আবদুল কাদির : চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিডি কার্ড নিয়ে অনিয়মের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে ইউপি সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) উপজেলার ১৪নং ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা হেলাল উদ্দিন রাসেল, আজাদ ফরিদগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে অভিযোগের তীর যেন পিচু ছাড়তেছেনা ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন রিপনের পিছু থেকে। কিছুদিন পূর্বেও তার ইউনিয়নে টিসিবির কার্ড চাইতে গিয়ে শারিরীকভাবে লাঞ্চনার শিকার হয়েছেন এক বিধবা নারী। অভিযোগ রয়েছে ট্যাগ অফিসারকে নাজানিয়ে, ট্যাগ অফিসারের অনুপস্থিতিতে সরকারি সহায়তা সামগ্রী বিতরনের।
এবার পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে ১০৩টি ভিজিডি কার্ড বিতরণে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়মের কথা উল্লেখ করে গত ২৭ মার্চ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা বরাবর ওই ইউনিয়নের ৯জন ইউপি সদস্য লিখিত অভিযোগ করেন।
মঙ্গলবার (২৮মার্চ) ইউনিয়নে এসব কার্ডের চাল বিতরণের কথা ছিল। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনও চাল বিতরণ কর্মসূচী আপাতত স্থগিত করেন। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে চাল বিতরণ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন এর অনুসারী ও ইউপি সদস্যদের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে।
এসময় ইউপি সচিবের কার্যালয়ের চেয়ার টেবিল ভাংচুর ও কাগজপত্র তচনছের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা হেলাল উদ্দিন রাসেল, আজাদ হোসেনসহ অন্তত ৬/৭জন আহত হয়।
হামলায় আহত যুবলীগ নেতা হেলাল উদ্দিন রাসেল বলেন, মঙ্গলবার সকালে আমি ভিজিডির চাল নিতে আসলে ইউপি সচিব বিতরণ বন্ধ জানায়। বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানাই। চেয়ারম্যানকে চাল দিতে বলেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার উপর হামলা হয়।
ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, ভিজিডি নিয়ে অনিয়মের ব্যাপারে অভিযোগ করায়, ইউএনও চাল বিতরণ বন্ধ রাখেন। কিন্তু চেয়ারম্যান তার লোকজন দিয়ে জোর পুর্বক চাল বিতরণ করতে গেলে সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় আমিও হামলার শিকার হই।
ইউপি সচিব আমির হোসেন বলেন, ইউএনওর নির্দেশে ভিজিডির চাল বিতরণ বন্ধ রাখি। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে চাল বিতরণ বিষয়ে কথকাটাকাটির এক পর্যায়ে আমার অফিস ভাংচুরের শিকার হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন রিপন জানান, ইউনিয়ন পরিষদে সৃষ্ট মারামারির ঘটনার পর ইউএনও আমাকে ডেকেছেন। এই বিষয়ে আমি পরে জানাবো।
ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল মান্নান জানান, হামলার খবর পেয়ে আমরা গঠনাস্থলে পুলিশ প্রেরন করেছি, সংঘর্ষের গঠনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা তাসলিমুন নেছা জানান, ভিজিডির কার্ড বিতরনের বিষয়ে ইউপি সদস্যদের লিখিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মঙ্গলবার (আজ) চাল বিতরণ বন্ধ রাখতে নিদের্শনা দিয়েছিলাম। সংঘর্ষের ঘটনাটি আমি জেনেছি। তবে বুধবার (২৯ মার্চ) পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজনের উপস্থিতিতে ভিজিডির চাল বিতরণ করা হবে।