সুমন আহমেদ : বাবা মায়ের পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করে স্বামী -সংসার নিয়ে সুখে-শান্তিতেই দিন কাটছিল মতলব উত্তরের ইসলামাবাদ ইউনিয়নের বাবুল মিয়ার মেয়ে স্বপ্নার। বিয়ের পর স্বামীর বাড়ীতে থাকতেন, গ্রামে যখন যে কাজ পেত সেই কাজই করতো বাগানবাড়ী ইউনিয়নের ফিরোজ আহমেদ সরকারের ছেলে সোহেল রানা, কাজের কারনে দিনের অধিকাংশ সময় পার করতে হয় বাসার বাইরে।
বৃদ্ধ শশুর-শাশুরীর দেখা শোনা, বাড়ীর সকল কাজ করতো সোহেলের স্ত্রী সপ্না আক্তার, হঠাৎ করে সোহেল তার আগের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার প্রিয়ার সাথে যোগাযোগ শুরু করে, রাবেয়া ও সোহেলদের আগের সংসারে রয়েছে ৬ বছরের পুত্র সন্তান। ছেলে নাকি তার মাকে দেখার জন্য কান্না কাটি করে সেই সুবাধে সোহেল রানা পুত্র সন্তানকে নিয়ে যায় আগের স্ত্রী রাবেয়ার কাছে।
দিনে দিনে এর গভীরতা বাড়তে থাকে সোহেল ও রাবেয়ার। সারাদিন বাড়ীতে সকল কাজ কর্ম শেষ করে বসে থাকে সপ্না, সোহেল রানা বাসায় এসে ঠিকমতো কথাও বলতে চান না। কোনো কিছু জানতে চাইলেও উত্তর দিতে চান না। সারাক্ষণ ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। কার সঙ্গে এত কথা জানতে চাইলে স্ত্রীকে ছয়-নয় বোঝানোর চেষ্টা করেন সোহেল। এভাবে বেশ কিছুদিন চলতে থাকে।
হঠাৎ স্বামীর এমন পরিবর্তন সপ্নার মনে সন্দেহের দানা বাঁধে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন স্বামী আগের স্ত্রী বাগানবাড়ি ইউনিয়নের রমিজ উদ্দিন সরকারের মেয়ে রাবেয়ার সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন।
নির্দোষ স্বপ্না স্বামীর কাছে এমনটি কখনোই আশা করেনি। তাই মেনে নিতে পারেনি স্বামীর পরকীয়া।
রাবেয়া আক্তার প্রিয়া ও সোহেল রানার পরকীয়ার সপ্না আক্তারের সোনালী সংসার ভেঙে খান খান হয়ে যায়। স্বপ্না আক্তার সোহেল রানার বেপরোয়া চলাফেরা ও সঠিক সময়ে বাসায় না আসার কারন জানতে চাইলে স্বপ্না আক্তারকে মারধর করেন স্বামী সোহেল রানা, রাবেয়ার সাথে পরকীয়া ও মারধরের ঘটনা জানান শশুর-শাশুরীকে।
কিন্তু সোহেলের বিচার না করে উল্টো স্বপ্নাকে বলা হয়, ওর আগের সংসারে একটা ছেলে আছে সেই মায়া হয়তো ছাড়তে পারে নাই সোহেল, তুমি বউ চুপ থাকো, ওর যা মনে চায় তাই করবে, তুমি সংসার করলে থাকো না হয় চলে যাও। এই কথা শুনে স্বপ্নার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। স্বপ্নার উপর বাড়তে থাকতে নির্যাতন, বলা হয় টাকা নিয়ে আসো তোমার বাবার বাড়ী থেকে, স্বপ্না চলে যায় বাবার বাড়ীতে, যাওয়ার কয়েকদিন পর সোহেল রানা ডিভোর্সের কাগজ পাঠিয়ে দেয় স্বপ্নার বাবার বাড়ীতে।
স্বপ্না আক্তার বলেন, আমি জানতাম না সোহেল বিবাহিত ও আগের সংসারের একটি পুত্র সন্তান আছে, মা-বাবার পছন্দেই বিয়েতে রাজী হই।
বিয়ের কয়েকদিন পর জানতে পারি আমার স্বামী সোহেল রানা তাদের পাশের গ্রামে বিয়ে করেছিলো, তাদের মাঝে কি নিয়ে ঝামেলা হওয়ার কারনে ডিভোর্স হয়ে যায়। এখন ডিভোর্স হওয়া স্ত্রী রাবেয়ার সাথে আবার ও পরকীয়া করবে তাহলে আমাকে কেনো বিয়ে করলো,আমার জীবনটা কেনো নষ্ট করলো? রাবেয়ার পরকীয়ার কারনে আমার সুখের সংসার তছনছ হয়ে গেলো।
আগের স্বামী সোহেল রানার সাথে পরকীয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রাবেয়া আক্তার প্রিয়া বলেন, আমাদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে, মাঝে মাঝে ছেলে আমাকে দেখার বাহানা করলে ওর বাবা নিয়ে আসে। এই ছাড়া সোহেলের সাথে আমার এখন আর কোন সম্পর্ক নেই আমাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে।
এ সব বিষয়ে স্বপ্নার বাবা-মা বলেন, সোহেল আগের স্ত্রীর সাথে পরকীয়া করেন, তার প্রতিবাদ করায় আমার মেয়েকে মারধর করে, সোহেল কি যেন ব্যবসা দিবে তার জন্য টাকা চায়, টাকা না দিতে পারলে আমার মেয়েকে ডিভোর্স দিয়ে দিবে বলে জানান। স্বপ্না টাকা নেওয়ার জন্য আমাদের বাড়িতে আসলে স্বপ্নার স্বামী সোহেল রানা কয়েকদিন পর ডিভোর্সের কাগজ পাঠিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে চাঁদপুর আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী স্বপ্না আক্তার।