মমিনুল ইসলামঃ ভয়াল ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহত চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মোঃ আতিকের সন্তানদের স্বচ্ছলভাবে জীবনযাপন করতে সরকারি চাকুরি প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর নিকট আকুতি জানিয়েছেন তার পরিবার। অন্যথায় তাদের জীবনধারণ কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে বলে তারা জানিয়েছেন।
২০ আগস্ট সোমবার বিকালে সরজমিনে উপজেলার পাচআনি গ্রামে গেলে গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে কান্নারত কন্ঠে তারা এই দাবী জানিয়েছেন।
জানা যায়, মোঃ আতিকুর রহমান ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ঢালাই শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ২০০৪ সালের ঐ ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় তিনি যোগদান করেছিলেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সেদিন তাকে জীবন দিতে হয়েছিল ঘাতকদের গ্রেনেড হামলায়।
স্থানীয়রা জানান, আতিকের ৪ সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে তানিয়া আক্তার (২৬) আর্থিক দৈন্যদশার জন্য এইচএসসি পাসের পর লেখাপড়া করতে পারেনি। পরে তার বিয়ে হয়ে যায়। বড় ছেলে মিথুন (২৪) নারায়নগঞ্জে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীরত এবং স্ত্রীকে নিয়ে সেখানেই বসবাস করেন। মেজ ছেলে মিন্টু (২৩) ও ছোট ছেলে শাকিব (১৯) জীবিকার তাগিদে একটি কোম্পানীতে চাকুরী করেন। আর এদের আয় দিয়ে কোনমতে সংসার চালাচ্ছেন আতিকের বিধবা স্ত্রী লাইলী বেগম (৫৫)।
আতিকুর রহমানের মেয়ে তানিয়া আক্তার বলেন, আমাদের এখন সরকারি চাকরির প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের ভাইবোনদের সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দিতেন। তাহলে আমরা একটু স্বচ্ছলভাবে জীবনযাপন করতে পারতাম।
আতিকের স্ত্রী লাইলী বেগম হামলাকারীদের খুনি আখ্যায়িত করে তাদের ফাঁসির দাবী রেখে জানান, মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের ভুলে যাননি। তিনি প্রথমে ১ লাখ, তারপর সঞ্চয়পত্র ১০ লাখ, এফডিআর এর জন্য ২০ লাখ এবং নগদ আরও ৫ লাখ টাকা কয়েক দফায় আমাদের দিয়েছেন। তা দিয়ে কোনমতে চলছি। এখন প্রধানমন্ত্রীর কাছে সন্তানদের জন্য একটা সরকারির দাবী জানাচ্ছি। আশা করছি তিনি এ বিষয়ে আমাদের আশাহত করবেন না।
আতিকের বৃদ্ধা মা খোরশিদা বেগম বলেন, সন্তানহারা হয়ে ছেলের জন্য শুধু কেঁদে কেঁদে বুক ভাসিয়ে যাচ্ছি। আজ যদি আমার ছেলে বেঁচে থাকতো তাহলে হয়তো চৌচালা একটা ঘরে আমাদের থাকতে হতোনা। আমি ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিউনিতে গ্রেনেড হামলাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি। মরার আগে দ্রুতই যাতে আমি আমার সন্তানের হত্যাকারীদের ফাঁসি দেখে যেতে পারি সেই আশায় এখন দিন গুনছি।