মোঃ হোসেন গাজীঃ চাঁদপুরে একজন সফল নারী উদ্যোক্তা তানিয়া ইসলাম। যিনি নারী উদ্যোক্তাদের উদ্যোগ নিয়ে তার প্রতিষ্ঠিত সবাই মিলে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজ করেন। আর এই কাজের লভ্যাংস দিয়ে নানা সময়ে স্বাস্থ্যসেবা, বস্ত্র বিতরণ, শিক্ষা উপকরন বিতরণ, খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, নির্যাতিত নারীদের নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া এবং উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন।
৮ মার্চ বুধবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সবাই মিলে প্রতিষ্ঠানে গেলে সাফল্যের জন্য ছুটে চলা নারীদের জীবন সংগ্রাম তারা তুলে ধরেন।
সবাই মিলে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়ানো আয়েশা আক্তার। তিনি বলেন,আমাকে পড়ালেখা চলাকালীন অপ্রাপ্ত বয়স অবস্থায় এক বয়স্ক লোকের সাথে পরিবার বিয়ে দেয়। পরে বিবাহিত জীবনে জানতে পারি আমার স্বামীর নানান কঠিন রোগ। পরে তার নানান রোগের ঔষুধ খরছও আমাকে জোগাতে হতো। হতাশাময় ঐ সময়ে আমি খোঁজ পাই সবাই মিলে প্রতিষ্ঠানের। যার মাধ্যমে আমি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন উদ্যোক্তা হয়েছি। বর্তমানে আমি সরকারি চাকুরির জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছি।
নিলুফা আক্তারও একইভাবে বলেন, মাদকাসক্ত লোকের সাথে পরিবার বিয়ে দিয়েছিলো। এরপর জীবনে একের পর এক দূর্যোগ চলে। সে অবস্থা থেকে সবাই মিলে এর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নেই। এরপর ব্লক বাটিক কাজ শুরু করে উদ্যোক্তা হই এবং এখন সাবলম্বী। বর্তমানে আমি নিজেও একজন প্রশিক্ষক।
এই প্রতিষ্ঠানের ফৌজিয়া রহমান মাসফি বলেন, আমি একজন স্বপ্নবাজ। তাই সবাই মিলে প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়ে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রশিক্ষন নেই। এরপর এখন নিজে কাপরের শপিং ব্যাগ তৈরি করে বিক্রি করে স্বপ্ন পূরণে উদ্যোক্তা হয়েছি। এখন আমি সাবলম্বী হওয়ার পথে রয়েছি।
একইভাবে এই প্রতিষ্ঠানের মালিহা ইসলাম, তানজিলা জারাসহ অন্যান্যরাও নিজেদের হতাশাগ্রস্ত জীবন থেকে বেরিয়ে এসে এখন নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে সমাজে ফুটিয়ে তুলেছে।
এদিকে নারী দিবসকে কেন্দ্র করে এক সাক্ষাৎকারে সবাই মিলে প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ও নারী উদ্যোক্তা তানিয়া ইসলাম বলেন, একটা দেশে নারী দিবসের প্রয়োজনীয়তাকে যখন তাচ্ছিল্যের চোখে দেখা হয়, তখনই বোঝা যায় এ দেশে নারী অধিকার কতটুকু নিশ্চিত। সবচেয়ে বেশি অবাক লাগে যখন কেউ বলে, নারী দিবস আছে, পুরুষ দিবস নাই কেন? সামাজিক মাধ্যমে এসব কমেন্টই হল নারীদের দুর্দশা সম্পর্কে অজ্ঞতার প্রকাশ। আমি মনে করি, নারী দিবস উৎযাপন আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তানিয়া ইসলাম আরও বলেন, নারী দিবস বিশেষ করে বিভিন্ন অফিস এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পালন করা প্রয়োজন। কারণ, কর্মজীবী অনেকে আছেন, যাদের বাইরের মেয়েদের প্রতি এক রকম আচরণ, আর নিজের পরিবারের মেয়েদের সাথে অন্যরকম। তাদের মানসিকতার পরিবর্তনে নারী দিবস উৎযাপন ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। আমি যাতে আমার সবাই মিলে প্রতিষ্ঠান নিয়ে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ওদেরকে সাথে নিয়ে সমাজে এগিয়ে যেতে পারি এজন্য সবাইর দোয়া ও সহযোগিতা চাচ্ছি।