মমিনুল ইসলামঃ চাঁদপুরের মতলব উত্তরে মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের ৬৪ কিলোমিটার বেড়ি বাঁধের সড়কে পিচ ঢালাই উঠে গিয়ে বিভিন্ন অংশে সড়কের নীচে মাটি সড়ে গিয়ে বড় বড় গর্ত দেখা দেয়ায় বন্যা আতঙ্কে স্থানীয়দের কাটছে নির্মুম রাত। ইতিমধ্যে স্থানীয় দুই ডজন সামাজিক সংগঠনের অনেকেই এক হয়ে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে গর্ত মেরামতের কাজ করছেন। তবে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বলছে, জনবল সংকট থাকা সত্ত্বেও ক্ষতিগ্রস্থ স্থান সার্ভে করে সংস্কারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
২৩ আগষ্ট শুক্রবার বিকালে বাঁধের এখলাসপুরের নয়ানগর এলাকায় বালি মাটি দিয়ে স্বেচ্ছাসেবীদের বাঁধের গর্ত মেরামত করতে দেখা যায়।
সরজমিনে দেখা যায়, বেড়ি বাঁধের ওপর দিয়ে যাওয়া সড়কের নন্দলাপুর, শীবপুর, ফরাজীকান্দি, জহিরাবাদ ও হাসিমপুরের অনেকাংশে সড়কের পিচ ঢালাই উঠে গেছে। এতে করে সড়কের দু’পাশের ইঁদুরের অনবরত গর্তগুলো দিয়ে পানি ঢুকতে ঢুকতে সড়কের নীচের মাটি সড়ে গর্তগুলো অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে। যার করনে পুরো বেড়িবাঁধ রয়েছে ভাঙ্গণ হুমকিতে। তাই এখনি কর্তৃপক্ষ সংস্কার পদক্ষেপ না নিলে বাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে যেকোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
পাউবোর চাঁদপুর কার্যালয়ের এক তথ্যে দেখা যায়, মতলব উত্তরের ১৪টি ইউনিয়ন ঘিরে ৬০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ১৯৮৭-৮৮ অর্থবছরে মেঘনা ধনাগোদা সেচপ্রকল্পের আওতায় এই বেড়িবাঁধটি নির্মাণ করা হয়। যার কারনে বাঁধ এলাকায় প্রায় ৩২ হাজার ১১০ একর ফসলি জমিতে চাষাবাদের সুযোগ সৃষ্টি হয়। প্রায় ৩ যুগ বয়সী এই বাঁধ এখন পর্যন্ত ২ বার ভাঙ্গণের স্বীকারে কয়েক শ’ কোটি টাকার ফসল ও সম্পদের ক্ষতি হয়। তাই নতুন করে যাতে ভাঙ্গণে এরূপ ক্ষয়ক্ষতি না হয় সেদিকে এই বিভাগ সবসময় সর্বোচ্চ তৎপর থাকে।
জহিরাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, মেঘনা ও ধনাগোদা নদীর পানির চাপ এবং টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্তের দেখা দিয়েছে। এতে করে বাঁধের আওতাধীন এলাকায় কয়েক লাখ বসবাসরত মানুষ ভাঙ্গণ হুমকিতে রয়েছে। সকলের কথা চিন্তা করে আমরা মতলবের ২৫টি সামাজিক সংগঠন এক হয়ে বাঁধের গর্তগুলো স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সংস্কার করছি।
নন্দলাপুর গ্রামের জুম্মান হোসেন, ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়নের সোহেল সরকার, মমিনুল ইসলামসহ অন্যরা বলেন, ছোট ছোট গর্ত দিয়ে বাঁধে পানি প্রবেশকে হেলাফেলা না করে দ্রুত টেকশইভাবে মেরামত করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে মতলব উত্তরের ষাটনল ইউপি চেয়ারম্যান ফেরদাউস আলম বলেন, ছাত্র জনতার যারা বাঁধ সংস্কার কাজ করছে। তাদের চাহিদামতো যেকোন কাজে যাতে সংশ্লিষ্ট বিভাগ সহযোগিতা করে এ দাবী জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্ত পাল বলেন, আমরা সড়কের পিচ ঢালাই উঠে যাওয়া বিষয় নিয়ে সড়ক বিভাগের সাথে কথা বলেছি। এখন সার্ভে করে সড়কের ভিতর দিয়ে ইঁদুরের গর্ত চিহ্নিত করে উল্লেখযোগ্য বড় গর্তগুলোতে জিওব্যাগ ভর্তি বস্তা ফেলার উদ্যোগ নিয়েছি। লোকজনকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করছি। তাছাড়া বাঁধে প্রকল্পের কাজ চলমান যা শুষ্ক মৌসুমে পুরোপুরিভাবে করা হবে।