জয় চন্দ্র নাগঃ অভিযানে নেমে জেলেদের আকষ্মিক হামলায় প্রাণ বাঁচাতে ভয়ে ইলিশ মাছসহ জেলে ও নৌকা স্পটেই ছেড়ে কোনমতে ফাঁড়িতে ফিরে আসে চাঁদপুরের নৌ পুলিশের একটি আভিযানিক টিম। নদীতে জেলেরা সঙ্গবদ্ধভাবে কতটা হিংস্র হয়ে উঠে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতোও না জানালেন ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া নৌ পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
২৮ অক্টোবর সোমবার বিকালে এসব কথা জানালেন চাঁদপুর সদরের ইব্রাহীমপুরের আলুরবাজার নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এস আই মোহাম্মদ দুলাল হোসেন।
তিনি বলেন, আমরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এখানে অনেক সঙ্কটময় সময় কাটাচ্ছি। ২৬ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় অভিযানকালে জালালপুরে ৪টি জেলে নৌকা নিয়ে সঙ্গবদ্ধভাবে আমাদের ধাওয়া দেয়। সেখানে আমিসহ এস আই মোহাম্মদ চাঁদ মিয়া ও ৬ জনের সঙ্গীয় ফোর্সসহ প্রাণে বাঁচতে কোনমতে ফাঁড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হই।
তিনি আরও বলেন, প্রায় সময়ই কোদালপুর, সাতপাড়া এলাকা, একটেলের টেক সবুজ বয়া এলাকাগুলো দিয়ে আমরা অভিযান শেষে ফেরার পথে আতঙ্কে থাকি। কেননা আমাদের গতিবিধি সঙ্গবদ্ধ অসাধু জেলের দল নজর রাখে। আর আমাদের জনবল সঙ্কটে আমরা কোনমতে অভিযান পার করছি।
এক সুরে নিজেদের হতাশার কথা জানালেন আলুরবাজার নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বেলাল হোসেন। তিনি বলেন, আমাদের এখানে এএসআই ২ জনের স্থানে আছে ১ জন এবং কনস্টেবল ২০ জনের স্থানে ১২ জনই শূণ্য। তার ওপর ৩৫ সিসির ইন্জিনের যে স্পীডবোট এখানে দেয়া সেটি গেলো কয়েক বছর যাবৎ অকেজো হয়ে পড়ে আছে। তেল বরাদ্দ কম। আমরা একটি ভাড়া করা স্পীডবোট দিয়ে দিনে ২টি ও রাতে ২টি পেট্রোল টিম দিয়ে অভিযান চালাচ্ছি। তার ওপর এ পর্যন্ত এক দিনের জন্যও মেজিস্ট্রেসি সাপোর্ট পাই না এবং বড় রকমের সমন্বয়ের গ্যাপের মধ্যে চালাচ্ছি অভিযান।
তিনি বলেন, স্থানীয় লোকজন ভালো হওয়ায় নিজেরা এখনো কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পেরেছি। জেলেরা কৌশল বদলে আইনের ফাঁক ফোকর বুজে শিশু এবং নারী নদীতে নামিয়ে দিচ্ছে। তার পরও এতো এতো সংকটের মধ্যেও আমরা অভিযানের এই পর্যন্ত ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৩শ’ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল, ২৫৪ কেজি মা ইলিশ মাছ, ৪টি জেলে নৌকা এবং ১৫ জন আসামীর বিরুদ্ধে ৪টি নিয়মিত মামলা দিয়েছি। আমাদের অভিযানে অন্তত বড় দু’টি স্পীডবোট দরকার তাহলে আরও ভালোভাবে কাজ করা সম্ভব হতো।
উল্লেখ্য, ১৩ অক্টোবর হতে ৩ নভেম্বর মোট ২২দিন চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ষাটনল হতে হাইমচরের চরভৈরবীর পদ্মা- মেঘনার মোট ৭০ কিলোমিটার এলাকা মা ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা হওয়ায় নদীতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।