হিলশা নিউজ রিপোর্টঃ রক্ষক যখন ভক্ষকের দায়িত্বে থাকে তখন বলার উপায় থাকেনা সেই রক্ষকের কাছে যাওয়া মানুষটির অবস্থা কি হয়! হ্যা, এক চিকিৎসকের কাছে গিয়ে এমনটিই ঘটে চাঁদপুরের ইব্রাহীম রনি(৩৭) নামে এক সাংবাদিকের জীবন এখন সংকটাপন্ন। তিনি দীপ্ত টিভি এবং বাংলা ট্রিবিউন এর চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন।
৮ জুলাই শনিবার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইব্রাহীম রনিকে দেখতে গেলে এসব কথা তার পরিবার তুলে ধরেন।
ইবাহীম রনির পরিবার জানান, যক্ষ্মা নেই, তবুও রোগীকে সাড়ে পাঁচ মাস টিবির ওষুধ খাওয়ালেন ঢাকাস্থ ল্যাব এইডের চিকিৎসক প্রফেসর ডা. আলী হোসেন। সাড়ে পাঁচ মাস ওষুধ খাওয়ার পর রোগীর অবস্থা অবনতি হওয়ায় আবারও ওই ডাক্তারের কাছে রোগী গেলে তখন নানা টেষ্ট করাতে বলেন ওই চিকিৎসক। এরপর টেষ্টের রিপোর্ট দেখে তিনিই বলেন আপনার ত টিবি রোগ হয়নি। এসব ঔষুধ আপনি খেলেন কেন? দেশের খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের এ ধরনের কথায় ও কাণ্ডে হতবাক রোগী ও তার স্বজনরা।
সাংবাদিক ইব্রাহীম রনির স্বজন ও সহকর্মিদের ইতিমধ্যে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁর ফুসফুস দুটোই অস্বাভাবিকভাবে ক্ষত হয়ে গেছে। আর সেইসব কারনের একটা অন্যতম প্রধান কারনই হচ্ছে ভুল তথা ধারনা থেকে দীর্ঘ সময় ধরে যক্ষার চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া।
সাংবাদিক ইব্রাহিম রনির সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার এলার্জি সমস্যার সমাধান পেতে ওই চিকিৎসকের শরনাপন্ন হই। সেখানে আমার শুধুমাত্র এক্সরে রিপোর্ট দেখেই অনুমান নির্ভর হয়ে চিকিৎসক আলী হোসেন জানালেন আমার টিবি রোগ হয়েছে। এর তার ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ৫ মাস ঔষুধ খেয়ে কোন উন্নতি না পেয়ে বরং অবনতি হলে পুনরায় তার শরনাপন্ন হই। তখন তিনি আরও ৮টি টেষ্ট করিয়ে এর রিপোর্ট দেখে বলেন আমার টিবি রোগ নেই তাহলে এসব ঔষুধ কার পরামর্শে খাচ্ছি! তখন আমার চোখে পানি চলে এসেছে, অন্যদিকে কেন জানি একটা ঘৃনা জন্মাতে শুরু করলো। পরে অবাক হয়ে শুধু চিকিৎসকের দিকে তাকিয়ে স্ত্রীসহ বেরিয়ে আসা ছাড়া উপায় ছিলো না আমার।
এদিকে ড. আলী হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করতে চেষ্টা করলে ঢাকা ল্যাব এইড থেকে জানানো নো হয়, স্যার নেই। কোথায় গেছেন? তা বলতে পারেননি কেউ। চেম্বার করবেন কিনা তাও কর্তৃপক্ষ জানেন না।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের সাংবাদিক নেতা ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী বলেন, বিশেষজ্ঞের এমন ভুল চিকিৎসায় পেশাদার একজন সাংবাদিক মৃত্যু শয্যায় এটি চাঁদপুরের সাংবাদিকরা মেনে নিতে পারি না। এ ব্যপারে সাংবাদিক সমাজ চরম ক্ষুব্ধ ও নিন্দা প্রকাশ করে যাচ্ছে। এরজন্য রনির পরিবার এবং সাংবাদিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকেও আইনগত কী ব্যবস্থা নেয়া যায় সেটি নিয়েও চিন্তা ভাবনা চলছে।
তিনি আরও বলেন, রনির স্ত্রী এবং ছোট ছোট ২টি কন্যা সন্তান এবং ঘরে বুড়ো বাবা মা। তাকে হয়তো দেশের বাইরেও চিকিৎসা নিতে হতে পারে এবং সেই প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে তার চিকিৎসার জন্য অর্থ তহবিলও গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া চাঁদপুর প্রেসক্লাব এবং অন্যান্য সুহৃদরা রনির চিকিৎসায় আর্থিক যোগান দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।