সংবাদদাতাঃ চাঁদপুরের মতলব উত্তরে গুলিবিদ্ধ বাবু হত্যা মামলার আসামী কাজী মিজান ও তার ভাই মতিন ও হাবিবকে গোলাগোলির সময় তার নিজ বাড়ীতে অবস্থানের একটি সিসিটিভির ফুটেজ গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে এসেছে। ফুটেজ অনুযায়ী ঘটনার স্থল প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। তবে ফুটেজে এদের প্রত্যেকেই হাঁটাহাটি করতে দেখা যায়।
সেদিন কি ঘটেছিলো?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে মতলব উত্তরের বাহাদুর গ্রামে এক প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। ঐ সমাবেশে যোগ দিতে গিলে মায়ার কর্মী সমর্থকদের ওপর প্রতিপক্ষ কর্তৃক হামলা চালানো হয়। আর এতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় বাবু। এতে জহির ও ইমরান নামে আরও ২জন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ঘটনার পর কি হয়েছিলো?
গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বাবু ছিলেন যুবলীগের সক্রীয় কর্মী। আর তাকে হত্যাসহ এই গুলি ছোড়ার ঘটনায় মোহনপুর ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মিজানকে প্রধান আসামী এবং তার ভাই মতিন ও হাবিবসহ ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩০/৪০ জনকে আসামী করে থানায় হত্যা মামলা হয়। মামলার বাদী হচ্ছেন নিহত বাবুর ভাই আমির হোসেন কালু। এরপর কাজী মিজানসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
সিসিটিভির ফুটেজ নিয়ে কাজী মিজানের পরিবারের ধারণা কি?
মামলার এজহার অনুযায়ী ঘটনার যে তারিখ, বার ও সময় উল্লেখ করা হয়েছে। এবং কাজী মিজানসহ অন্যদের যে অপরাধের বর্ণনা করা হয়েছে তা সঠিক নয়। কেননা সিসিটিভির ফুটেজ অনুযায়ী তারা তিন ভাই ওই দিন গোলাগোলির সময়ে নিজ বাড়ীতে অবস্থান করছিলেন। আর তাদের বাড়ী থেকে ঘটনাস্থলের দুরুত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। ফুটেজ অনুযায়ী ওইদিন বিকেল ৩ টা ৪ মিনিটে ১নং আসামী কাজী মিজান তার মোহনপুর বাসবভনে অবস্থান করছে। ২নং আসামী কাজী আব্দুল মতিন দুপুর ২টা ৫৮ মিনিটে তার মোহনপুর বাসবভনে ছিলেন। এছাড়া ৩নং আসামী কাজী হাবিব তার মোহনপুর বাসবভনে বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে অবস্থান করছেন। আর এতেই তার পরিবারের দাবী ওনারা সবাই নির্দোষ।
মোহনপুরের কাজী বাড়ীর বাসিন্দা কাজী গোলাম হোসাইন কি বলছেন,
গোলাগুলির ঘটনা হয়েছে সত্য। তবে এটি মূলত স্থানীয় কালু বেপারী ও রাজ্জাক প্রধানদের পূর্ব শত্রুতাবশত হয়েছে। এতে আমার মনে হচ্ছে কাজী মিজান, তার ভাই মতিন ও হাবিব জড়িত নন এবং তারা ষড়যন্ত্র ও হয়রানির স্বীকার হচ্ছে।
স্থানীয় কিংবা প্রতিপক্ষের উল্লেখযোগ্য কাউকে সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে যুক্তিখন্ডনমূলক এখনো কোন মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। এই সিসিটিভির ফুটেজের সত্যতা কতটুকু কিংবা কারো কোন সন্দেহ আছে কিনা? এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায়ও এসব নিয়ে কোন সমালোচনা এখনো কেন আসেনি? এ প্রশ্ন সচেতন মহলের?
এ ঘটনায় পুলিশ কি বলছে?
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেছেন, আমরা গোলাগুলির ঘটনায় গুলি কে বা কারা করলো তা তদন্ত করে দেখছি। মামলায় আরো যারা আসামী রয়েছে তাদেরকে গ্রেফতার ও তদন্ত শেষে সব বলা যাবে।
উল্লেখ্য, বাবু হত্যার পর তার লাশ দাফনের পূর্বে কাজী মিজান ও তার ভাই মতিন এবং হাবিব সহ ঘটনায় জড়িত তাদের সহযোগীদের ফাঁসির দাবীতে মোহনপুরে মানববন্ধন করে এবং কুশ পুত্তলিকা দাহ করে মায়ার অনুসারী ও স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ।