অমরেশ দত্ত জয়ঃ নদী বেষ্টিত চাঁদপুর জেলায় কোনভাবেই যেনো মাদক পাচার ঠেকানো যাচ্ছেনা। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে সমাজকে নতুন নানা কৌশলে ঠেলে দিচ্ছেন মাদক কারবারিরা। যদিও প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরের মাদক পাচার নিয়ন্ত্রণে তৎপরতার কোন কমতি নেই।
১৬ জুন শুক্রবার জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ একাধিক দপ্তরে আলোচনা করলে এ খবর পাওয়া যায়।
সূত্র মতে, রেলওয়ে,সড়ক ও নদী কেন্দ্রীক চাঁদপুরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাদক জেলায় ঢুকছে সড়ক পথে। এরমধ্যে রেলওয়েতে আসছে ইয়াবা। যা পরবর্তীতে নদী পথে জেলাসহ আশপাশের জেলায় পাচার হচ্ছে।
এক তথ্যে দেখা যায়, চাঁদপুর শহরের কয়লাঘাট,যমুনাঘাট, বাবুরহাট, খলিশাডুলী, মঠখোলা, বঙ্গবন্ধু সড়ক এলাকা মাদকের জমজমাট স্পট হিসেবে জমে উঠেছে। এরকমভাবে পুরো জেলায় ৩০টি মাদকের স্পট রয়েছে। যেখানে কুমিল্লা চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক,দাউদকান্দি মতলব সড়ক,হরিণা শরিয়তপুর রুটে দিয়ে এসব মাদক ঢুকে পড়ছে।
প্রশাসন ও জেলা পুলিশ বাদে শুধুমাত্র মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ই চলতি জানুয়ারি হতে মে পর্যন্ত সময়ে ৫২৪টি অভিযানে ৬৪ জন মাদক কারবারীকে গ্রেফতার করেছে। যাদের থেকে প্রায় ১১ হাজার ইয়াবা ও প্রায় দেড়’শ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা গেছে। যদিও তাদের এসব অপকর্মের জন্য ৫৭টি মামলা দেয়া হয়েছে।
মাদক সংক্রান্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বলছে, প্রতিদিনই মাদকসেবী বাড়ছে। আর তারাই পরবর্তীতে মাদকের টাকা জোগাড় করতে খুচরা ব্যবসায়ী এবং পরবর্তীতে মাদকের ডিলারে রূপ নিচ্ছে। আর এর নেপথ্যে হচ্ছে অল্প সময়ে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা কামাইয়ের লোভ এবং নৈতিক শিক্ষার অভাব। তাছাড়া আইনী ফাঁক-ফোঁকর থাকায় যারা একবার মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত হয়। তাদেরকে তাদের সহযোগীরাই এখান থেকে মৃত্যু ছাড়া একেবারে বেরুতে দিচ্ছেনা।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ এমদাদুল ইসলাম মিঠুন ‘হিলশা নিউজ’-কে বলেন, শুধুমাত্র আইন প্রয়োগে মাদক পাচারকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়। কেননা একবার যে আসামী মাদক মামলায় জেলে ঢুকছে। সে সেখানকার অন্যান্য সিনিয়র মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে সম্পর্কে জড়াচ্ছে এবং নতুন নতুন কৌশল শিখে নিজেকে এ ব্যবসায় আরও সমৃদ্ধ করছে। এরপাশাপাশি কিছু রাজনৈতিক শেল্টারও কাজ করে কখনও কখনও। এতে পুরাতন মাদক কারবারীত রয়েছে সাথে নতুন মাদক কারবারীও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়া এ মাদক সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে তাই সকলে মিলে মাদকের বিরুদ্ধে সচেতন এবং ছোট থেকেই সন্তানকে নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। তবে যদি মাদক ব্যবসা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।