অমরেশ দত্ত জয়ঃ মাত্র ১ মিনিটেই স্বয়ংক্রিয় মেশিনে চোখের সামনে তৈরি হচ্ছে সফট কুলফি মালাই। যা একটি ওয়ান টাইম গ্লাসে নিচ্ছে দোকানের কর্মচারী। এরপর এটি খাওয়ার জন্য এতে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে একটি চামচ। আর এরপরই চামচ দিয়ে নেড়েচেড়ে এই আইসক্রিমটির স্বাদ নিচ্ছে ভোজন রসিকরা। আর এভাবেই চাঁদপুর জেলার সাথে সুস্বাদু খাবারের তালিকায় বছরের পর বছর ধরে নাম দখল করে নিয়েছে ওয়ান মিনিটের এই সফট কুলফি মালাই।
৩ জুন সোমবার সকালে চাঁদপুর শহরের কালীবাড়ি মোড়ের প্রেসক্লাব সড়কে গেলে ওয়ান মিনিট দোকানটিতে সফট্ কুলফি মালাই আইসক্রিম খেতে ভোজন রসিকদের ভীড় দেখা যায়।
জানা যায়, আনুমানিক ১৮৯৪ সাল অর্থাৎ ১৩০ বছর পূর্বে সম্পদ সাহা এই ওয়ান মিনিট দোকানটি প্রতিষ্ঠা করেন। যেখানে হরেক রকমের মিষ্টি, সন্দেশ, দধি, ক্ষীর বিক্রি হতো। পরে ১৯৮২ সাল হতে এখানে মিষ্টির পাশাপাশি আইসক্রিম বিক্রিও শুরু করা হয়। স্বাদ বাড়াতে প্যাকেটের গুরা দুধের সাথে বিশুদ্ধ পানি, চিনি ও ফুড গ্রেড ফ্লেভার ব্যনানা মিশিয়ে পরিমানমতো প্রথমে মেশিনে ঢালা হয়। এরপর বৈদ্যুতিকভাবে মেশিনে মাত্র ১ মিনিটেরও কম সময়ে চোখের সামনেই এই আইসক্রিমটি তৈরি করা হয়।
ওয়ান মিনিট দোকানের কর্মচারী সুনীল চন্দ্র দাস বলেন, আমি এই দোকানে ৩ যুগেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছি। মালিক ভালো হওয়ায় অন্য দোকানে কখনো যাইনি। পরিবার পরিজন নিয়ে দূর দরান্ত থেকে সারা বছরই দোকানটিতে আইসক্রিম খেতে ভীর লেগে থাকে। চাহিদা মেটাতে দিনে ১০/১২ কেজির মতো দুধ লাগে। আর দ্রুত আইসক্রীম হাতে পৌছাতে দোকানটিতে আমরা সিফ্ট হিসেবে ৫/৬ জন কর্মচারী নিয়মিতই কাজ করছি।
দোকানটির কর্মচারী রাম চন্দ্র সিংহ বলেন, আইসক্রিমটি নরম এবং দারুন স্বাদের। বিদ্যুতের সাহায্যে মাত্র এক মিনিট সময় ব্যয় হয়। এর জন্য রয়েছে সয়ংক্রিয় মেশিন। যা ভারত থেকে আনা হয়েছে। মাত্র ৫০ টাকায় কেনা এই ওয়ান মিনিটের সফট কুলফি মালাই আইসক্রিমের ভক্ত হয়েছে তারকা থেকে সাধারণ শ্রেণী পেশার সববয়সী মানুষ। সাধারণত ছুটি দিনে দোকানটিতে উপচে পড়া ভীর দেখা যায়।
ভোজন রসিক কন্ঠ শিল্পী আগুন খান বলেন, ওয়ান মিনিটের এই সফট আইসক্রিমটির স্বাদ দারুন। তাই যতবার চাঁদপুরে আসি ওয়ান মিনিটের এই আইসক্রিমটি আমি খেয়েই থাকি।
ওয়ান মিনিটের সত্ত্বাধিকারী সম্পক সাহা বলেন, বাবার স্মৃতি ধরে রাখতেই মিষ্টির পাশাপাশি আইসক্রিমও চালু রেখেছি। মাত্র এক মিনিটেই তৈরি হয় বলে এখানকার আইসক্রিমের নাম ওয়ান মিনিটের আইসক্রিম। দধি ক্ষীর মিষ্টি সন্দেশ বিক্রির পাশাপাশি আমি আইসক্রিম বানাতে ভারত থেকে নতুন বৈদ্যুতিক মেশিন দোকানটিতে সংযোজন করেছি। দোকানটির মিষ্টির চাহিদা থাকলেও সে চাহিদা অনেকটা ছাপিয়ে গেছে দোকানটির আইসক্রিমটি। যা দেখে আমিও আনন্দিত।
সম্পক সাহা আরও বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত ওয়ান মিনিট দোকানে ২৫০ থেকে ৫০০টি পর্যন্ত আইসক্রিম বিক্রি হয়। চোখের সামনে সদ্য তৈরি হয় বলে এই সফট কুলফি মালাইটি খাওয়ার পর মানুষের চেখে মুখেও একটা ফ্রেশনেস ভাব কাজ করে। এজন্য বিদ্যুৎ না থাকলে অনেকসময় ভীড় থাকা সত্ত্বেও আইসক্রিমের যোগান দিতে পারিনা। মূলত এই আইসক্রিমটি দ্রুত গলে যায় বলে দূরে না নেয়া যাওয়ায় আইসক্রিমটি দোকানে এসেই খেতে হয়।