হিন্দুদের তীর্থস্থান চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় উঠে উস্কানি দেয়া দুই মাদ্রাসা ছাত্র গ্রেফতার হিলশা নিউজ ডেস্কঃ বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সিতাকুন্ড এলাকার হিন্দু ধর্মালম্বীদের তীর্থস্থান চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় উঠে আযান দিয়ে তা সোশ্যাল মিডিয়ার ফেসবুকে উস্কানিমূলক ক্যাপশন লিখে পোষ্ট দেয়া যুবককে তার সাথীসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ।৩১শে আগষ্ট মঙ্গলবার দিবাগত রাতে চট্রগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশ(ডিবি) তাদের গ্রেফতার করেছেন। এর আগে সীতাকুণ্ড থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারকৃত ওই যুবকদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হিন্দু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর পায়তারামূলক ওই ফেসবুক পোষ্টটি করে মুহাম্মদ শিব্বির বিন নজির(২০)। আর সেই ফেসবুক পোষ্ট চন্দ্রনাথ পাহাড়ে ভ্রমণরত অবস্থায় উস্কানিদাতা শিব্বিরের সহযোগী রিফাত খন্দকার(২১) শেয়ার করে ভাইরাল করে। আর এর পর পরই অসাম্প্রদায়িক বিবেকবান বাঙ্গালী জাতিসহ সর্বমহলে এরূপ নেক্কারজনক কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এই উস্কানিদাতাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী তোলেন। আর তাই দ্রুত পুলিশ অভিযান চালিয়ে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে। তারা দুজনই ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি মাদ্রাসার ছাত্র।এদিকে সচেতন নেটিজনরা ফেসবুকে লিখছেন, আযান দেওয়া কোন দোষের কাজ নয়। তাই বলে সেটা মসজিদ বা অন্য সব স্থান বাদ দিয়ে একেবারে হিন্দুদের তীর্থস্থানে গিয়ে দিতে হবে কেন? এটা সুপরিকল্পিত ধর্মীয় উগ্রতা ও উস্কানিমূলক কাজ ছাড়া আর কিছু নয়! তাছাড়া ইসলাম নিজ ধর্ম পালনের পাশাপাশি অন্য ধর্মকে সম্মাণ করে। আর আমাদের রাষ্ট্রও অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসি। তাই ওই শিব্বির ও তার সহযোগী রিফাতের কর্মকান্ড হিন্দু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়ানো এবং ইসলাম বিদ্বেষী হওয়ায় এদের কঠোর শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। কেউ কেউ আবার লিখছেন, এই শিব্বির ও রিফাতের দেশ বিরোধী এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীদের সাথে সম্পর্ক রয়েছে কিনা? সেটিও রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হউক। যাতে করে শান্তি প্রিয় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ যেন কোনভাবেই বাধাগ্রস্থ না হয়।পুলিশ সূত্রে আরো জানা যায়, গত রোববার (২৯ আগস্ট) মুহাম্মদ শিব্বির বিন নজির তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে একটি ভিডিও পোস্ট দেন। এর ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় উঠে আজান দিলাম। আলহামদুলিল্লাহ। ইনশাআল্লাহ অতি শিগগিরই সেখানে ইসলামের পতাকা উড়বে।’ তার এ স্ট্যাটাস শেয়ার করেন রিফাত খন্দকার। এতে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের বিভিন্ন মহল থেকে নেতিবাচক মন্তব্য আসে।এ ঘটনায় গতকাল (মঙ্গলবার) সীতাকুণ্ড থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এর পরই রাতে কুমিল্লা জেলাতে চিরুনি অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে।এ ব্যপারে জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেশব চক্রবর্তী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুই মাদরাসাছাত্রকে সীতাকুণ্ড থানায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।’