ফরিদগঞ্জ সংবাদদাতাঃ চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ৫নং গুপ্টি পুর্ব ইউনিয়নের সনাতনী বাড়ীতে মঙ্গলবার মধ্য রাতের অগ্নিকান্ডের ঘটনায় শর্ট সার্কিটে আগুন লেগেছে এমন কথা আমি কোথাও বলিনি। অতিআবেগ প্রবন হয়ে এসব কথা কেউ বলাও ঠিক নয়।
২০ অক্টোবর বুধবার বিকালে মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে এসব কথা বলেন রামগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ইনচার্জ আব্দুর রশীদ।
তিনি বলেন, খবর পেয়ে আমরা যাওয়ার আগেই আগুনে ভূষ্মিভূত হয়ে যায় গুপ্টির সনাতনীদের ২টি বাড়ী। তবুও আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পুরো চেষ্টা চালাই। কিন্তু বাড়ী ২টি শেষ রক্ষা করতে না পারলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনায় পাশের বাড়ীগুলো রক্ষা করতে পেরেছি। রামগঞ্জের পুলিশও সেখানে উপস্থিত ছিলো।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমে শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগার বিষয়টি আমার উদ্বৃত্তি দিয়ে অনেকে লিখেছেন বলে জানতে পেরেছি। তবে এটা স্পষ্ট; আমি কোথাও এমন মন্তব্য করিনি। যেহেতু ওই বাড়ীর লোক রাতে কুকুরের ডাকাডাকির চিৎকার শুনেছে। তাহলে এটা দুর্বত্তরা আগুন দিতে পারে আবার নাও দিতে পারে। তবে ওই বাড়ীর মিটার আগুনে পুরো জ্বলে গেছে। তাই হয়তো ধারনার ভিত্তিতে কেউ শর্টসার্কিটের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসতে পারে। কিন্তু সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া এবিষয়ে কিছুই বলা যাবেনা।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী চয়ন কর্মকার জানায়, গভীর রাতে কুকুরের ডাক চিৎকারে আমার ঘুম ভাঙ্গে। উঠে দেখি বিরেশ্বরের ঘর ২টি আগুনে জ্বলছে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ক্ষতিগ্রস্থ বিরেশ্বর কর্মকার জানান, ব্যবসার সুবাদে পরিবার নিয়ে আমি চাঁদপুর শহরে থাকি। মাঝে মাঝে বাড়ীতে আসি। আমাদের সাথে কারো কোনরূপ দ্বন্দ নেই। খবর পেয়ে বাড়ীতে এসে দেখি আমার সব আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কুমিল্লা ইস্যুকে কেন্দ্র করেই আমার এই ক্ষতি করলো দুর্বত্তরা। আমি প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু বিচারের দাবী করছি।
এ বিষয়ে রামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের (ডিজিএম) নূরুল আলম ভূঁইয়া জানান, এই অগ্নি কান্ডের ঘটনা সর্ট সার্কিটে হবে বলে মনে হচ্ছে না। তবুও আমরা তা ক্ষতিয়ে দেখছি।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি শহীদ হোসেন বলেন, এটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অন্জনা খান মজলিশ বলেন, খবর পাওয়া মাত্র ঘটনাস্থলে আমরা ছুটে এসেছি। অগ্নি কান্ডের এই ঘটনাটি খুবই দুঃখ জনক। আমরা এর রহস্য উন্মোচনে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি নাছির উদ্দীন আহমেদ, সাধারন সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, ফরিদগঞ্জ পৌর মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারী, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকারসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই গুপ্টির ওই বাড়ীর ১০টি হিন্দু পরিবারের মাঝে আতঙ্ক ও হতাশা লক্ষ্য করা গেছে।