অমরেশ দত্ত জয়ঃ শীতের প্রভাব শুরু হতেই চাঁদপুর শহরের অলিতে গলিতে মৌসুমী পিঠাপুলি বিক্রেতাদের দোকানে পিঠা প্রেমীদেরও ভীড় বাড়ছে। বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত জমজমাটভাবে চলছে পিঠাবিক্রি।
২৩ অক্টোবর রোববার বিকালে বাসস্ট্যান্ড, মিশন রোড, হাসান আলীর মাঠ, কালীবাড়ীসহ বেশকিছু স্থান ঘুরে মৌসুমী পিঠাপুলি বিক্রেতাদের দেখা যায়। তারা ভাপা পিঠা, চিতৈ পিঠা, ধুঁই পিঠা এবং গোল্লা পিঠা ৫ টাকা হতে সর্বোচ্চ ২০ টাকা দামে বিক্রি করছেন।
অঙ্গিকার সংলগ্নে বসা মনোয়ারা বেগম নামে এক পিঠা বিক্রেতা বলেন, আমি বেশ কয়েক বছর শীত আসলেই পিঠা বিক্রি শুরু করি। অলস বসে না থেকে পীঠা বিক্রির আয় দিয়ে সংসারে সহযোগিতা করি। প্রতিদিন গড়ে ৫শ’ থেকে ৭শ’ টাকার পীঠা বিক্রি করতে পারি। মানুষ যখন এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পিঠা খেয়ে বলে পিঠা ভালো হয়েছে তখন খুব ভালো লাগে।

মিশন রোডে বসা মোঃ আনোয়ার হোসেন নামে আরেক পিঠা বিক্রেতা বলেন, সারা বছর অন্য কাজ করলেও শীতে আমি শুধু পিঠা বিক্রি করে থাকি। রাস্তার পাশে ভ্যানের ওপর পিঠা বিক্রি করলেও আমরা সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে পিঠা বিক্রি করে থাকি।

কালীবাড়ী পুলিশ বক্সের পেছনে বসা নূরে আলম বেপারী লিটন বলেন, আমি প্রায় ২ যুগ পিঠা বিক্রি করি। শীতের পিঠার মধ্যে আমি শুধু চিতৈ পিঠা বিক্রি করি। আতপ চাউলের গুড়ার সাথে প্রয়োজনমতো ময়দা, পানি ও লবন মিশিয়ে পিঠা তৈরি করি। যা মুখরোচক করতে এর সাথে খাওয়ার জন্য কাঁচা মরিচ,ধনে পাতা, লাল মরিচ, শুকনা মরিচ, শুটকি ভত্তা, জলপাইয়ের চচ ও শর্শে বাটা দেই। ঠান্ডার রোগীরা আমার কাছে বেশি পিঠা খেতে আসে। কেউ এখানে দাঁড়িয়ে খায় আবার কেউ পরিবারের জন্য বাসায় নিয়ে যায়। সরকার যদি আমাদের একটু প্রশিক্ষণ দিতো তাহলে হয়তো আমরা আরও নানা রকমের পীঠাপুলি সুন্দরভাবে তৈরি করতে পারতাম।

পিঠাপ্রেমী সৌরভ, ফেরদৌসসহ আরও অনেকে বলেন, বাড়ীতে লোক না থাকায় বাধ্য হয়েই শখ মিটাতে রাস্তার পাশের এসব ভ্রাম্যমাণ মৌসুমী পিঠা বিক্রেতাদের কাছে ভীড় জমাতে হয়। পিঠা মুখরোচক হলেও এগুলো স্বাস্থ্যসম্মত কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও নিরুপায় হয়ে পিঠা খাচ্ছি। এদের কে নিয়ে সরকারের কাজ করা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করছি।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মোঃ আরিফুল হাসান বলেন, শীতের আবহাওয়ায় শহরের ফুটপাতে বসা মৌসুমী নানা রকমের পিঠা বিক্রেতাদের নিয়ে আমরা দ্রুতই একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা করবো। এতে তারা কিভাবে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পিঠা তৈরি করে তা বিক্রি করতে হয় সে সম্পর্কে ধারণা পাবে। পাশাপাশি ভোক্তাদের সচেতন করতেও আমরা লিফলেট বিতরণসহ নানা কর্মসূচীর উদ্যোগ নিবো।