মামুন হোসাইনঃ পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস আর অমর একুশে ঘিরে ফুলের চাহিদা থাকে অনেক বেশি। ফরিদগঞ্জে এসব দিবসকে ঘিরে ফুলের দাম ব্যবসায়ীরা আকাশচুম্বী হাকাচ্ছেন দেখে ক্রেতারা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রীয়া ব্যাক্ত করছেন। ফরিদগঞ্জে ফুল চাষ নেই বলেই কতিপয় ফুল ব্যবসায়ী এই সময়ে এভাবে সিন্ডিকেট করে ফুলের দাম বাড়িয়েছে বলে মন্তব্য সুধীমহলের।
রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ১১ ঘটিকায় ফরিদগঞ্জ সদরে বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা যায়, গোলাপ কিছুদিন পূর্বে ১০ থেকে ১৫ টাকা বিক্রি করলেও এখন সেটি ৩০ থেকে ৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে পূর্বের চেয়ে ৩ গুন দাম বেড়েছে রজনীগন্ধা ফুলেরও। দাম বাড়ার প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই ঝাড়বার, কালার গ্লো, গ্লেরোরিয়াস, ভুট্টা ও লহর ফুলেরও।
ফুলপ্রেমীরা বলছেন, ঋতুরাজ বসন্তবরণে তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সের মানুষ আনন্দে মেতে উঠবে। বাসন্তী রঙের শাড়ির সঙ্গে তরুণীরা সাজবে বাহারি রঙের ফুলে। এরমধ্যে ১৪ই ফেব্রুয়ারী ভালোবাসার বার্তা নিয়ে হাজির হবে ভ্যালেন্টাইন’স ডে বা বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এরপর আসছে ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। প্রতিবছর এ ২ দিবসকে ঘিরে বাঙ্গালীদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে ফুলের চাহিদা দেখা দেয়। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাঙ্গালিদের পকেট কাটতে রমরমা ফুল বাণিজ্যে মেতে উঠে ফুল ব্যবসায়ীরা। যার লাগাম টেনে ধরতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরী।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান শাহীন বলেন, জাতীয় দিবস কিংবা বিশেষ প্রয়োজনে ফরিদগঞ্জে ফুল সংরক্ষণের যথাযথ উদ্যোগ ও ব্যবস্থা না থাকায় ফুলের সঙ্কট দেখা দেয়। এতে চড়া মূল্যে ফুল সংগ্রহ করতে হয়। আমি প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সকল মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সহযোগিতা পেলে ফুল চাষ করার আগ্রহ ব্যাক্ত করে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার বড়ালী গ্রাম নার্সারির সত্ত্বাধিকারী সোহেল,শাহীন,স্বপন বলেন, ফুল চাষে ঝুঁকতে হবে। শহরমুখী না হয়ে যদি উপজেলায় ফুল চাষ শুরু করা যায়। তাহলে আকাশচুম্বী দাম হাকানো ফুল ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙ্গা সম্ভব এবং স্বল্পমূল্যে মানুষের হাতের নাগালে ফুলের দাম নিয়ে আসা যাবে।
এদিকে গোলাপ ও রজনীগন্ধাসহ অন্যান্য ফুলের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন জানিয়ে সদরের অভিজাত পুষ্প বিতান,হারুণ পুষ্প বিতান,পুষ্প মেলাসহ অন্যান্য ফুল ব্যবসায়ীরা বলছেন, আবহাওয়া এবং করোনার জন্যই ফুলের দাম বেড়েছে। চাষীদের অনেক ফুল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী ফুলের সংকট রয়েছে। তাছাড়া ঢাকায় সিন্ডিকেট করে ফুলের দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় চাহিদা মেটাতে উপজেলার বেশি দামে ফুল সরবরাহ করতে হচ্ছে। এখন টার্গেট অনুযায়ী ফুল বিক্রি নিয়েও আমরা দুঃশ্চিন্তাতে রয়েছি।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশিক বিন জামাল বলেন, ফরিদগঞ্জ পৌরসভা এলাকার পূর্ব বড়ালীতে ৩টি নার্সারিতে কিছু ফুল চাষাবাদ হয়। এছাড়া বাণিজ্যিকভাবে এ উপজেলায় ফুল চাষ করা হয়না। ফুলের সংকট ঠেকাতে কেউ যদি আগ্রহ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ফুল চাষ করতে চায়। তাহলে উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে তাকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে। ফুলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমরা দ্রুতই পদক্ষেপ নিবো।