সুমন আহমেদ : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় মিষ্টি আলু চাষে সফল হয়েছে নতুন উদ্যাক্তা মহসিন মোল্লা। উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে বারি মিষ্টি আলু-৪ এর চাষ হয়েছে। উপজেলার গজরা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের মো.মহসিন মোল্লার জমিতে কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রদর্শনী বাস্তবায়িত হয়েছে।
প্রদশর্নের উদ্যাক্তা মহসিন মোল্লা জানান, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের ১১ তারিখে বারি মিষ্টি আলু -৪ এই জাতের আলু চাষ করেন।
তিনি জানান, উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের একটি ২০ শতাংশ জমিতে মিষ্টি আলু চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বাড়ি-৪ জাতের মিষ্টি আলু চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
তিনি আরো জানান,২০ শতাংশ জমিতে আগে অন্য ফসলের আবাদ করতেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফলন পেতেন না। এ বছর কৃষি অফিসের পরামর্শে কৃষি অফিস থেকে মিষ্টি আলুর বীজ সংগ্রহ করে আবাদ করেছেন। ফলন হয়েছে ৫০ মণ। যেখানে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো বিক্রি হবে।
মিষ্টি আলু রোপণের আগে জমি প্রস্তুত করতে পাওয়ার টিলার দিয়ে তিনটি চাষ করেছেন। এরপর জৈব সার, জিপসাম সার, ইউরিয়া, জিংক ও পটাশ দেয়া হয়। যেখানে গোবর ৪০ ভার (৮০ ঝুড়ি), জিপসাম সার ৩৫ কেজি, জৈবসার ৪০ কেজি, জমি চাষাবাদের আগে ও সেচের সময় দুই দফায় ইউরিয়া সার ৩০ কেজি, ডিএপি ৩০ কেজি এবং সেচ একবার দেওয়া হয়েছে। চারা কেনাসহ সাড়ে ৭ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। জমি চাষের ১৫ দিন পর চারা রোপণ করা হয়। কৃষি অফিস থেকে মিষ্টি আলু বারী-৪ জাতের বীজ সংগ্রহ করা হয়।
মহসিন মোল্লা আরো জানান, তার ২০ শতক জমিতে মিষ্টি আলুর ফলন হয়েছে ৫০ মন। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা। খরচ হয়েছে ৭ হাজার টাকা। লাভ হয়েছে ৪৩ হাজার টাকা, যা অল্প সময়ে অন্য কোন ফসল চাষ করে এতো বেশি লাভ করা সম্ভব না।
মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সালাউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে মিষ্টি আলু ব্যাপক জনপ্রিয় একটি ফসল। এটি ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাসসহ প্রয়োজনীয় খনিজ লবণের একটি ভালো উৎস। মিষ্টি আলু বারি-৪ একটি উচ্চ ফলনশীল মিষ্টি আলুর জাত। তাছাড়া এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ যা ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে। এই জাতের আলুতে অ্যান্থোসায়ানিন উপাদান আছে। অ্যান্টিঅক্সিডেশন এবং লিভার সুরক্ষা করতে এই জাতের আলু সহায়ক ভূমিকা রাখে।
ব্যাপক পুষ্টি গুণের কারণে বিদেশেও রয়েছে এই জাতের ব্যাপক চাহিদা। তাই এই জাতের মিষ্টি আলুর আবাদ সম্প্রসারণের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে উচ্চ পুষ্টি গুণসম্পন্ন রপ্তানীযোগ্য মিষ্টি আলু বারি-৪ এই জাতের আবাদ বৃদ্ধির জন্য নানামুখী পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে।