চয়ন চন্দ্র ঘোষঃ জাগ দিয়ে মাছ শিকারের কারণে কমছে মতলব দক্ষিণের ধনাগোদা নদীতে দেশীয় প্রজাতির মাছ। ফলে সাধারণ মৎস্যজীবীরা ব্যাপকভাবে আর্থিক সংকটে পড়েছে। নদীর তলদেশ ভরাট ও অবৈধ জাগ বেড়ে যাওয়ায় মাছের প্রজনন বাধাগ্রস্ত হয়ে উৎপাদন কমে যাচ্ছে।
তাই বিশেষ কম্বিং অপারেশনের আওতায় পৌরসভাস্থ ১নং ওয়ার্ডের বাইশপুর এলাকা থেকে ভ্রাম্যমান আদালতে ৬টি অবৈধ জাগের স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে। অতঃপর জাগে ব্যবহৃত জব্দকৃত বাঁশ উন্মুক্ত নিলামে বিক্রয় করা হয়। কিন্তু নদীর বিভিন্ন এলাকা জুড়ে এখনো প্রায় অর্ধ শতাধিক অবৈধ জাগ রয়েছে। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী অসাধু মাছ ব্যবসায়ী ও জেলে সম্প্রদায় এসব জাগ স্থাপনের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
১২ ফেব্রুয়ারী বিকেলে ধনাগোদা নদীতে ট্রলারযোগে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) লিটন চন্দ্র দে।
এসময় তিনি বলেন, নদীর জলসীমায় জাগ স্থাপন সম্পূর্ণ অবৈধ। জাগ অপসারণের জন্য সরকারের কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জাগের কারণে দেশীয় প্রজাতির নানা মাছ ও পোনা নিধন হচ্ছে। এ ছাড়া নৌ-চলাচলেও বিঘ্ন ঘটে থাকে। মৎস্য আইন বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসনের এরূপ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
জানা যায়, জাগের অবৈধ স্থাপনা তৈরির ফলে মাছের পোনা উৎপাদন বিনষ্ট হচ্ছে। প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে মা-মাছও। ইতিমধ্যেই বিলুপ্তির পথে সিলন, দেশি সরপুঁটি, ঘাউরা, বাঘাইড়, দেশি পাঙ্গাশ, দেশীয় মহাশোল, মধু পাবদা, পোয়া, ফাউস্যা, তেলে গুলশা ও সাদা ঘনিয়া। এখন বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউস, মহাশোল, ঘনিয়া, বাটা, পুঁটি, বোয়াল, চিতল, গ্রাস কার্প, আইড়, গজার, শোল, টাকি, শিং, মাগুর, কই, ফলি, পোয়া, বাইম, কাকিলা, চাপিলা, কেঁচকি, ট্যাংরা, বাচা, ফাইল্যাসহ নানা প্রজাতির মাছ।
জেলেরা জানান, নদীর নির্দিষ্ট স্থান ঘিরে গাছের ডালপালা ফেলে জাগ তৈরি করা হয়। এরপর সেখানে দেওয়া হয় পর্যাপ্ত খাদ্য। এতে প্রায় এক কিলোমিটার দূর থেকে জাগে মাছ আসে। সেখানে পর্যাপ্ত খাদ্য ও গাছের ডালপালার আশ্রয় নেয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। পরে বড় জাল দিয়ে ঘিরে এ মাছ শিকার করা হয়। এতে ওই জালের মধ্যে মা–মাছ ও অনেক পোনা আটকা পড়ে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস, ক্ষেত্র সহকারী আশরাফুল ইসলাম সহ মতলব দক্ষিণ থানার পুলিশ সদস্যবৃন্দ।