখন আমদানিও বাড়বে। আমাদের লোকাল পদ্মা-মেঘনা নদীর খুব কম সংখ্যক ইলিশ আমদানি হচ্ছে।