স্টাফ রিপোর্টারঃ চাঁদপুর সদরের ১২নং চান্দ্রা ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর খান নামের এক আওয়ামীলীগ নেতাকে মারধর করে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি-ধমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারধরের স্বীকার ওই আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীর খান হচ্ছেন চান্দ্রা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য। বর্তমানে তিনি আহত অবস্থায় চাঁদপুর সদর হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন।
১০ অক্টোবর সোমবার রাতে তার হাসপাতালে ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক সুশান্ত বিশ্বাস। তিনি বলেন, মারধরে আহত জাহাঙ্গীর নামের ওই রোগীর অবস্থা দেখে আমরা ভর্তি নিয়ে নিয়েছি। তার চিকিৎসা চলছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় লিটন পাটোয়ারী, মেহেদুল আলম, মোশারফ পাটওয়ারীসহ অন্যান্যরা বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পেট্রোল বোমা ও গাড়ী পোড়া মামলার এজাহারভুক্ত আসামী ইউনিয়ন বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক মোর্শেদ আলম সৈয়ালের নির্দেশে তার ভাই জুয়েল সৈয়াল, মাসুদ সৈয়াল, সোহেল সৈয়াল, রুবেল সৈয়াল ও সহযোগী আবু তাহের সৈয়াল পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থেকে জব্বার ঢালীর দোকানের পাশে নাসির ডাক্তারের ফার্মেসিতে ঢুকে দেশীয় অস্ত্রসহ এলোপাথাড়ি জাহাঙ্গীর খানকে মারধর করে নিলাফুলা জখম করে। পরে তাকে মারধর করে ফেলে রেখে যাওয়ার সময় প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং এলাকা ছাড়া করবে বলেও এরা হুমকি ধমকি দিয়েছে।
তারা আরও বলেন, জাহাঙ্গীর খানকে মারধরের এমন ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে জয়নাল নামে এক গ্রাম পুলিশকে দিয়ে চান্দ্রা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক মোর্শেদ আলম সৈয়াল এক সাজানো নাটকের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অতছ তিনি নিজেই পেট্রোল বোমা ও গাড়ী পোড়া মামলার এজাহারভুক্ত আসামী। যার মামলা নং-৩০, জিআর-১৪৮, (১৯-০৩-২০১৫)। যেই মামলার বাদী চাঁদপুর সদর মডেল থানার সাবেক এসআই আব্দুল হামিদ। এছাড়াও পুলিশ পেটানোর মামলাও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যেটি হচ্ছে জিআর-২৫৬। মামলার বাদী এসআই জহির।ওই মামলার চার্জশিটেও ৬নং আসামী হচ্ছে মোর্শেদ আলম সৈয়াল। একজন আওয়ামীলীগ নেতার হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ আমরা জানাচ্ছি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীর খান বলেন, সন্ধ্যায় ওরা আমাকে মেরে ফেলার উদ্দ্যেশ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। হামলার সময় ব্যবসায়িক কাজে আমার কাছে রাখা নগদ ১ লক্ষ টাকা জোড়পূর্বক ওরা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। পরে আমার অসহায় অবস্থার ডাক-চিৎকার শুনে স্থানীয় নাছির মাঝী, হান্নান সৈয়াল, আবু সুফিয়ান বেপারী, মেহাদুল আলম, সুলতান খান, লিটন পাটওয়ারী, রশিদ দফাদারসহ এলাকার গণমান্য ব্যাক্তিরা এগিয়ে এসে আমাকে কোনমতে প্রাণে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। আমি ও আমার পরিবার এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই দ্রুতই থানায় অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এদিকে ঘটনা প্রসঙ্গে জয়নাল নামের ওই গ্রাম পুলিশ বলেন, সরকারি গাছ কেটে ফেলতে বাঁধা দেওয়ায় আমাকে জাহাঙ্গীর খান পিটিয়ে আহত করেছে। তবে সন্ধ্যায় ওনাকে কেউ এই সূত্র ধরে পিটিয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই। আমি আমাকে পেটানোর জন্য জাহাঙ্গীর খানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিবো।
এ বিষয়ে চান্দ্রা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মোর্শেদ আলম সৈয়াল গংদের বক্তব্য তাৎক্ষণিক পাওয়া যায়নি।
তবে এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রশীদ বলেন, আমরা জাহাঙ্গীর খানের থেকে এখনো লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। যদি জাহাঙ্গীর খান থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। তাহলে অবশ্যই আমরা তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।