স্টাফ রিপোর্টারঃ চাঁদপুরে সদরে রঙ্গিন স্বপ্ন দেখা প্রেমের বিয়ের ৮ বছর সংসারের পর এখন স্ত্রীকে প্রতিনিয়ত হত্যাচেষ্টা এবং তালাক দিয়ে বিদায়ের হুমকি দিচ্ছেন পাষন্ড স্বামী। আর এতে করে ওই দম্পতির ২টি ছেলে শিশু এখন অভিভাবকের স্নেহ ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত বলে অভিযোগ উঠেছে।
৪ মে বৃহস্পতিবার সকালে ওই স্ত্রী মারধরের স্বীকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে এই বিষয়টি সবার নজরে চলে আসে।
জানা যায়, তরপুরচন্ডী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বনবিভাগ সড়কস্থ গোলাম মোহাম্মদ জমাদার ও লিলুফা বেগমের ২ ছেলে ও ৩ মেয়ের মধ্যে ৪র্থ সন্তান হচ্ছেন নাজনিন সুলতানা রীতা(২৪)। আর আশিকাটি ১নং ওয়ার্ডের শামসুল খান বাড়ীর মুছাব্বর গাজী এবং শাহানারা বেগমের ৩ ছেলে মেয়ের মধ্যে মেঝো সন্তান হচ্ছে আল আমিন গাজী(২৭)। যারা উভয়ে তারুণ্যের ঝলকানিতে প্রেমের পর বিয়ের মধ্য দিয়ে দাম্পত্য জীবন শুরু করে। তাদের সংসারে বর্তমানে আরিয়ান আহমেদ(৬) ও নুহাস আহমেদ ওমর(২) নামের ২টি কোমলমতি ছেলে সন্তান রয়েছে। কিন্তু সেই দাম্পত্য জীবনে পারিবারিক কলহে এখন বাঁজছে বিচ্ছেদের সুর।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাজনিন সুলতানা রীতার ছোট ভাই হাসিবুল হাসান সনেট ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, তুচ্ছ ঘটনাতে আমার বোনকে বুধবার রাতে গলা টিপে ধরে হত্যা চেষ্টা করেছে পাষন্ড দুলাভাই। কিন্তু পরে ব্যার্থ হয়ে আজ সকালে আমার বোনের খালা শাশুড়ি মনি ও মনুফা বেগম দুলাভাইয়ের ইঙ্গিতে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে আমার বোনকে আহত করে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আমরা খবর পেয়ে বোনকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করি।
কান্নাস্বর কন্ঠে নাজনিন সুলতানা রীতা বলেন, আমি কথা বলতে পারছি না। কিন্তু তবুও বলছি। আমার স্বামী একটা পাষন্ড লোক। তিনি প্রায়ই আমাকে মারধর করে থাকে। গতরাতে ছোট ছেলে কেনো কান্না করছে? এজন্য আমাকে মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থান ফাটিয়ে দিয়েছে। গলা টিপে ধরে হত্যাচেষ্টা করে মেরে ফেলতে চেয়েছে। আর তার এসব কাজে আমার শাশুড়ি শাহানারা বেগম বরাবরই উৎসাহ দেন। সকালে খালা শাশুড়ি আমাকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে। আমি প্রশাসনসহ সর্বমহলের কাছে এর বিচার চাইছি। দ্রুতই এ বিষয়ে থানায় মামলা করবো।
অভিযোগ প্রসঙ্গে আল আমিন গাজী মুঠোফোনে বলেন,আমি বিসিকের সুপারভাইজারগিরি করে সংসার চালাই। মনমানিল্যে পারিবারিক কলহে আমি স্ত্রীকে ২/১ টা থাপ্পর দিয়েছি। তবে গলা টিপে ধরিনি। আর খালা ও আমার মা কখনোই আমার স্ত্রীকে মারধর করেনা। বরং আমার স্ত্রী প্রায়ই আমাদের ছোট ছোট সন্তানগুলোকে ফেলে এদিক সেদিক চলে যায়। এসময় তিনি অন্যান্য অভিযোগ অস্বীকার করেন।

তবে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের অর্থ ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স সোনিয়া আক্তার বলেন, রীতা নামে ওই রোগীর গলাসহ শরীরের নানা স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে। তার ওপর খুব শারিরীক নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়ায় সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সে কথা বললেও কিছু শুনা না যাওয়ার কারন হচ্ছে তার গলায় আঘাতের ভয়বহতা রয়েছে।
এঘটনা চাঁদপুর সদরের আশিকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিল্লাল মাষ্টারকে অবগত করলে তিনি বলেন, আমি দ্রুতই বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোনভাবেই যাতে একটি সংসার ভেঙ্গে না যায় সেদিকে দৃষ্টি রেখেই আমার জায়গা থেকে আমি কাজ করবো।