সাগর আচার্য্যঃ শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে চাঁদপুর জেলা পুলিশের আয়োজনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর (সার্কেল) আসিফ মহিউদ্দিন পিপিএম এর সঞ্চালনায় সভাপতির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার)।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার বাংলাদেশে কোন দূষ্কৃতিকারীদেরকে কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অরাজকতা সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না। দুর্গাপূজায় সবচেয়ে ছোট যে মণ্ডপ থাকে সেখানেও কমপক্ষে লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। আর এর মধ্যে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সিসি টিভির জন্য ২০ হাজার টাকা খরচের কথা মাথায় রাখতে হবে। পূজা মণ্ডপে খারাপ পরিস্থিতির জন্য সকলকে প্রস্তুত থাকতে হবে। পুলিশ সর্বশেষ গুলিটাও কখনও প্রয়োগ করতে চায় না। রাত সাড়ে ১০ টার মধ্যে পূজা শেষ করতে হবে। প্রতিটি মন্ডপে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বিদ্যুতের পাশাপাশি জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশের মানুষদের এখন আর না খেয়ে থাকতে হয় না। আমাদের সামর্থ্য থাকা স্বত্তেও আমরা প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করিনা। প্রয়োজন হয়না বলে ক্রয় করা হয়না কিন্তু নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পূজা মণ্ডপে সিসিটিভি স্থাপনের বিষয়টি জোরালোভাবে দেখতে হবে। সবচেয়ে প্রাচীন ও বড় ধর্মীয় উৎসব হলো শারদীয় দূর্গাপূজা। আপনারা বললে পল্লীবিদ্যুতের কর্মীরা বিদ্যুতের লাইন গুলো চেক করে দিয়ে আসবে। স্বেচ্ছাসেবকরা ডিউটি সঠিকভাবে করেছে কিনা তা দেখার জন্য রেজিস্ট্রার খাতা দেয়া হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সেই সময় যে স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্বে ছিল তাকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসবো। সাথে থানার যে পুলিশ
কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেছিল তাকে ও জবাবদিহিতায় আনা হবে। আপনারা পূজার আয়োজকরা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ফেইসবুক গ্রুপ খুলে আমাদের এডমিন করে দিলে আমরা তাৎক্ষনিক সব মন্দিরের খোঁজখবর রাখতে পারবো। স্বেচ্ছাসেবকদের কে নিদিষ্ট পোষাক ও পরিচয় পত্র দিয়ে দিবেন।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, চাঁদপুর জেলায় এবছর ২১৯ টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। তার মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলায় ৩৬ টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। পৌর এলাকায় ৩১ টি মণ্ডপ। ৫ টি মণ্ডপ ইউনিয়নে। সিসি ক্যামেরা বাধ্যতামূলকভাবে মণ্ডপে স্হাপন করা হবে। একজন করে হলে ও পুলিশ সদস্য মণ্ডপে থাকতে হবে। মডেল থানা থেকে মণ্ডপ গুলোতে রেজিস্টার খাতা দেয়া হয়েছে। একটি পরিদর্শনের ও অন্যটিতে ভলান্টিয়ারদের স্বাক্ষর। পুরান বাজার দাসপাড়া পূজা মণ্ডপে বাড়তি নজরদারি রাখার কথা বলেন বক্তারা। কেননা এ মণ্ডপ থেকে একটি পক্ষ বের হয়ে ভিন্ন ভাবে পাশাপাশি স্থানে আরো একটি পূজা করছে।
হাইমচরে সম্প্রীতি কমিটি করা হয়েছে সকল ধর্মের সমন্বয়ে। যেসব অফিসার মন্দির পরিদর্শনে যাবেন তারা ঐ রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর করতে হবে। শুধু নামে রেজিস্ট্রার রাখলে হবে না। দায়িত্ব পালন সঠিক ভাবে করতে হবে। পূজা শেষে কৃতজ্ঞতা সভা করার প্রস্তাব আনা হয়েছে। তার কারণ হলো সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে পুলিশ প্রসাশন পূজায় সর্বাত্মক সহযোগিতা করে। তাদের কৃতজ্ঞতা জানাতেই এ সভা করার প্রস্তাব দেয়া হয়।
ফরিদগঞ্জে ২০ টি পূজা মণ্ডপের মধ্য ১৮ টি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বাকী ২ টি মণ্ডপেও ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। গত বছর দুষ্কৃতকারীরা হাজীগঞ্জে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছিল।২৯ টি মণ্ডপের মাঝে ২৪ টি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বাকী ৪ টি তে করা হবে। হাজীগঞ্জে গত বছর যে হামলার ঘটনা ঘটেছে তাই এবছর আইন শৃঙ্খলার বাহিনী টহল জোরদার করার জন্য দাবী জানানো হয়।
শাহরাস্তি উপজেলায় শান্তিপূর্ন ভাবে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ১৮ টি মণ্ডপের মধ্যে ১২ টিতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বাকী ৬ টিতে ও ক্যামেরা লাগানো হবে। কচুয়ায় ৪১ টি মণ্ডপে পূজা হবে। ৩৮ টি মণ্ডপে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হবে। ৩ টি মণ্ডপে ঘট পূজা করা হবে। কচুয়া তিনটি জেলার সংযোগ। তাই কচুয়া ঝূঁকিপূর্ণ, এখানে কড়া নজরদারি রাখা প্রয়োজন। কচুয়ার ৪ টি পূজা মণ্ডপ অতি ঝূঁকিপূর্ন , কয়েকটি পূজা মণ্ডপ ঝুকিপূর্ণ।
পূজা আসলে মাদকের বানিজ্য বেরে যাবে। তখন কিন্তু বিষাক্ত মদ তৈরি করা হয়। মণ্ডপে সবাই সচেতন থাকতে হবে। কেউ যেন এ বিষাক্ত
মদ্য পান করে মৃত্যুর পথ যাত্রী না হয়। আপনারা এ বিষাক্ত মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে।
আরো বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) সুদিপ্ত রায়, অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার, জেলা অ্যাডঃ বিণয় ভূষণ মজুমদার, প্রেস ক্লাব সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলন, এন এস আই ডিডি শাহ্ আরমান, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, পিপি অ্যাডঃ রনজিত রায় চৌধুরী, ব্যবসায়ী পরেশ মালাকার, সদর উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক লক্ষণ চন্দ্র সূত্রধর, অফিসার ইনচার্জ আবদুর রশিদ,হাইমচর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক অজয় কৃষ্ণ মজুমদার,হাইমচর থানার অফিসার ইনচার্জ আশ্রাফ উদ্দীন, মতলব দক্ষিণ উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কিশোর কুমার ঘোষ, মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ মহিউদ্দিন মিয়া, মতলব উত্তর উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র দাস, মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ মহিউদ্দিন,ফরিদগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ সভাপতি পরেশ চন্দ্র দাস, ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শহিদুল্যা, হাজীগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রুহিদাস বণিক, হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জোবায়ের হোসেন, শাহরাস্হি পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নিখিল রঞ্জন, শাহরাস্হি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর মান্নান, কচুয়া উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক বিকাশ চন্দ্র সাহা, কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইব্রাহীম খলিল,আনসার ভিডিপির কর্মকর্তা শাকিব, ফায়ার সার্ভিস উপ পরিচালক সাহিদুল ইসলাম, জেলা ডিএনসির পরিচালক এমদাদুল ইসলাম মিঠুন,নৌ পুলিশ এস পি তোফাজ্জেল হোসেন, স্থিরাত্মানন্দজি মহারাজ, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খিস্ট্রান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডঃ বিণয় ভূষণ মজুমদার, পিপি অ্যাডঃ রনজিত রায় চৌধুরী, ব্যবসায়ী পরেশ মালাকার, অজিত সাহা।