মমিনুল ইসলাম: চলতি মৌসুমে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে। সেইসঙ্গে বাম্পার ফলন হওয়ায় কমেছে দাম। বিগত বছর গুলোতে ভুট্টার দাম ভাল পাওয়ায় এবছরও এ উপজেলায় অধিকাংশ কৃষক ভুট্টা চাষ করেছেন। এবছর ভুট্টার ভাল আবাদ হলেও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় চাষীদের এখন মাথায় হাত।
অনেক কৃষক সমিতি থেকে লোন তুলে ভুট্টা চাষ করে ভাল ফলন পেলেও দেখছে না লাভের মুখ। কৃষকেরা বলছেন লাভ তো দূরের কথা, এখন লোন আর সুদের টাকা তারা পরিশোধ করতে দিশেহারা।
বিভিন্ন সময় মাঠে ফসলের লোকসানের পর ভুট্টা চাষে কিছু লাভের স্বপ্ন ছিল কৃষকের মনে। সেই ভুট্টাতেও তারা সঠিক দাম পাচ্ছেন না।
গত বছর এ সময়ে শুকনা ভুট্টা ১৩শ থেকে ১৩শ ৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি হলেও এবছর চলতি মৌসুমি শুরুতে ভুট্টার দাম কমেছে মণ প্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, লাভজনক হওয়ায় কয়েক বছর ধরে ধান-আলু আবাদ বন্ধ রেখে ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। প্রতিনিয়ত বাড়ছে এর আবাদ। এবার এ উপজেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ২৯০ হেক্টর জমি হলেও শেষ পর্যন্ত হয়েছে ২ হাজার ৬৮২ হেক্টরে। আর উৎপাদন লক্ষ্য ২০ হাজার ৫০০ টন।
উপজেলার দেওয়ানজিকান্দি গ্রামের চাষি হেদায়েত উল্ল্যা প্রায় ৬ বিঘায় ভুট্টা চাষ করেছেন। কিন্তু দাম কমে যাওয়ায় এখন বিপাকে পড়েছেন। বর্তমান দরে ভুট্টা বিক্রি করলে লোকসান নেই, তবে মুনাফা হবে না। এজন্য সামান্য কিছু জমির ভুট্টা তোলা হলেও অন্যগুলো ফেলে রাখা হয়েছে দরবৃদ্ধির আশায়।
ওঠারচর গ্রামের কৃষক আতাউর রহমান সরকার ৪ বিঘায় ভুট্টা লাগিয়েছেন।
গতবছর প্রতি মন সর্বোচ্চ ১ হাজার ৩৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন হচ্ছে ৯৫০ টাকায়। তাই ক্ষেত থেকে ভুট্টা তুলতে সময় নিচ্ছেন।
নাউরী গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন প্রায় ৮০ শতাংশ জমির মধ্যে ৫০ শতাংশ জমির ভুট্টা তুলে ৮৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছেন। সরকারিভাবে ভুট্টার দাম নির্ধারণ হয় না। তাই ভুট্টার ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি থেকে কৃষক বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানান তিনি।