মোঃ আরিফুল ইসলামঃ তারুণ্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যনির্বাহী পরিষদের পরিচিতি সভা, সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৫ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মঞ্চে তারুণ্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি ফেরদাউস মোর্শেদ জুয়েলের সভাপ্রধানে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ আতাউর রহমান পাটোয়ারী সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল।
এ সময় তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক সংগঠন ছোট পরিসরে করার নেই। যেটি অসম্ভব বলে মনে করেন, তার জন্য সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের বিকল্প নেই। সকল আন্দোলনে সাংস্কৃতিক কর্মীদের ভূমিকা ছিলো। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বাদ পাবার যে ভূমিকা, তা সাংস্কৃতিক কর্মীদের দ্বারা হয়েছে। রাজনৈতিক শক্তিবৃদ্ধির প্রধান হলো সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। যখনই কোনো ধরনের আঘাত আসে, প্রথমেই আঘাত আসে সাংস্কৃতিক কর্মীদের উপর। অনেক সীমাবদ্ধতার মাঝে আমাদেরকে কাজ করতে হচ্ছে।
চাঁদপুর পৌরসভার যখন আমি দায়িত্ব নিয়েছি, তখন অনেক প্রতিকূলতার মাঝে নিতে হয়েছে। দু’ বছরে আমি পৌর পরিষদের মাধ্যমেকিছু কাজ করতে পেরেছি। আগামী দু বছরের মধ্যে আমরা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারবো। যাদের কারনে আমরা স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি, তাদের নামে আমরা কিছু করতে পারবো। চাঁদপুরে যে সড়কগুলোর নামকরন করা হয়েছে, সেগুলো থাকবে। তার কারণ সেগুলোর সাথে ইতিহাস জড়িত।
নতুনভাবে যানজট নিরসনে রাস্তা করার পরিকল্পনা রয়েছে, সে সড়কগুলো বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে হবে। তিনি আরো বলেন, তারুণ্য সাংস্কৃতিক সংগঠন আজকে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দিয়েছে,তারা তাঁদেরকে স্মরণ করেছে এ জন্য আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই ।এ সময় বক্তারা বলেন তারুণ্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের কাণ্ডারি বিশ্বনাথ চৌধুরী বিশুর কথা না বললে নয়। তার প্রচেষ্টায় তারুণ্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের সৃষ্টি। এ সংগঠনের ৮ বছর পেরিয়ে ৯ম বর্ষে প্রদার্পন করেছে। তারুণ্য সাংস্কৃতিক সংগঠন একদিন ‘চাঁদপুর জেলায় প্রতিষ্ঠিত সংগঠন হিসেবে রূপ নিবে।
২০১৪ সালের ১০ ডিসেম্বর তারুণ্য সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা লাভ করে। চাঁদপুরে এখন পৃষ্ঠপোষকতার মানুষ নেই ৷ পৃষ্ঠপোষকতা করলে তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। সাংস্কৃতিক অঙ্গন বেঁচে থাকলে, দেশ বেঁচে থাকবে। সাংস্কৃতিক সংগঠন বাঁচিয়ে রাখলে দেশে জঙ্গিবাদ, মাদক ও সন্ত্রাসবাদ থাকবে না। সাংস্কৃতিক সংগঠন বেঁচে থাকলে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বাংলাদেশ বেঁচে থাকবে। তারুণ্য যে নাম তার মধ্যে অনেক কিছু লুকিয়ে রয়েছে। তরুণরাই পারে সমাজ পরিবর্তন করতে। যে সংগঠন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সংগঠন বলে, তারাই আজকে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দিচ্ছে।
আমাদের চলার পথে যা কিছু আছে, তাই সংস্কৃতি।সংবর্ধিত অতিথি বীর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এম এ ওয়াদুদ বলেন, তরুণরা হলো মৃত্যুঞ্জয়ী শক্তি।তারাই এদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। সকল আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে তরুণরা। মরহুম অ্যাডঃ মুকবুল আহমেদের একটি বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন তিনি।
তিনি ভারত থেকে যুদ্ধের ট্রেনিং নিয়ে এসে যুদ্ধ করেছে। এখন তরুণরা সন্ধ্যায় রাস্তার মোড়ে আড্ডা দিয়ে থাকে। তারা যদি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকতো, তাহলে আমাদের সমাজ আরো উন্নত হতো। আমি যুদ্ধ করেছি, তখন পাকবাহিনীর গুলিতে আমি ঝাঁজরা হয়েছি। এখন কষ্ট লাগে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ হলে প্রজন্ম শুনতে চায় না। সভা থেকে তারা উঠে যায়। সামনে এক মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা শুরু হচ্ছে।
চাঁদপুরের উন্নয়নের রূপকার শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি বিজয় মেলার প্রধান উপদেষ্টা। তার নেতৃত্বেই বিজয় মেলা করা হচ্ছে। সকল সাংস্কৃতিক সংগঠন সেখানে অংশগ্রহণ করবে। একদিন তরুনরাই এদেশের হাল ধরবে। সন্তানেরা যদি শিক্ষিত না হয়, তাহলে এদেশেরহাল ধরবে কারা?
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র অ্যাডঃ হেলাল হোসাইন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলন, চরসেনসাস ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জিতু মিয়া বেপারী, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জিএম তসলিম, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি তপন সরকার ও সমাজসেবক নেপাল সাহা।এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ফারুক হোসেন ভূঁইয়া ও সচিব রাসেল আহমেদ।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মহসিন পাঠান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াকুব আলী মাস্টার। তারুণ্য সাংস্কৃতিকও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংবধর্না গ্রহণ করেন মরণোত্তর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডঃ মকবুল আহমেদের পক্ষে মুক্তিযোদ্ধার কনিষ্ঠ পুত্র ফেরদাউস মোর্শেদ জুয়েলের সহধর্মীনি তানজিলা আক্তার।, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ইউনিট কমান্ডার এম এ ওয়াদুদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জীবন ‘কানাই চক্রবর্তী।
এ সময় উক্ত সংগঠনে কার্যকরি সকল সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। কোরআন থেকে তেলোয়াত করেন জেলা ছাত্রলীগের উপ-সম্পাদক নিলয় ও গীতা থেকে পাঠ করে নয়ন নাগ আবির । সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন।
সংবর্ধিত কণ্ঠশিল্পী লাভলী দেব ও মতিউর রহমান হাসান (পাগলা হাসান)। এরপর তারুণ্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করে।
তারুণ্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিচিতি মুক্তিযুদ্ধা সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত
অমরেশ দত্ত জয়ঃ তারুণ্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যনির্বাহী পরিষদের পরিচিতি সভা, সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।