মামুন হোসাইনঃ ফরিদগঞ্জে অত্যাধিক তাপে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পানির অভাবে আমন চাষীরা বিপাকে পড়েছে। লক্ষমাত্রার অনুযায়ী কৃষি আবাদ না করতে পারায় কৃষকদের পাশাপাশি হতাশা গ্রস্থ হয়ে পড়েছে সংশ্লিষ্ট, কৃষি কর্মকতা-কর্মচারীরা।
আগস্ট মাসে সাধারণত দেশে বৃষ্টির পরিমান বেশি হয়ে থাকে। এই বৃষ্টির পানির উপর নির্ভরশীল এই মৌসুমের কৃষকরা। বর্তমানে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না থাকায় মহা সংকটে পড়েছেন আমন ধান রোপনকারীরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়নে মোট ৮ হাজার ৩ শ ২৮ হেক্টর জমিতে কৃষি আমন চাষের লক্ষমাত্রা রয়েছে। পানির অভাবে মাত্র ৭ হাজার হেক্টর জমিতে কৃষি রোপা আমন চাষ হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকি জমিগুলোতে কৃষি আবাদ নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে বলে জানাগেছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি গ্রামের ফসলের মাঠ ঘুরে রোপা আমন ধানের জমিতে এমন চিত্র চোখে পড়ে। অনাবৃষ্টির কারণের আমন ধান ফলানো কৃষকদের মাঝে হাহাকার পরিলক্ষিত হচ্ছে পাশাপাশি এখনও এমন অনেক অনাবাদি জমি রয়েছে, যেখানে অত্যাধিক তাপে ও বৃষ্টির অভাবে জমির মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে, সেখানে শক্ত মাটিতে আমনের ধানের চারা রোপন করা যাচ্ছে না।
অনাবৃষ্টি ও অত্যাধিক তাপে জমিতে আমনের চারা না লাগাতে পারায়, কৃষকদের চোখে মুখে এখন চিন্তার ভাঁজ। চলতি মৌসুমে দেখা নেই বৃষ্টির।
জমিতে পানি না থাকায় আমন ধান লাগাতে পারছেন না কৃষক। পানির অভাবে জমিতে রোপণ করা ধান গাছ মরে যাচ্ছে। আমন ধান চাষ সম্পূর্ণ পানির ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন, এ উপজেলার হাজারো কৃষক পাশাপাশি বৃষ্টিপাত না থাকায় প্রচন্ড দাবদাহসহ খরা আর অনাবৃষ্টিতে একদিকে জনজীবন যেমন অতিষ্ঠ তেমনি হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্যসহ ফসলের চাষাবাদ।
রূপসা উত্তর ইউনিয়নের কৃষক মিজান জানান, আমন ধানের মৌসুম শুরম্ন থেকে তেমন বৃষ্টির দেখা নেই। কিছু দিন আগে কিছু পরিমান বৃষ্টি হয়েছিল, সেই পানি থেকে নিচু অংশের জমিতে চারা রোপণ করেছিল। এখন পানির অভাবে রোপন করা সেই চারা গুলি শুকিয়ে যাচ্ছে।
পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামের কৃষক আবুল কালাম বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় পানির অভাব এবং বিদু্যতের লোডশেডিং জনিত কারণে ঠিকমত সেচপানীও ব্যবস্থা করা যাচ্ছেনা। অত্যাধিক তাপে কৃষকদের জমি শুকিয়ে যাওয়ায় চারা রোপন নিয়ে বিপাকে কৃষকেরা।
বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়,এই চলতি মৌসুমে অনেক কৃষক তাদের ফসলি জমির চারা গাছ বাঁচাতে ইঞ্জিল চালিত ও বিদু্যৎ চালিত মেশিনের মাধ্যমে জমিতে সেচ দিয়ে তাদের চাষাবাদ চালিয়ে নিচ্ছিলেন কিন্তু বিদ্যুৎ লোডশেডিং এর কারণে তৃনমুল পর্যায়ের কৃষকরা পড়ছেন বিপাকে। যখনই বিদ্যুৎ আসে তখনই ফসলি জমির আমনের চারা বাঁচাতে ইঞ্জিল চালিত ও বিদ্যুৎ চালিত মেশিনের মাধ্যমে জমিতে পানি সরবরাহ করে থাকেন। এতে করে তাদের খরচ অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে। আবার অনেকে বৃষ্টি অপেক্ষার দিন গুনছে।
এব্যাপারে ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশিক জামিল মাহমুদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলায় আমন চাষের প্রায় ৭৫ পাসেন্ট জমিতে চারা রোপন করা শেষ হয়েছে। অত্যাধিক তাপ ও অনাবৃষ্টির কারনে আমনের চারা রোপন করা যাচ্ছে না, যেনো কৃষকরা বিকল্প হিসেবে সেচের পানী ব্যবহার করতে পারে, এ জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডে লিখিতভাবে আবেদন করে অনুরোধ করেছেন এ অঞ্চলে পানি সরবরাহ করতে, এই প্রসঙ্গে তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক মুহম্মদ শফিকুর রহমানকে অবগত করেছেন। চাষীদের বাকী জমিতে আমনের চারা রোপনের ব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠে থেকে কৃষকদের বিভিন্ন ভাবে সহায়তার করে আসছেন বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।