হাজীগঞ্জ সংবাদদাতাঃ চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের তাৎক্ষনিক ভূমিকায় আরেকটি রক্তক্ষয়ী সংঘাতের থেকে রক্ষা পেলো স্থানীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন।
৫ মে বৃহস্পতিবার রাতে হাজীগঞ্জ পৌর শ্মশানের ব্যাগে পবিত্র কোরআন শরীফ নিয়ে উপরে উঠার চেষ্টা করে এক ব্যাক্তি। বিষয়টি স্থানীয়দের দৃষ্টিগোচর হলে তারা দ্রুত থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাৎক্ষনিক এসে ঐ ব্যাক্তিকে সাথে সাথে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আটককৃত ব্যাক্তির নাম বশির হোসেন। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন এবং হাজীগঞ্জের ৮নং হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের বেলঘর গ্রামের বাসিন্দা। তার সাথে থাকা কালো ব্যাগ থেকে পবিত্র কোরআন শরীফটি যত্মসহকারে উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে স্থানীয় সুমন চৌধুরী বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এ যাত্রায় রক্ষা পেলো সংখ্যালঘুরা। পুলিশ ঐ ব্যাক্তির তথ্য-উপাত্ত বের করতে সক্ষম হয়েছে। সে মুসলিম যুবক। সবাই যেন আবারো বড় ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা থেকে রক্ষা পেলো।
হাজীগঞ্জ পৌর কাউন্সিলর সুমন তপদার বলেন, সেনসেটিভ বিষয় জেনে আমি তাৎক্ষণিক পুলিশ প্রশাসনের শরনাপন্ন হয়েছি। পরে পুলিশ বশির নামের ব্যাক্তিকে দ্রুত আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আমরা হাজীগঞ্জবাসী শান্তিপ্রিয় এবং সম্প্রতিবীর বন্ধনে সবাই এক ও ঐক্যবদ্ধ ছিলাম এবং থাকবো।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ জোবাইর সৈয়দ বলেন, আটককৃত বশির মানসিক ভারসাম্যহীন রোগী। তাকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। আমরা শুক্রবার সকালে হাজীগঞ্জের পৌর শ্মশান কমিটি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আলোচনায় বসেছি। হাজীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যেক শ্মশান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সিসি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমরা বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে দেখে তদন্ত কাজ এগিয়ে নিচ্ছি।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ-ফরিদগঞ্জ সার্কেল) সোহেল মাহমুদ বলেন, মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই আটক বশির হোসেনের সকল তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। আটককৃত বশিরের পরিবার নিয়মিত প্রতিবন্ধি ভাতা পাচ্ছেন এবং সে নিজেও মানসিক ভারসাম্যহীন রোগী। বশিরকে চট্টগ্রাম ও নাঙ্গলকোটের হাসপাতালে তার পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিকবার চিকিৎসা দেয়া হয়েছিল।
সোহেল মাহমুদ আরও বলেন, হাজীগঞ্জে সম্প্রীতির বন্ধন বজায় রাখতে পুলিশসহ সবসময় সকলের সহযোগী ছিলো। আগামীতেও তা অব্যাহত থাকবে। প্রাথমিকভাবে বশিরকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে প্রেরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও বশিরকে কেউ ওখানে পাঠিয়েছিলো কিনা তা আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত কাজ অব্যাহত রেখেছি।