শিমুল অধিকারী সুমনঃ ঋতু পরিবর্তনকে ঘিরে শীতের তীব্রতা শেষ হচ্ছে দেখে বিপাকে রয়েছেন চাঁদপুরের হাইমচরের গরম কাপড় বিক্রেতারা। এতে করে সব মিলিয়ে লাখ লাখ টাকার গরম কাপড় ব্যবসায়ীরা এখন সুনশান নিরবতার মধ্য দিয়ে কি করবেন সে উপায় খুঁজছেন।
২০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দিনব্যাপী আলগী বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরলে গরম কাপড় বিক্রেতারা বিপাকে পড়ার বিষয়টি জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা গরম কাপড় বিক্রেতারা জানান, শহরের তুলনায় কৃষিভিত্তিক অঞ্চল হাইমচরে গরম কাপড়ের ব্যবসা বাণিজ্য কম। তবুও অনেকেই ফুটপাত, ভ্যাণের ওপর এবং দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর জামা কাপড়ের দোকানে গরম কাপড় উঠেয়েছিলো। কিন্তু শীতের তীব্রতা কমে যাওয়ায় লাখ লাখ টাকার গরম কাপড় এখন অনেকটা অবিক্রিতই রয়ে যাচ্ছে।
জেমিম ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী পোশাক বিক্রেতা মোহাম্মদ মাসুদ গাজী বলেন, শীতের তীব্রতা দেখে বিভিন্ন ব্রান্ডের বহু টাকার শীতের পোশাক বিক্রির উদ্দেশ্যে দোকানে উঠালেও এখনো অর্ধেকও বিক্রি করতে পারিনি। এরই মধ্যে শীতের তীব্রতা কমে যাওয়ায় বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার পথে। এখন এসব মালামাল কি করবো সে দুঃশ্চিন্তায় দিনাতিপাত করছি।
আরেক গরম কাপড় বিক্রেতা ছালেহিয়া ষ্টোরের মালিক জাকির দেওয়ান বলেন, করোনা কালীন সময়ে অনেকের চাকরি চলে যাওয়ায় তারা বেকার ছিলেন। এরমধ্যে অনেকই আমার মতো গরম জামাকাপড়ের দোকান দিয়ে বসে ছিলেন। এখন শীত কমে আসায় গরম কাপড়গুলো বিক্রি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। লাভ তো দূরে থাক মূল চালান উঠবে কিনা তা নিয়েই সবাই টেনশনে আছেন।
হাইমচরের পোশাক বিক্রেতা সাঈদ নিউ কালেকশনের মালিক আল আমিন আখন বলেন, শীত এবার খুব কম সময়ই ছিলো মনে হচ্ছে। খুবই অলস সময় পার করছি। শীতের পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য পোশাকও তেমন বিক্রি হচ্ছে না।এভাবে ব্যবসার টিকিয়ে রাখতে খুব কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এই বিষয়ে হাইমচর উপজেলার ব্যবসায়িক কেন্দ্র আলগী বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ কোতোয়াল বলেন, একটু লাভের আশায় যারা গরম কাপড়ের ব্যবসায় নেমে সাবলম্বী হতে চেয়েছিলো। তাদের অবস্থা এবার খারাপ যাচ্ছে। শীত এতো তাড়াতাড়ি বিদায় নিবে সেটা অপ্রত্যাশিত ছিলো।
আলগী বাজার কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন মাস্টার বলেন, মানুষ শহর থেকে পছন্দের গরম জামাকাপড় কেনাকাটা করার পাশাপাশি এই বাজারের গরম কাপড়েও ব্যপক চাহিদা ছিলো। নানা রকম সাহায্য সহযোগিতা অন্যান্য ব্যবসায় থাকলেও গরম কাপড়ের বিক্রেতাদের জন্য আলাদা কোন সুযোগ সুবিধা নেই। আমাদের পরামর্শ হতাশ না হয়ে পরিস্থিতি মেনে নিয়েই ব্যবসা এগিয়ে নিতে হবে। কেননা প্রকৃতির ওপর ত কারে হাত নেই। কাজেই পরিবেশ পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে অবিক্রিত গরম কাপড়গুলো নিয়ে বিকল্প পরিকল্পনা নিতে সকল বিক্রেতার প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের হাইমচরে সব মিলিয়ে শতাধিক লোক গরম কাপড় বিক্রির সাথে জড়িত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন।