স্টাফ রিপোর্টারঃ চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণে যৌতুক ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে মেয়ের মা কর্তৃক মেয়ের স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবীতে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-১৫ (২১-১০-২০২০)।এ মামলাটির বাদী হয়েছেন মেয়ে সঞ্জিতা রাণী দাসের পক্ষে তার মা অঞ্জনা রাণী দাস।
মামলা প্রসঙ্গে মামলার নথি থেকে জানা যায়, প্রায় ৩ বছর পূর্বে সামাজিকভাবে সঞ্জিতা রাণী দাস কে এ মামলার ১নং বিবাদী মিঠুন চন্দ্র দাস(২৭) বিয়ে করেছে। বিয়ের সময় বিবাদীর চাহিদা মতো ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা সমমূল্যের ৩ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ দেড় লক্ষ টাকা এবং আনুসাঙ্গিক খরছ বাবদ আরো ২ লক্ষ টাকা খরছ করে বিয়ে সম্পন্ন হয়। কিন্তু এর কিছুদিন সংসার ভালোভাবে চললেও এরপর মিঠুন চন্দ্র দাস তার স্ত্রী সঞ্জিতা রানী দাস কে আরো ১ লক্ষ টাকা তার বাবার থেকে যৌতুক এনে দেওয়ার দাবী করে। কিন্তু সঞ্জিতা রানী দাস এ যৌতুকের দাবীকৃত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিবাদী মিঠুন চন্দ্র দাস ও তার পিতা ২নং বিবাদী প্রহল্লাদ চন্দ্র দাস(৬৫) এবং মাতা ৩নং বিবাদী পুষ্প রাণী দাস(৪৫) ঐক্যবদ্ধভাবে সঞ্জিত রাণী দাসকে মারধর করে। যা নিয়ে পরবর্তীতে সালিশ দরবার করে মিমাংসা করা হয়।ঐ সময়ে বিবাদীগণ এ ধরনের যৌতুক দাবী ও মেয়েকে মারধর করবে না বলেও প্রকাশ্যে অঙ্গিকার করেন।
আরও পড়ুনঃ
মামলার নথি থেকে আরো জানা যায়, প্রায় ১৫দিন পূর্বে সঞ্জিতা রাণী দাসের কোল জুড়ে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু সেই পূর্ববর্তী যৌতুকের টাকার দাবীর জের ধরে ২০শে অক্টোবর সকালে পুনরায় সঞ্জিতা রানী দাসের থেকে বিবাদীগণ আবারো ১ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করেছেন। কিন্তু সঞ্জিতা এ দাবীকৃত যৌতুকের টাকা প্রদান করতে অপারগতা প্রকাশ করল এ মামলার ২ ও ৩ নং বিবাদীর প্ররোচনায় ১নং বিবাদী মিঠুন চন্দ্র দাস সঞ্জিতাকে মেরে ধরে মারাত্মক জখম করে। পরে তারা স্থানীয়দের চাপে সঞ্জিতাকে মতলবের একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু ঐখানকার চিকিৎসকগণ সঞ্জিতার অবস্থা খারাপ দেখে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে রেফার করে। এরপর তাকে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।পরবর্তীতে যৌতুকের দাবী করে সঞ্জিতা রানী দাসের ওপর এরূপ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে বিবাদীদের ওপর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে মামলা দায়ের করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার বাদী সঞ্জিতার মা অঞ্জনা রানী দাস গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, আমার মেয়ে চিকিৎসার কাজে
ব্যাস্ত থাকায় আমি একজন অসহায় মেয়ের মা হয়ে আইনের শরনাপন্ন হয়ে বিবাদীদের কঠোর শাস্তির দাবীতে মামলাটি করেছি।
এ মামলার বিবাদীদের পক্ষে ২নং বিবাদী প্রহল্লাদ চন্দ্র দাস গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, মামলাটি উদ্দেশ্য প্রণেদিতো। সামাজিকভাবে আমাদের হেয় করার জন্য এ মামলাটি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মতলব দক্ষিণ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কিশোর ঘোষ গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, বিষয়টি এখন আইনের উপর ধাবিত হয়েছি। আমি স্থানীয় কাউন্সিলর হিসেবে যতটুকু করার প্রয়োজন করবো।
এ বিষয়ে মতলব দক্ষিণ থানার ওসি স্বপন কুমার আইচ গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। আমরা দ্রুতই মামলার বিবাদীদের গ্রেফতার করতে পারবো বলে প্রত্যাশা করছি।
