অমরেশ দত্ত জয়ঃ চাঁদপুরের সদরের ফরক্কাবাদে হয়রানীমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে প্রতিপক্ষকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষক ও এলাকাবাসী। আর এই আল্টিমেটাম দেওয়া হয় হাসান খান এবং জাহাঙ্গীর হোসেন গং কে।
২৮ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজ রোডে ফরক্কাবাদ ডিগ্রী কলেজ, ফরক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়, ফরক্কাবাদ ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, বালিয়া ব্যবসায়ী সমিতি, বালিয়া ইউনিয়নবাসীসহ পৃথক ব্যাণারে আয়োজিত যৌথ মানববন্ধন থেকে বক্তারা এই আল্টিমেটাম দেন।
এই মানববন্ধনে হাসান খান ও জাহাঙ্গীরের শাস্তি দাবী সম্বলিত ফেস্টুন হাতে নিয়ে কয়েক’শ শিক্ষার্থীকে অংশ নিতে দেখা যায়।
মানববন্ধনে ফরক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মিয়াজীর সভাপতিত্বে এবং ফরক্কাবাদ ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুর রহামন ও মইন উদ্দিনের যৌথ পরিচালনায় ফরক্কাবাদ ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ চন্দ্ৰ দাস, ফরাক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আমিনুল হক মজুমদার, ফরক্কাবাদ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রফিকুল আসলাম মিয়াজী, ফরক্কাবাদ ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ফখরুল ইসলাম, ফরক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান মিজি,শিক্ষার্থী মিলি আক্তারসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নামে ফেরারী আসামি হাসান খান, জাল সনদধারী, মামলাবাজ, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্টকারী জাহাঙ্গীর হোসেন গং ও এদের মদদদাতাদের অশুভ তৎপরতা এবং মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলার প্রতিবাদে আমাদেরকে মানববন্ধনে দাঁড়াতে হলো। এই এলাকার কৃতি সন্তান সুজিত রায় নন্দীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ফরক্কাবাদ ডিগ্রী কলেজটি প্রতিষ্ঠা পায়। দুঃখজনক হলেও কিছু দুস্কৃতিকারী এ ঐতিহ্যবাহী কলেজের শিক্ষদের বিরুদ্ধে চুরির মামলাসহ বিভিন্ন মামলা দিয়ে কলেজ ও এলাকার বদনাম করছে।
বক্তারা আরো বলেন, জাহাঙ্গীর আলম ও হাসান খান আমাদের এলাকার শিক্ষকসহ বিশিষ্টজনদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের তারা রাস্তায় নামিয়েছে। তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীসহ সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল অপকর্ম রুখে দিতে হবে।
এ বিষয়ে ব্যাণারে উল্লেখিত জাহাঙ্গীর আলমকে তাৎক্ষনিক পাওয়া না গেলেও মুঠোফোনে হাসান খান নামের অপরজনের কাছে অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাসান খান নামে যে কেউ হতে পারে। তবে আমার নাম হচ্ছে অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ হাসান খান। মূল ঘটনা হচ্ছে আমি ফরক্কাবাদ ডিগ্রী কলেজের এখনো অধ্যক্ষ। আমাকে অধ্যক্ষ পদে গভর্ণমেন্ট নিয়োগ দিয়েছে। আমি এই কলেজে দীর্ঘ বছর চাকরির সুবাদে উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন ঘটিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমি ওই কলেজে ৭/৮ বছরের মতো প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালন করেছি। আমি ক্ষতিগ্রস্ত এবং বিপদে পড়ায় মামলা করতে বাধ্য হয়েছি। সিভিল কোর্টে আমার দেওয়া ১৮৮/২০ মামলাটা চলমান রয়েছে। ওই মামলায় কলেজের সভাপতিসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। সেখানে কমিটির অন্য কারো নাম নেই। এছাড়া ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীর আলম হাইকোর্টের রায় পাওয়ার পরেও স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ওই রায় কার্যকর না করে তার সাথে অন্যায় করেছে। শিক্ষক- শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীকে ভুল বুজিয়ে ওই মহল মামলা তুলে নিতে আমাকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে যা দুঃখজনক।
এদিকে মানববন্ধন সম্পর্কে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি আব্দুর রশীদ বলেন, ওই মামলাটা থানায় নয় বরং কোর্টে করা হয়েছে। মানববন্ধনের খোঁজ-খবর নিতে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম।