রাজীব চন্দ্র শীলঃ চাঁদপুরের কচুয়ায় খোলা মাঠে গরু বাঁধার মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘু পরিবারকে নির্যাতন করায় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ৯নং ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামে।ঘটনা প্রসঙ্গে শীতল বাবুর (স্ত্রী)বকুল রানী,(ভাই) হীরাপদ সরকার,প্রতিবেশী বিউটি রানী,প্রফুল্ল রানী,মিলতী রানী সহ একাধিক লোক জানান,মাঠে গরু বাছুর বেঁধেছে কেন?সেই গরু-বাছুর জমির ধান খেয়েছে।শুক্রবার এমন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঝগরা বাঁধায় পার্শবর্তী মুন্সী বাড়ীর রাকিব।পরে ওই রাকিব নামের এক গ্যাং লিডার হীরাপদ সরকারের মাথা ফাঁটিয়ে পালিয়ে যায়।এরপর নলুয়া বাজারের আজিজ ডাক্তারের কাছে নিয়ে হীরাপদকে চিকিৎসা করানো হয়েছে।এই ঘটনায় ন্যায় বিচারের প্রত্যাশায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।স্থানীয় বিউটি রানী বলেন,এই গ্রামের রাকিব তার সাথে রিপন,বক্কর,হাসান,মকবুল,মাহবুব, মাসুম সহ ১০-১২জন ছেলে মিলে একটা অপরাধ গ্যাং তৈরী করেছে।এই গ্যাংয়ের সদস্যরা আমাদের বাড়িতে এসে প্রায়ই বিভিন্ন অজুহাতে অত্যাচার নির্যাতন করে।বছর খানেক আগে তারা আমার মেয়ের বিয়ের সময় চাঁদা দাবি করে।না দেওয়াতে বিয়ের কিছুদিন পর আমার মেয়ে এবং মেয়ের জামাই আসলে তাদেরকে ছুঁতো দেখিয়ে মারধর করেছে।ওদের কাছে আমরা সংখ্যালঘু বলে অসহায়। প্রফুল্ল রানী বলেন,এই রাকিব গ্যাংটি আমার গাছের ফল মূল জোরপূর্বক নিয়ে যায়। ডাক দিলে তেরে মারতে আসে। মিলনী রানী বলেন,আমার ছেলে যখন বিদেশ থেকে বাড়িতে এসেছিলো।তখন ওরা আমার ছেলের কাছে বিশ হাজার টাকা চাঁদাদাবী করেছিল! না দেওয়াতে বিভিন্ন ভাবে আমাদের উপর অত্যাচার নির্যাতন করে এবং এখনো করে যাচ্ছে।ওরা মূলত হিন্দু বিদ্বেষী।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন বৌ ও যুবতী মেয়েরা বলেন,আমরা যখন পুকুরে স্নান করতে যাই।তখন এই গ্যাংয়ের লোকেরা পুকুরের পাড়ে এসে দাড়িয়ে আমাদের দিকে কু-নজরে তাকিয়ে থাকে।চলে যেতে বললে নানা অশ্লীল ভাষায় আমাদের গালমন্দ করে।তারা আরো বলেন,গত ১৪ই এপ্রিল প্রফুল্লরানীর কলা গাছ থেকে এই রাকিব গ্যাং জোড়পূর্বক কাঁচা কলা পেরে গাছের নিচে বসে। পরে লবন মরিচ দিয়ে খাওয়া শুরু করে।ডাক দেওয়াতে উল্টো গাছের সব কাঁচা কলা ছিড়ে নিয়ে যায়।গ্রামের পলাশ চন্দ্র সরকার,রিপন চন্দ্র সরকার সহ বেশ কয়েকজন জানান,এই গ্যাংয়ের সদস্যরা ২০১৮ সালে লক্ষ্মী পূজায় ওই বাড়িতে এসে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে!পরে চাঁদা না দেওয়াতে পূজা বন্ধ করে দেয়।পরে স্থানীয় চেয়্যারম্যানের মধ্যস্ততায় ঘটনাটি মিমাংসা হয় এবং ভবিষ্যতে এই কাজ করবে না বলে ওরা মুচলেকা দেয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক মুসলিম এক বৃদ্ধ বলেন,এরা ১০-১২জন মিলে একটা গ্যাং তৈরী করে এই হিন্দু বাড়িটিতে প্রায়ই অত্যাচার চালায়।আমরা এই নিয়ে অনেক বার সালিশ দরবার করেছি। কিন্তু ওরা কাউকে পাত্তা দেয় না আর কারো কথাও শুনে না।ওরা চরম হিন্দু বিদ্বেষী এবং ওদের নজর ভিন্ন। ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে ফোন করলে উনারা ফোন রিসিভ করেননি।তবে লোকমারফতে জানা যায় ত্রাণ বিতরণে ব্যস্ত বলেই ফোন রিসিভ হয়নি।১৮ই এপ্রিল শনিবার এ ব্যপারে অভিযোগ ওঠা গ্যাং লিডার রাকিবের সাথে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।তাই ঘটনাটি কচুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপায়ন দাস শুভকে অবহিত করলে তিনি জানান,করোনা ভাইরাসের মূহুর্তে এই ঘটনা খুবই দুঃখ জনক।আমি ভিকটিমকে বলেছি থানায় গিয়ে একটি অভিযোগের মাধ্যমে আইনানুগ আশ্রয় নিতে।এ ব্যপারে কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়ালী উল্যাহ ওলির বলেন,ঘটনাটি ওরা থানায় এসে বিস্তারিত বলেছে এবং লিখিত অভিযোগ নিয়েছি।ঘটনা দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
