অমরেশ দত্ত জয়ঃ চাঁদপুরে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে গেলো ১১ মাসে প্রায় ৯ লক্ষ প্রাণী চিকিৎসা সেবা পেয়েছে। এর মধ্যে গবাদিপশু রয়েছে ১ লক্ষ ১২ হাজার ৯৩৮ টি এবং পোল্ট্রি প্রাণী রয়েছে ৭ লক্ষ ৬৮ হাজার ৪৪৩টি। ২০২০-২১ অর্থবছরে গত জুন থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত এসব চিকিৎসা ভুক্তভোগী প্রাণীদের দেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসাগুলো জেলার ৮টি উপজেলার হাসপাতাল এবং উপজেলাগুলোর ইউনিয়ন পরিষদে স্থাপিত ৪৫টি কল্যাণ কেন্দ্রে এই চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও জেলা হাসপাতালেও চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, পোল্ট্রি প্রাণীর মধ্যে মুরগী রয়েছে ৫ লক্ষ ৩৯ হাজার ৩১টি। যারা রানীক্ষেত, সিআরডিএন, কক্সিডিওসিস রোগে আক্রান্ত হয়েছিলো। এছাড়াও ১ লাখ ৮০ হাজার ৫৪১ টি হাঁসকে ডাকলেক ও ডাককলেরা রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ৩৪ হাজার ১টি কবুতরকে কলেরা ও রানীক্ষেত রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ১২ হাজার ৩’শ ৬৪টি কোয়েল পাখিকে কলেরা রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ১ হাজার ৯’শ ৬৬টি টার্কি মুরগীকে রানীক্ষেত রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ৫৪০টির মত অন্যান্য পোল্ট্রি প্রাণীও চিকিৎসা পেয়েছে।
পরিসংখ্যানে আরো দেখা যায়, গবাদি প্রাণীর মধ্যে খুঁড়া রোগ, জ্বর, দাউদ, নাবি ফুলা, বদহজম, অরুচি, পেটফাঁপা, আমশয়, ডায়রিয়ার মত আরো নানাবিধ রোগে ৭৮ হাজার ২’শ ৭৩টি গরুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পিপিআর, খুঁড়া পঁচা, ক্ষত, চোখে পানিপড়াসহ একাধিক রোগে ৩৩ হাজার ৮’শ ৮১টি ছাগলকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কুকুর বিড়াল খরগোশেরমত অন্যান্য ৫০টি গবাদিপশুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এসব চিকিৎসা দিচ্ছেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা, ভেটেরিনারি চার্জন এবং পাশাপাশি উপজেলার উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্ককর্তাগণ।
১৮ই জুন শুক্রবার এই প্রতিবেদককে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (প্রাণী ও পুষ্টি) মোঃ মোবারক হোসেন। তিনি বলেন, এনএটিপি, এলডিডিপি, আধুনিক প্রযুক্তিগত গরু রুষ্ট পুষ্ট করন প্রকল্প, পিপিআর রোগ নির্মুল ও খুঁড়া রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প সমতল ভূমিতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী আর্থ সামাজিক ও জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প এআইটিইটি চলমান প্রকল্পের মাধ্যমে গবাদিপশু ও পোল্ট্রি প্রাণীর জীবনমান উন্নয়নের নানাভাবে কাজ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পগুলো মাধ্যমে গবাদিপশু এবং পোল্ট্রি প্রাণীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
চাঁদপুর পৌর ১৩নং ওয়ার্ডের বাহের খলিশাডুলী গ্রামের গরু পালনকারী শামছুল গাজী। তিনি জানান, আমার গরুটার কিছুদিন আগে ডায়রিয়ার সমস্যা হয়েছিলো। আমি উপজেলা প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে জানানোর পর পরই ওনারা এসেছেন। গরু দেখে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার পদক্ষেপ নেওয়ায় গরুটি দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।এতেই বুজা যায় প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে চিকিৎসার মান আগের চেয়ে ভালো হয়েছে।
এব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, আমরা যেকোন ভুক্তভোগী খামাড়ী বা প্রান্তিক লোকের গবাদী পশু বা পোল্টি প্রাণীর সমস্যার কথা মনোযোগসহকারে শুনি। চেষ্টা করি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে তড়িৎ পদক্ষেপ নিতে। আমাদের সেবার দরজা হাসপাতালে সবার জন্য উন্মুক্ত। তাই আসুন এবং প্রাণীর উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সেবা গ্রহণ করুন।
