সুমন আহমেদ : শীতের পিঠাপুলি বাঙালির আদি খাদ্য সংস্কৃতির একটি অংশ। বাংলার চিরায়ত লোকজ সংস্কৃতিতে পিঠার বিশেষ স্থান দখল করে আছে।
প্রতিবছরই শীতকালে পিঠা তৈরির ব্যস্ততা চোখে পড়ে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে বাড়িতে বাড়িতে ধুম পড়ে যায় হরেক রকমের পিঠা বানানোর। কুয়াশাচ্ছন্ন ভোর বা সন্ধ্যায় গাঁয়ের বধূরা চুলোর পাশে বসে পিঠা তৈরিতে কাটান ব্যস্ত সময়।
বিভিন্ন ধরনের পিঠার প্রচলন রয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। তবে রাস্তার পাশের পিঠার দোকানগুলোতে কয়েক ধরনের পিঠা পাওয়া যায়। এরমধ্যে রয়েছে ভাপা পিঠা, নকশি পিঠা, চিতই পিঠা ডিম-চিতই পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা ইত্যাদি।
চাঁদপুরের মতলব উত্তরে রাস্তায় রাস্তায় পিঠা বানিয়ে বিক্রি করেন বিক্রেতারা। পিঠা তৈরি করে সংসার চালাতে হয় অনেকেরই।
একেক ধরনের পিঠার দাম একেক রকম। সাধারণত চিতই পিঠা দশটাকা, ডিম-চিতই পিঠা ২৫ টাকা ও ভাপা পিঠা ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দেখা যায়, চালের গুঁড়া, নারকেল, খেজুরের গুড় দিয়ে বানানো হয় ভাপা পিঠা। গোল আকারের এ পিঠা পাতলা কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে ঢাকনা দেয়া হাঁড়ির ফুটন্ত পানির ভাপ দিয়ে তৈরি করা হয়। এ কারণেই এর নাম ভাপা পিঠা।
এদিকে চালের গুঁড়া পানিতে গুলিয়ে মাটির হাঁড়িতে বিশেষ উপায়ে তৈরি করা হয় চিতই পিঠা। অতি সাধারণ এই পিঠাটি ঝাল শুঁটকি ভর্তা বা সরিষা বাটা দিয়ে খেতে খুবই মজা।
তাই চিতই পিঠা বিক্রি হয় শুটকি, মরিচ, ধনে পাতাসহ হরেক রকমের ভর্তা দিয়ে।
গ্রামাঞ্চলে শীতের পিঠা তৈরি করে উৎসবের সৃষ্টি হয়। তবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও শীতের পিঠার উৎসব পালন করে।
মতলব উত্তরে ছেংগারচর বাজার, সুজাতপুর বাজার, নতুন বাজার,কালিপুর বাজার, কালির বাজার, সাহেব বাজার,গজরা বাজার, অলিপুরসহ প্রায় প্রতিটি বাজার ও রাস্তার পাশেই চোখে পড়ে অস্থায়ী পিঠার দোকান। প্রতি শীতেই এসব দোকান বসে থাকে।
ছেংগারচর বাজারে পিঠা ব্যবসায়ী মিলন জানান, আমি প্রতিদিন সকাল -বিকাল দোকান নিয়ে বসি। বেচাকেনা ভাল হলে দিনে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকার পিঠা বেচতে পারি। এতে করে এক থেকে দেড় হাজার টাকা লাভ হয়।
অলিপুর বাজারে ভাপা পিঠা খেতে আসা ওমর আলী জানান, এই শীতের মৌসুমে পিঠা খেতে ভালোই লাগে, অনেকটা মায়ের হাতের রান্নার স্বাদ পাওয়া যায় এতে।