প্রেস বিজ্ঞপ্তি : সংস্কৃতি সমাজ প্রগতির অনন্য বাহন- এ বক্তব্যকে ধারণ করে জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের গৌরবের দুই দশক চলছে।দ্বিতীয়বারের মতো লোকজধারার সংস্কৃতির প্রথম সোপান বাঁশি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো গত ২৮ এপ্রিল,শুক্রবার বিকাল ৩ টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। এবারে বাঁশি উৎসবের প্রতিপাদ্য ছিলো ” বাঁশির সুরের মূর্ছনায় সকল ভেদাভেদ নাশে,আমরা আছি সুন্দরের পাশে।
বিকাল তিনটায় বাঁশিভিত্তিক চিত্রাঙ্কনের মধ্য দিয়ে বাঁশি উৎসবের কার্যক্রম শুরু হয়। বিকাল চারটায় বাঁশির সুরে জাতীয় সংগীত বাজানোর মধ্য দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন হয়। বাঁশি উৎসবের উদ্বোধন করেন চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ও মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এম এ ওয়াদুদ।
জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে ও আবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জাতীয় শিশু সাহিত্যিক ফোরামের সভাপতি, শিশু সাহিত্যিক হুমায়ুন কবির ঢালী, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, পরিবেশ আইনবিদ সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নুরুল হক কমল, আইনজীবী অ্যাড. মাসুদ রানা।
সমাপনী অধিবেশনে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, চরসেনশান ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জিতু মিয়া বেপারী, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক পরেশ মালাকার, গণসংগীতশিল্পী পরেশ মালাকার, জেলা উদীচীর সহ-সভাপতি গোপাল সাহা।
বাঁশি উৎসবে প্রয়াত গোবিন্দ চন্দ্র মালাকার, নারায়ন চন্দ্র ভৌমিক ও রুস্তম আলীকে মরনোত্তর সম্মাননা দেয়া হয়। তাঁদের সুযোগ্য সন্তানগণ সম্মাননা ও উপহার গ্রহণ করেন।
চাঁদপুর জেলা ছাড়াও ঢাকা,বরিশাল,কুমিল্লা, নারায়নগঞ্জের ১০ জন বংশীবাদক এ উৎসবে বাঁশি বাজিয়ে দর্শকদের মোহিত করেন। অনুষ্ঠানে বাঁশিভিত্তিক গান-নৃত্য ও কবিতা পরিবেশন করা হয়। সবশেষে চিত্রাঙ্কন ও সাধারণজ্ঞান প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা।
অনুষ্ঠানটি বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮ টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে একটানা চলতে থাকে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এম এ ওয়াদুদ বলেন, বাঁশি হলো বাঙ্গালি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। লোকজ সংস্কৃতির এ ধারার শিল্পীরা অবহেলিত। তাদের সম্মান দেয়া উচিৎ, পাশে থাকা উচিৎ। এ উৎসবের মধ্য দিয়ে জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র চাঁদপুরে জাগরণ ঘটিয়েছে। লোকজ সংস্কৃতির এ ধারাটি অব্যাহত থাকুক। দেশের এ সব কৃষ্টি সংস্কৃতিই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
তিনি বলেন, বাঙ্গালি কৃষ্টি-সংস্কৃতি রক্ষা করার জন্য ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক কর্মকান্ড ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাক। আমরা তাদের পাশে আছি,পাশে থাকবো।
এতে অতিথিগণ বলেন, বাংলাদেশে জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রই লোকজ ধারার প্রধান সোপান বাঁশি উৎসব তারাই গতবার আয়োজন করে এবারও সম্পন্ন করতে যাচ্ছে। সংস্কৃতি মানুষকে উদার করে, মানবিক করে তোলে। সংস্কৃতি ছাড়া সমাজ সভ্য হয়ে ওঠে না,সমাজ মানবিক হয়ে ওঠে না।
এ উৎসবটি চাঁদপুরেই জাতীয়ভাবে করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। এক পর্যায়ে সাংবাদিক ইকবাল হোসেন পাটওয়ারীও এমনটি সমর্থন করে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বাঁশি পরিবেশন করেন, উপমহাদেশের প্রখ্যাত বংশীবাদক মো. হাসান আলী, মোস্তফা কামাল, মানিক মজুমদার, নিলয় দাস, কামাল হোসেন,জুম্মন শরীফ, বিল্লাল হোসেন, দিলীপ দাস, পিপেল দাস।শাহিন খানের তত্ত্বাবধানে অন্যান্যের মাঝে গান পরিবেশন করেন, মজিবুর রহমান প্রধানিয়া, নন্দিতা দাস, কাশফিয়া ফাহমি,শাকিল, তানভির,মানিক খান,জান্নাত আক্তার, সারা তাবাসসুম জীবা, জেবা তাহসিন, জাহিদ মাহমুদ।
বাঁশি উৎসবে অন্যান্যের মাঝে উপস্হিত ছিলেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এর জেলা সভাপতি তপন সরকার, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা জাকির, বাংলাদেশ সাম্যবাদী আন্দোলন চাঁদপুর জেলা আহবায়ক আজিজুর রহমান, স্বরলিপি নাট্যগোষ্ঠীর সভাপতি এম আর ইসলাম বাবু ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আল মামুন, চাঁদপুর ড্রামার সাধারণ সম্পাদক মানিক পোদ্দার, দৈনিক চাঁদপুর এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কে এম মাসুদ, মোহনা টিভির জেলা প্রতিনিধি মনওয়ার কানন, সাহিত্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আশিক বিন রহিম, দৈনিক কালবেলার জেলা প্রতিনিধি অমরেশ দত্ত জয়, জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সহ-সভাপতি প্রশান্ত সরকার, আমিনুল ইসলাম নিবলু ও আব্দুর রহমান পাটওয়ারী, নৃত্য ধারার সভাপতি সোনা দত্ত,নাট্যাভিনেতা নূরে আলম নূর।