সুমন আহমেদ : আদম বেপারির ফারুক তালুকদারের খপ্পরে পরে সর্বস্ব হারিয়ে নি:শ্ব হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের সাদুল্লাপুর গ্রামের আশেক আলীর ছেলে ইমরান হোসেন। সেই আদম বেপারি ফারুক তালুকদারের বিরুদ্ধে চাঁদপুরের বিজ্ঞ বিচারিক আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ইমরান হোসেন। মামলার আসামীরা হলেন একই গ্রামের এমদাদ তালুকদারের ছেলে ফারুক তালুকদার ও তার ভাই রোবেল তালুকদার।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আদম বেপারি ফারুক তালুকদার ও তার ভাই রোবেল তালুকদার দীর্ঘদিন থেকে গুডলিং ট্রাভেল এজেন্সি, নয়াপল্টন, ঢাকা এর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে লোক পাঠাত মর্মে একই গ্রামের আশেক আলীর ছেলে ইমরানের কাছ থেকে সৌদি আরবে নিবে বলে ৫ লক্ষ্য টাকা চুক্তি করে। ইমরান হোসেন চুক্তি মোতাবেক সেই ৫ লক্ষ টাকা পরিশোধ করে।
ইমরান হোসেনকে সেলসম্যান হিসাবে সৌদি আরবের জেদ্দায় লুলু হাইপার ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে ৪০ হাজার টাকা বেতন, থাকা ফ্রি এবং খাওয়া নিজে বহন করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়।
টাকা পরিশোধ ও সৌদি আরবে নেওয়ার চুক্তির সময় ইমরান হোসেনের বাবা আশেক আলী, ইমরানের স্ত্রী মাহমুদা, একই গ্রামের কামাল হোসেন বকাউল, মোরশেদ আলম বকাউল, চাঁন মিয়া প্ৰধান, রাজ্জাক লস্কর, আঃ মান্নান প্রধান, সাবেক ইউপি সদস্য আলমগীর বেপারি, কবির মেম্বার ,ফারুক মাষ্টার, মানিক সরকার ও আমিয়াপুর গ্রামের ভুলু মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
গত ৬ অক্টোবর ২০২১ তারিখে প্রতারনার মাধ্যমে ইমরান হোসেনকে সৌদি আরব পাঠালে বিভিন্ন স্থানে আটক রেখে শারীরিক নির্যাতন,ও অনাহারে ৯ মাস কাটান। তারপরও বৈধ কাগজপত্র করে না দেওয়ায় সৌদি পুলিশ ইমরান হোসেনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। ৪১ দিন জেল হাজতবাসের পর তাকে ১৭ জুলাই ২০২২ইং তারিখে সৌদি কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে ফেরৎ পাঠায়।
পরে স্থানীয় শালিশ বসলে উক্ত ঘটনার বিবরন দিলে এবং ৫ লক্ষ টাকা ফেরৎ চাইলে প্রতারক ফারুক তালুকদার ও রোবেল তালুকদার ঘটনা অস্বীকার করে এবং টাকা ফেরৎ দিতে দিবেনা বলে জানায়।
এমনকি টাকা দাবী করলে প্রশাসনের মাধ্যমে ইমরানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে এবং সন্ত্রাসী দিয়া খুন করে ফেলবে বলেও প্রকাশ্য হুমকি দেয়।
তাই ইমরান ১লা আগষ্ট ২০২২ তারিখে বিজ্ঞ আদালতে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসন আইনের ৩১(খ)/৩৩/৩৬ ধারায় মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে মামলার বাদী ভুক্তভোগী ইমরান জানান, স্বপ্ন ছিল অনেক টাকা ইনকাম করে সংসারে হাসি ফোটাবো এবং পবিত্র মক্কা ও মদিনা জিয়ারত করবো। প্রতারক ফারুক তালুকদার ও রোবেল তালুকদার সেই স্বপ্ন ধুলীসাৎ করে দিল। আমি ঋন নিয়ে বহু কস্ট করে টাকা দিয়েছি,। এখন আমি ঋন পরিশোধ করবো কিভাবে? সংসার চালাবো কি করে?এই প্রতারকদের খপ্পরে পরে আজ আমি নিঃশ্ব।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ফারুক তালুকদার বলেন, আমার লাইসেন্স নাই। আমি একটি ট্রাভেল এজেন্সি অফিসের মাধ্যমে ইমরানকে সৌদি আরবে পাঠাই। যেই কোম্পানিতে পাঠাই সেই কোম্পানিতে কয়েক মাস কাজ করেছে। কিন্তু ইমরান বেশি টাকা উপার্জনের আশায় অন্যত্র পালিয়ে যায়। ফলে তার নতুন করে ভিসা করানো সম্ভব হয়নি। তাই পুলিশ তাকে আটক করে দেশে পাঠায়,এতে আমার কোন দোষ নেই।