সুমন আহমেদ : মতলব উত্তর উপজেলার ৭নং মোহনপুর ইউনিয়নে অতি দরিদ্রদের জন্য ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, এই ইউনিয়নে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে ৫ টি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে এবং প্রতিটি প্রকল্পেই লেবার সংখ্যা প্রায় ২৭ জন করে। ৫ টি প্রকল্পে মোট আর্থিক বরাদ্দের পরিমান দাড়ায় ৭ লক্ষ ৫০হাজার টাকা।
এই ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ১ টি প্রকল্পের নাম মাত্র কাজ করানো হয়েছে। যেখানে মোট কাজের ৫% কাজও করানো হয়নি। এবং প্রকল্প গুলোতে লেবার সংখ্যা ২৭ জন করে থাকলেও ৫/৬ জন লেবার দিয়ে কাজ করানো হয়েছে বলে জানাযায়।
যেখানে স্থানীয় দরিদ্র মানুষদের দিয়ে কাজ করানোর কথা ছিলো সেখানে ইউপি সদস্য মোঃ আলমগীর নিজ ক্ষমতাবলে জামালপুর, দিনাজপুর, রংপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোক এনে মাসিক ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা বেতন দিয়ে কাজ করিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় একাধিক লোকজন জানায়, ৪/৫ দিন কাজ করানো হয়েছে। প্রতিদিন ৫/৬ জন ছিল।
উল্লেখ্য, অন্যান্য জেলা থেকে নিয়ে আসা শ্রমিকদের থাকার জন্য স্থানীয় ৫৮ নং বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ ব্যবহার করা হয়েছে। এতে ব্যাগাত ঘটছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম।
শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ ইউপি সদস্য নিজ ক্ষমতাবলে দখল করায় আমরা সময় অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে পারছি না। ইউপি সদস্যকে এ কাজে বাঁধা দিলে তিনি নিজ দলবল নিয়ে মারধরের হুমকি দেন।
ইউপি সদস্যের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি সবাইকে ম্যানেজ কইরাই কাজ করতাছি। আমনে ছবি তোলেন ভিডিও করেন যেইডা ইচ্ছা হেইডা করেন আমার কিছু যাইতো অইতো না। আমার উপর থিকা সব সেটিং দেওয়া আছে। আর স্কুল এইডা আমগো এলাকার আর আমি এই এলাকার মেম্বার। তাই আমার যেইডা ইচ্ছা অইবো হেইডাই করমু। আমনে ছবি তুইল্লা নিয়া পারলে কিছু কইরেন আমার”।
এ বিষয়ে ইউপি সচিবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে একমাস আগে এসেছি। এই প্রকল্পের বিষয়ে আমি তেমন কিছুই জানিনা।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ ইব্রাহীম জানান, ‘স্থানীয় দরিদ্র লোকজন দিয়ে এই প্রকল্পের কাজ করানোর কথা থাকলেও বাহিরের লোক দিয়ে কাজ করাচ্ছে। এটা নিয়ম বহির্ভূত। আমি বিষয়টি ভালো করে জেনে ব্যাবস্থা নিবো।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোঃ আওরঙ্গজেব বলেন, ‘আপনি কি ইউনিয়ন পরিষদে কথা বলেননি? কথা বলে নিলেই তো হয়।’ কি কথা বলবো জানতে চাইলে তিনি কথা এড়িয়ে গিয়ে বলেন ‘দেখছি আপনাকে তথ্য দেওয়া যায় কিনা।এরপর ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আশরাফুল হাসান বলেন, ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজ স্থানীয় শ্রমিক দিয়েই করাতে হবে। কেউ যদি কাজে অনিয়ম করে তার বিরুদ্ধে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।