শিমুল অধিকারী সুমনঃ চাকরীর মেয়াদ শেষ হতে চললেও এখনো স্কুল ও এর শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র বাইনের চোখে মুখে হতাশার ছাপ। তবে এ হতাশা আদৌ কাটবে কিনা তা নিয়ে নিজেও জানেন না চাঁদপুরের হাইমচরের চরভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের এ শিক্ষক। তিনি স্কুলটির প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।
৩১ জানুয়ারি বুধবার বিকালে স্কুলচলাকালীন সময়ে তার কার্যালয়ে গেলে তিনি এই হতাশার কথা জানিয়েছেন।
জানা যায়, সাদামাটা সহজ সরল চলাফেরা করা শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র বাইনের বাড়ীঘর এক সময় নদীতে বিলীন হয়। পরে তিনি হাইমচরেরই চরপোড়ামুখীতে সামান্য পরিমাণে জমি কিনে বাড়ী করে বসবাস শুরু করেন। দাম্পত্য জীবনে তাঁর স্ত্রীসহ ২ মেয়ে এবং ১ ছেলে রয়েছে এবং ছেলেমেয়েরা সবাই পড়ালেখা করছে। হাজার হাজার শিক্ষার্থী বের হওয়া হাইমচরের এই চরভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে তাঁর অধীনে প্রায় ৬শ’ শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে।
জগদীশ চন্দ্র বাইন বলেন, হাইমচর উপজেলা পর্যায়ের বিজ্ঞান মেলায় অংশ নিয়ে জুনিয়র গ্রুপে ‘ফেলে দেয়া ভাতের মাড় থেকে জ্বালানি উৎপাদনের’ প্রদর্শনী করে চ্যাম্পিয়ন হলো আমাদের চরভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের এ গৌরব আমাকে যতটা আনন্দ দেয় ততটাই হতাশায় ফেলে। কেননা আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রত্যন্ত অঞ্চলের হলেও তাদের মেধাশক্তি দূর্দান্ত। অতছ তাদের জন্য একটি আলাদা বিজ্ঞানাগারের ল্যাব ভবন না থাকায় ওদেরকে আমরা বৃহৎ পরিসরে বিজ্ঞান চর্চায় মনোনিবেশ করাতে পারছি না। যদিও আমাদের শিক্ষার্থীরা গেলো ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষাতেও ৪টি গোল্ডেন এ প্লাস এবং সাধারণ গ্রেডে ৭টি এ প্লাস পেয়ে উপজেলা পর্যায়ে ১ম হয়েছে।
জগদীশ চন্দ্র বাইন আরও বলেন, আমি এক সময় এই স্কুলেরই ছাত্র ছিলাম। এরপর এখানেই শিক্ষকতা শুরু করে চাকুরী জীবনের ৩৭টি বছর কাটিয়ে দিলাম। ২০১৫ সালের ২৯ জুন থেকে স্কুলটির প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছি। এই সময়ে স্কুলের শিক্ষার্থীদের ফলাফল, খেলাধূলা, সাংস্কৃতিক চর্চাসহ স্কুলের নানা বিষয়েই কাজ করেছি। চাকরীর শেষ সময়ে এসে হলেও শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা একটি বিজ্ঞানাগারের ল্যাব ভবন দেখতে না পেরে আমার চরম হতাশা লাগছে। তাই বিষয়টিতে সুদৃষ্টি দিতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ চাচ্ছি।