অমরেশ দত্ত জয়ঃ চাঁদপুর কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বৈদ্যুতিক তারে এই বর্ষাময় সময়ে সারিবদ্ধভাবে দলবেঁধে ঝাঁকে ঝাঁকে বসে কিচিরমিচির করছে কয়েক হাজার শালিক পাখি। আর পাখিদের এমন দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উৎসুক জনতা সেখানে ভীড় জমাচ্ছেন।
১১ আগস্ট শুক্রবার দুপুরে জেলা কারাগার হতে বিসিক শিল্প নগরী প্রায় দেড়’শ মিটার দৈর্ঘ্য স্থানজুড়ে বৈদ্যুতিক তারে হাজার হাজার শালিক পাখিদের সুশৃঙ্খলভাবে বসতে দেখা যায়।
আনিকা ইসলাম নামের এক পথচারী বলেন, আমার স্বামী কারাগারে রয়েছে। তার জন্য এখানে এসেছি। অপেক্ষমান সময় এই শালিক পাখিগুলোর কিচিরমিচির ধ্বনি শুনতে শুনতে কেটে যাচ্ছে।
চাঁদপুর জেলা কারাগারের কারারক্ষী আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শালিক পাখির দল এভাবে বৈদ্যুতিক তারে উড়ে এসে বসছে। শুধু বৈদ্যুতিক তারেই নয় বরং আশপাশের কড়ই গাছেও শালিক পাখির দল ডানা ঝাপ্টে বসে কিচিরমিচির করছে। যা দেখতে জেলা কারাগারের বিভিন্ন আসামীদের স্বজনসহ উৎসুক জনতাকে ভীড় করতে দেখা যায়।
চাঁদপুর বনবিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, প্রকৃতির অপরূপ সুন্দর্য বহন করছে দল বেঁধে উড়ে এসে বসা এই সুন্দর শালিকগুলো। এখানে তারা জায়গাটি নিরাপদ মনে করেই বসছে। তারা এখানের পাশ দিয়ে যাওয়া খাল ও এর আশপাশের খাল ও ক্ষেত থেকে হয়তো ভালো খাবার এবং নিরিবিলি পরিবেশ পাচ্ছে। যার কারনেই এরা আপন মনের পরিবেশে এখানে দল বেঁধে বৈদ্যুতিক তারের ওপর মিলনমেলায় মিলিত হচ্ছে। তবে কতদিন এরা থাকে সেটাই দেখার বিষয়!
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মোঃ রাশেদুজ্জামান বলেন, শালিকগুলো এখানকার আবহাওয়াটা ভালোবেসে ফেলেছে। তবে এটা বলতে পারি বৈদ্যুতিক এই হাইবোল্টেজ তাঁরে শালিকের কোন ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা নেই। কোন রকমের লিকেজ না থাকলে পাখিদের জন্য বৈদ্যুতিক তাঁর কখনোই ক্ষতিকারক নয়।
চাঁদপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার ফোরকান ওয়াহিদ বলেন, বেশ কিছুদিন যাবৎ লক্ষ্য করছি কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে বৈদ্যুতিক তারের ওপর কয়েক হাজার শালিক বসে দোল খাচ্ছে। এরা একটু পর পর উড়ে এসে বসে আবার দলবেঁধে উড়ে স্থান বদল করে। যা দেখতে অপরূপ ও উপভোগ্য মুহুর্ত মনে হয়। আমি আমার কারারক্ষীসহ সবাইকে বলে দিয়েছি কেউ যাতে শালিক পাখিগুলোকে ঢিল মেরে বা অন্য উপায়ে বিরক্ত না করে।