অমরেশ দত্ত জয়ঃ চাঁদপুরের পুরানবাজার ও নতুনবাজার এলাকার বিভিন্ন স্থানে পদ্মা-মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীপাড়ের সিসি ব্লক দেবে গিয়ে শহর রক্ষা বাঁধ নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। যেজন্য নদীর পাড়ে বসবাসকারী প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মানুষ নদী ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে।
২৪ আগস্ট বুধবার শহরের টিলাবাড়ী, যমুনারোড, হরিসভা, রোনাগোয়াল ও নতুনবাজারের ডাকাতিয়ার পাড় ঝুঁকিতে রয়েছে।
চাঁদপুর পানি উন্নয়নবোর্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী চাঁদপুরের নতুন বাজার, পুরান বাজার শহর রক্ষা বাঁধের দৈর্ঘ্য ৩৩৬০ মিটার। যা ১৯৭২ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্পে ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণে কাজ করেছে সরকার। বর্তমানে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধের টিলাবাড়ি, যমুনা ঘাট, হরিসভা, রোনাগোয়াল ও নতুনবাজারের ডাকাতিয়া নদীর পাড়সহ ৫টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানসহ বাঁধের সর্বমোট ১০৯ মিটার এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
স্থানীয় নদীপাড় এলাকার মানুষজন ও চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায় বলেন, মেরামত নয়, সংস্কার নয় বরং টেকসই, মজবুত ও স্থায়ী শহর রক্ষা বাঁধের প্রয়োজন নদী পাড়ের মানুষের। কেননা ব্যবসায়ীক কেন্দ্র পুরানবাজারসহ নদী পাড়ের বসবাসকারী মানুষের বাড়ি-ঘর, মসজিদ-মন্দির, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, ইমারতসহ সাড়ে পাঁচ লক্ষাধিক লোক বর্তমানে ভাঙ্গণ আতঙ্কে রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় রামঠাকুর দোল মন্দির এবং মসজিদসহ ট্রলারঘাটটিও আওতায় আনতে হবে। জরুরী ভিত্তিতে ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বাঁধের ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে বিস্তৃর্ণ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রিফাত জামিল বলেন, শহর রক্ষা বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশটুকুসহ স্থায়ী বাঁধ পুনর্বাসনের জন্য ৩৪শ’ ৩২ কোটি টাকার একটি ডেভোলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। যেখানে ৮শ’ কোটি টাকার প্রতিরক্ষা কাজ পুনর্বাসন এবং ২৬শ’ কোটি টাকায় ১৩ কিলোমিটার নৌপথ ড্রেজিং এবং ৭৯০ হেক্টর ভূমি পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে। এই উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবটি অনুমোদন হলেই দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ১১ লক্ষ ৩৮ হাজার ৪শ’ ১৪ কোটি টাকার সম্পত্তি রক্ষা করা সম্ভব হবে।
এস এম রিফাত জামিল আরও বলেন, ভাঙ্গণস্থানে ইতিমধ্যে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে ৪ হাজার জিও খালি ব্যাগ, ৩ হাজার বালি ভর্তি ব্যাগ ও ১৩ হাজার সিসি ব্লক মজুদ রাখা হয়েছে। আমরা ২০১৯ সাল হতেই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চালাচ্ছি। জনকল্যাণকর এই কাজের জন্য অনুমোদন চেয়ে সবশেষ ২০২২ সালে এই ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে আবারো পাঠিয়েছি।