অমরেশ দত্ত জয়ঃ পরিবেশের ক্ষতিকারক ও অপচশীল প্লাস্টিক কুড়িয়ে এনে তা রিসাইকিলিংয়ের মাধ্যমে কেকড়া সূতা তৈরি হচ্ছে চাঁদপুরের পুরানবাজারে। এমন কাজে একদিকে হয়েছে বেকার নারী পুরুষের কর্মসংস্থান। অপর দিকে এখানকার তৈরিকৃত সুতা দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানীর মধ্য দিয়ে আয় হচ্ছে প্রচুর পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা। যা নিয়ে খুশি পুরানবাজারের মেসার্স জুই প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিতে ইলিশ মার্কার কেকড়া সূতা তৈরির শ্রমিকরা।
২ মে মঙ্গলবার সকালে সরজমিনে এই কারখানায় গেলে শ্রমিকরা তাদের ভালো থাকার কথা তুলে ধরেন।
শ্রমিকরা বলেন, বেকার বসে না থেকে এ কাজে জড়িত হয়ে ডাল-ভাত খেয়ে ভালো আছি। প্রতিদিন গড়ে ৩শ’ থেকে ৪শ’ কেজি কেকড়া সূতা তৈরি হয়। এখানে গড়ে ১ টনের মতো প্লাস্টিক রিসাইকিলিং কাজ হয়। যারমধ্যে শুধুমাত্র কেকড়া সূতাই তৈরি হয় প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকার। মেশিন পরিচালনাসহ যাবতীয় কাজে মালিকসহ একে অপরকে সহযোগিতা করায় একাজে তেমন একটা বেগ পেতে হয়না।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, বিভিন্ন স্থানের ফেলে দেয়া প্লাস্টিক সামগ্রী সংগ্রহ করার মধ্য দিয়ে একাজ শহরের পরিবেশ দূষণমুক্ত করছে। তাই এ ধরণের প্রতিষ্ঠান পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র চাইলে আমরা বিধিমোতাবেক দ্রুতই তাদেরকে ছাড়পত্র দিয়ে পাশে থাকবো।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের পুরানবাজারের মেসার্স জুঁই প্লাস্টিক ইন্ড্রাস্ট্রির স্বত্বাধিকারী উত্তম কুমার দে বলেন, ফেলে দেয়া প্লাস্টিক বর্জ্যকে আনাচে কানাচে থেকে কুড়িয়ে আনার একাজে পরিচ্ছন্ন কর্মী, পথশিশু, ভাঙ্গারী দোকানি, প্যাকেজারসহ কারখানায় পৌঁছে চাহিদা অনুযায়ী সূতা তৈরির কাজে সবমিলিয়ে কয়েক শ’ বেকার নারী পুরুষের এখানে কর্মসংস্থান হয়েছে। এখানে কেকড়া সুতার পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে পেড ও মুলাম। পেডগুলো বিদেশে রপ্তানি করা হয়। আর মুলামের কুচা দিয়ে দেশে বিভিন্ন রিসাইকেলিং প্লাস্টিক মালামাল তৈরি হয়। এছাড়া কেকরা সুঁতা এখানকার পুরাণবাজারসহ আশপাশের জেলায় বিক্রি হয়। এ শিল্পটিকে আরো সমৃদ্ধ করতে তাই সরকারি পৃষ্টপোষকতা প্রত্যাশা করছি।
এ প্রসঙ্গে বিসিক চাঁদপুরের সহকারী মহাব্যবস্থাপক(অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোঃ শাহরিয়ার খান বলেন, এ উদ্যোক্তা যদি আমাদের কাছে আসে তাহলে অবশ্যই পরিবেশবান্ধব এ কারখানাকে টিকিয়ে রাখতে তাদের পাশে প্রশিক্ষণ এবং ঋণ সহায়তা নিয়ে দাঁড়াবো। ওনারা যদি এখানে বিধিমোতাবেক প্লট দাবী করেন তাহলেও খালি থাকা সাপেক্ষে আমরা প্লট বরাদ্দ দিবো এবং ঋণ ত দিবোই।
এদিকে পুরানবাজারের পরিবেশবান্ধব এই মেসার্স জুঁই প্লাস্টিক ইন্ড্রাস্ট্রিকে সারা দেশে আদর্শ কারখানা হিসেবে জানান দিতে এবং দেশব্যাপী কেকড়া সূতা বিপণনের বিস্তারে সংশ্লিষ্টরা কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন এমনটাই প্রত্যাশা সুধীজনদের।