নিজস্ব প্রতিনিধিঃ পূর্ণ্যের আশায় মনকে শীতল করতে তীথি অনুযায়ী মন্ত্রোচ্চারণ করে নদীর জলে ডুব দেয়াকে ঘিরে চাঁদপুরের পুরানবাজারে মেঘনা নদীর তীরে বসেছে মাটির তৈজসপত্রের মেলা।
৫ এপ্রিল শনিবার দিনব্যাপী হরিসভা এলাকায় প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলে সনাতনীদের এ সমাগম।
চাঁদপুর জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বিনয় ভূষণ মজুমদার বলেন, চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথি অনুযায়ী সনাতনী হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পূর্ণ্যের আশায় অন্যান্য বছরের মতো এবারো নদীতে নেমে পুরোহিতের কাছে মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে ভোর ৪টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত স্নান করছে। এই অষ্টমী স্নানের মধ্য দিয়ে যাতে জাগতিক কল্যাণে প্রতিটি মানুষ স্বচ্ছতার সাথে নতুন করে জীবনকে চালিত করতে পারে সে প্রত্যাশা নিয়েই নদীতে ঢুব দেয়া হয়। মনকে বড় করতে এবং মানসিক শান্তির আশায় দিনটিকে ঘিরে দান করা হয় অসহায়দের মাঝে। এখানে সেটিই করা হচ্ছে।
চাঁদপুর জেলা পূজা পরিষদের সভাপতি সুভাষ সাহা বলেন, ভারতের গঙ্গা নদীই আমাদের এদেশে পদ্মা নদী হিসেবে পরিচিত। আর পদ্মা নদী এখান দিয়ে মেঘনার সাথে এসে মিলিত হয়েছে। তাই সনাতনী ভাব গাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে সূর্যদয়ের মুহুর্ত হতে ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী আমাদের হিন্দু ধর্মালম্বীরা এখানে এসে জড়ো হচ্ছেন এবং স্নানে অংশ নিচ্ছেন।
চাঁদপুরের হিন্দু মহাজোটের সভাপতি রতন দাস বলেন, ভোর থেকে মন্ত্র পাঠ করে ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা, হরতকী, ডাব, আম্রপল্লব নিয়ে সনাতনী পূণ্যার্থীরা স্নানে অংশ নেন। সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে আমরা এখানে ভোর হতেই স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে তৎপরতারসহিত অবস্থান নিয়েছি।
চাঁদপুর সনাতনী ছাত্র জনতা ঐক্যের প্রতিনিধি কানাই দে বলেন, অষ্ঠমী স্নানটা মূলত একটা তীর্থ যাত্রা। আর সে তীর্থকে উৎসবমুখর করতেই এখানে বসেছে মেলা। এই মেলাতে বাঙ্গালী সংস্কৃতির মাটির তৈজসপত্র ও আসবাবপত্রকে গুরুত্ব দিয়ে এখানে বেচাকেনা চলছে। কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সেজন্য আমরা স্ব উদ্যোগেই ঐক্যবদ্ধভাবে এখানে একত্রিত হয়েছি।
এদিকে যুগ যুগ ধরে চলা পূণ্যার্থীদের পদচারণে মুখরিত হয়ে ওঠা স্নান উৎসবস্থান হরিসভা এলাকায় ছুটে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন ও পুলিশ সুপার আব্দুর রকিবসহ গোয়েন্দা সংস্থার নেতৃবৃন্দ।