স্টাফ রিপোর্টারঃ চাঁদপুরে ভালোবাসা দিবসকে স্মরণীয় করে রাখতে কারিমা আক্তার (১৬) নামের এক তরুনী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে। কারিমা চাঁদপুর পৌরসভাধীন ১৪নং ওয়ার্ডের কামাল মালের বড় মেয়ে। সে বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী।
১৪ই ফেব্রুয়ারী সোমবার বিকালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই তরুনীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।
কারিমার পিতা কামাল হোসেন মাল জানান, তার ৩ মেয়ে ১ ছেলের মধ্যে কারিমা সবার বড়। ঘটনার দিন সকাল ৭ টার দিকে তিনি তার ছোট ২ মেয়েকে মাদ্রাসায় নাস্তা দিতে বাসা থেকে চলে যান। এ সময় কারিমা তার কক্ষে ও স্ত্রী অন্য কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। বাসায় থাকা দুই খালা অপর কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। আনুমানিক ঘন্টা খানেক পর তিনি বাসায় ফিরে আসেন এবং দেখতে পান কারিমার কক্ষের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। অনেকক্ষন ডাকাডাকি করে ভেতর থেকে কোনো সারাশব্দ না পাওয়ায় দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপরই দেখতে পান জানালার গ্রীলের সাথে কারিমার নিথর দেহ ঝুলে আছে। তড়িঘরি করে ঝুলন্ত অবস্হা থেকে কারিমার নিথর দেহ নামিয়ে তিনি মেঝেতে রেখে সবাইকে খবর দেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রেমিকের সাথে বিয়ে দিতে পরিবার রাজি না হওয়ায় কারিমা ভালবাসা দিবস কে স্মরণীয় করে রাখতে এমন কান্ড ঘটিয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে কামাল মালের মেয়ে কারিমা আক্তার মানষিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলো। সে তার প্রেমিক যুবককে বিয়ে করতে তার বাবা-মায়ের কাছে বায়না করছিলো। পরিবার বলেছিল আগে তুমি পড়ালেখা শেষ করো তারপর তোমার বিয়ের কথা আমরা চিন্তা করবো। কেননা আত্মহত্যাকারি কারিমা আক্তার গেলো কয়েক বছর আগে তার পূর্বের এক কথিত প্রেমিকের সাথে বাসা ছেড়ে পালায়ন করেছিলো। পরে তা পারিবারিকভাবে শালিশ দরবার করে মিমাংশা করা হয় এবং ঐ প্রেমিক যুবক অন্যত্র দ্রুত বিয়ে করে বর্তমানে সংসার জীবন করছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, এবার নতুনভাবে কারিমা চাঁদপুর শহরের কোনো এক নেশাগ্রস্হ যুবকের সাথে ঘনিষ্ঠ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। কিন্তু পরিবারকে কারিমা তাদের একান্ত ঘনিষ্ঠ এ প্রেমের কথা জানালেও পরিবার তা মেনে নেবে না বলে গত ৩ দিন আগে কারিমাকে জানিয়ে দেয়। আর এই কারনে নিজের শয়নকক্ষে বসে নিজের হাত নিজেই কেটে সাদা কাগজে কিছু রোমান্টিক কথা লিখে রেখে কারিমা ভালোবাসা দিবসকে স্মরণীয় করে রাখতে এভাবে আত্মহত্যা করে মারা যায়।
এদিকে বাবুরহাট এলাকায় এই আত্মহত্যার খবর ছড়িয়ে পরলে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আসিফ মহিউদ্দীন, চাঁদপুর সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক ( ইন্টিলিজেন্স) এনামুল হক চৌধুরী, উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আসিফ মহিউদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, কারিমার রক্তমাখা লেখা কাগজ গুলো উদ্ধার করা হয়েছে। কথিত ওই প্রেমিকের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। একই সাথে কারিমার লাশ বাসা থেকে উদ্ধার করে আমরা ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছি।