অমরেশ দত্ত জয়ঃ চাঁদপুর সদরের আশিকাটি ইউনিয়নে শত বছরের পুরানো ১টি মন্দিরে টিনের চালের নীচেই চলছে সনাতনী ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় কার্যক্রম। মন্দির কমিটির সদস্যদের যতসামান্য চাঁদার টাকাতেই চলছে বাৎসরিক ধর্মীয় উৎসবসহ মন্দিরের যাবতীয় ধর্মচর্চা। বিভিন্ন সময়ে সরকারের ক্ষমতার পালা বদল হলেও মন্দিরের অবকাঠামো উন্নয়নে কেউই যেন ঠিকভাবে এগিয়ে আসছে না।
এমন তথ্য চিত্র ১’শ ১০ বৎসরের পুরানো আশিকাটি শ্রী শ্রী সচ্চিদানন্দ শ্যামসুন্দর হরিসভা মন্দিরটির।
১০ই ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার মন্দিরটিতে গিয়ে দেখা যায়, মন্দিরে অষ্ট প্রহরব্যাপী হরিনাম সংকীর্তন ও মধ্যাহ্নে ভোগরাগ এবং অপরাহ্নে কয়েক হাজার সনাতনী ভক্তবৃন্দের মাঝে প্রসাদ বিতরণ হচ্ছে।
এ বিষয়ে আশিকাটি শ্রী শ্রী সচ্চিদানন্দ শ্যামসুন্দর হরিসভা পরিচালনা পরিষদের সাধারন সম্পাদক ব্রজ গোপাল আশ্চর্য বলেন, আমাদের এই মন্দিরটি শত বছরের প্রাচীন হলেও অর্থের অভাবে সংস্কার করতে পারছিনা। টিনের চালার নীচে কোনমতে মন্দিরের কার্যক্রম চালাচ্ছি। আমরা আর্থিক সহযোগিতা চেয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে আশিকাটি শ্রী শ্রী সচ্চিদানন্দ শ্যামসুন্দর হরিসভা পরিচালনা পরিষদের উপদেষ্টা জহরলাল আশ্চর্য বলেন, এই প্রাচীন মন্দিরের নামে ৫৪ শতাংশ জায়গা থাকলেও তা খালি পড়ে আছে। আমরা মন্দিরটির ভবন করতে চাইলেও আর্থিক সংকটে তা করতে পারছি না। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এদিকে মন্দির সংস্কার নিয়ে হতাশাজনক কথা জানালেন আশিকাটি শ্রী শ্রী সচ্চিদানন্দ শ্যামসুন্দর হরিসভা পরিচালনা পরিষদের সহ-সভাপতি যুবরাজ দাস বলেন, জেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বেশ কয়েক বছর আগে এই মন্দিরের জন্য সামান্য কিছু টাকা আর্থিক বরাদ্দ পেলেও তা দিয়ে মন্দিরের চিত্রের তেমন কোন পরিবর্তন সম্ভব হয়নি। এমনকি এই মন্দিরটি সরজমিনে দেখতে কোন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকেও আসতে দেখিনি। এমন প্রাচীন এই মন্দিরটির উন্নয়নে এই জেলা প্রশাসক মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
মন্দিরটি সার্বজনীন এবং জাগ্রত বলে জানান আশিকাটি শ্রীশ্রী সচ্চিদানন্দ শ্যামসুন্দর হরিসভা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হারাধণ চন্দ্র দত্ত বলেন, আমাদের ৪১ সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। সেই কমিটির অর্থায়নেই কোনমতে মন্দিরের কার্যক্রম চলছে। ঐতিহ্যবাহী এই মন্দিরটির কার্যক্রম এগিয়ে নিতে আর্থিক অনুদান পেতে আমরা শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, জেলা প্রশাসক মহোদয়, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ রাজনৈতিক, সামাজিক সর্বস্তরের সুধী মহলের সহযোগিতা ও সুদৃষ্টি জরুরী ভিত্তিতে কামনা করছি।
এ সময় আশিকাটি শ্রীশ্রী সচ্চিদানন্দ শ্যামসুন্দর হরিসভা পরিচালনা পরিষদের উপদেষ্টা নন্দলাল আশ্চর্য, সুকমল কর রামু,বাসুদেব বণিক,সহ-সাধারণ সম্পাদক হারাধন চক্রবর্তী, মিল্টন চক্রবর্তী, সদস্য সাধন দত্ত, নিপু চৌধুরী, বিজয় গোপাল, বিপ্লব আশ্চর্যসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক অন্জনা খান মজলিশকে অবগত করলে তিনি বলেন, এতো বছরের পুরানো মন্দির আশিকাটিতে রয়েছে সেটি আমার জানা ছিলোনা। এই মাত্রই জানলাম। আমরা মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে দ্রুত কথা বলে মন্দিরের উন্নয়নে কিভাবে সহযোগিতা করলে ভালো হয় তা আলোচনা করবো।