আবদুল কাদির: চাঁদপুরে ফরিদগঞ্জের মীরপুর চরের কমিটি নিয়ে বিরোধে চর ইজারা অনিশ্চয়তায় দেখা দিয়েছে। এতে করে চলতি বোরো ধান চাষাবাদে বিড়ম্বনার শিকার সুবিধা বঞ্চিত কৃষক থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। যদিও এর আগে কৃষকরা পৌর মেয়রের কাছে বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের জন্য গিয়েছিলেন।
জানা যায়, ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মীরপুর গ্রামের প্রায় শত একর জমি নিয়ে মীরপুর চরটির অবস্থান। এবছর চর ইজারা দেওয়ার সময় পেরিয়ে গেলেও চর কমিটির দ্বন্দের কারনে ইজারা প্রক্রিয়া সম্পন্ন সম্ভব হয়নি। এতে সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে শতাধিক কৃষক।
এ বিষয়ে কৃষক ও থানায় অভিযোগকারী ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ জাকির হোসেন বেপারী, আঃ রশিদ, বেলায়েত, ইব্রাহীম, আবদুল্লাহ আল মামুনসহ অনেকেই বলেন, মাও: মহিবউল্যাহ চর কমিটির সভাপতি হওয়ার পর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেনি। আর তাই পৌরসভায় শুধুমাত্র মহিবউল্যাহর বিরুদ্ধেই জাকির হোসেন বেপরী অভিযোগ করেছে। সে অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাবেক সভাপতি মোঃ মোশারফ হোসেন রুনু, জাকির হোসেন ও আব্বাস উদ্দিন মেয়রের নিকট গিয়েছিলেন সমস্যার সমাধান চাইতে। তখন মেয়র তদন্ত সাপেক্ষে আনোয়ার হোসেন খোকনকে সভাপতি করে একটি কমিটি ঘোষনা দেয়। এতে সমস্যা সমাধান না হওয়ায় রুনু, কামাল মিজিসহ মেয়রকে সভাপতি প্রস্তাব দিলে মেয়র দায়িত্ব নিতে সম্মত হননি। পরিশেষে মেয়র চর ইজারা জন্য ৬ মার্চ মিরপুর স্কুল মাঠে মিটিংয়ের আহ্বান করেন। মিটিং ডাকাকালে প্রতিযোগী না থাকায় পুন:রায় পরবর্তী বৃহস্পতিবার আরেকটি তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের সম্মান ক্ষুন্ন হওয়ায় আমরা প্রতিকার চেয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
জাকির হোসেন আরোও বলেন, কৃষকের স্বার্থে মেয়র সুষ্ঠু সমাধান দিয়ে গিয়েছে। সেখানে একটি চক্র মেয়রের সম্মান নষ্ট করায় আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বাধ্য হই।
এ বিষয়ে চর কমিটির সাবেক সভাপতি মোঃ মোশারফ হোসেন রুনু বলেন, আমরা মাওঃ মহিবুল্যাহর বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে মেয়রের নিকট গিয়েছি। তাছাড়া কৃষদের মতামতের ভিক্তিতে একটি সুন্দর কমিটি গঠন ও চর পরিচালনা সুষ্ঠুভাবে হবে সে লক্ষ্যে মেয়রের সহযোগিতা চেয়েছি। সে মোতাবেক কাজ না হওয়ায় কৃষকরা মিটিংয়ে উপস্থিত হয়নি। এখানে মেয়রের সম্মান ক্ষুন্নতো কেউ করেনি। বর্তমানে আমি চরের ধান চাষে পানি নিষ্কাশনসহ কার্যক্রম পরিচালনা করছি। বরং কমিটি জটিলতায় মাছ চাষের জন্য চরটি ইজারা বিলম্বিত হচ্ছে। তাছাড়া প্রায় দু‘শতাধিক কৃষক ও জমির মালিক তাদের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা এর একটি সুষ্ঠু সমাধান চাই।
এ বিষয়ে অভিযোগ ফরিদগঞ্জ থানার এস আই জামাল উদ্দিন বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রতিপক্ষকে ডেকে সমাধানের কথা বললে প্রতিপক্ষ থানায় অথবা এলাকায় বসতে চায়। তারা মেয়র মহোদেয়ের কার্যালয়ে বসতে রাজি হচ্ছে না। ১৭ মার্চ শুক্রবার বসার কথা থাকলেও প্রতিপক্ষের লোকজন পৌরসভায় উপস্থিত হয়নি। তারপরেও আমরা আইনগতভাবে এটির সমাধান দিতে চেষ্টা অব্যহত রেখেছি।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে একজন পুলিশ অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছি।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ পৌর মেয়র বীর মুক্তিযুদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী বলেন, একটি কুচক্রী মহল সাধারণ কৃষকদের জিন্মি করে দির্ঘদিন এ চরের কৃষকদের সুবিধা বঞ্চিত করে রেখেছে। আমি এ চক্র থেকে সাধারণ কৃষকদের অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করছি। আমি লক্ষ্য করছি একটি চক্র সকল সময়েই ভালো কাজের বিঘ্নতা সৃষ্টি করতে চায়। তাই এই চক্রকে কোন ভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। সকলের শান্তিপূর্ন সহাবস্থানের মধ্যদিয়েই একটি সুষ্টু সমাধান দেওয়া হবে।